আদালত বয়কট নিয়ে বার অ্যাসোসিয়েশনের সিদ্ধান্তে বিভেদ দেখা দিয়েছে বর্ধমানের আইনজীবীদের মধ্যে। ফৌজদারি ও দেওয়ানি আদালতের বেশির ভাগ আইনজীবী দুই শিবিরে ভাগ হয়ে গিয়েছেন। বৈঠকে তুমুল বাগবিতন্ডাও হয়েছে দু’তরফের।
দেওয়ানি আদালতের আইনজীবীদের অভিযোগ, ফৌজদারি আইনজীবীরা অ্যাসোসিয়েশনের ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে ঘুরপথে সিজিএম এজলাস থেকে বয়কট তুলে নিয়েছেন। অথচ দেওয়ানি আদালতের সিনিয়র ডিভিশন (দ্বিতীয়) বিচারক মন্দাক্রান্তা সাহার এজলাস থেকে বয়কট তোলার ব্যাপারে অ্যাসোসিয়েশনের কর্তারা গা করেননি। বিচারক মন্দাক্রান্তা সাহাকে বয়কটের সিদ্ধান্ত অপরিবর্তিত থাকায় ক্ষুব্ধ আইনজীবীদের একাংশ।
শুক্রবার বিকেলে জেলা জজ, সিজিএম-সহ কয়েকজন বিচারক বার অ্যাসোসিয়েশনের দফতরে গিয়ে কাজে যোগ দেওয়ার জন্য আইনজীবীদের বলেন। শনিবার বারের সভায় ঠিক হয়, বিচারপ্রার্থীরা সমস্যায় পড়ছেন। জামিন পাওয়ার পরেও ‘বেলবন্ড’ দিতে না পারায় আইনজীবীদের জন্য অকারণে অভিযুক্তরা জেলে আটকে থাকছে। তাদের কথা বিবেচনা করে সিজিএম এজলাস থেকে বয়কট তুলে নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। বারের বেশিরভাগ সদস্য ওই প্রস্তাবে সায় দেন। আজ, সোমবার থেকে প্রায় দু’মাস পর সিজিএম সঞ্জয়রঞ্জন পালের কাছে শুনানির জন্য যাবেন আইনজীবীরা।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, সিজিএম এজলাস নিয়ে আলোচনা হলেও মন্দাক্রান্তা সাহার এজলাস নিয়ে আলোচনা না হওয়ায় ক্ষুব্ধ দেওয়ানি আদালতের আইনজীবীরা। কয়েকজন আইনজীবী প্রকাশ্যে জানান, এজলাস বয়কট নিয়ে বারের কর্তারা দু’ধরণের নীতি নিয়েছেন। এতে আইনজীবীদের উপর থেকে বিচারপ্রার্থীদের ভরসা উঠে যাবে। অনেককে বলতে শোনা যায়, বারের সিদ্ধান্ত না মেনে তাঁরা সোমবার মন্দাক্রান্তাদেবীর এজলাসে গিয়ে শুনানিতে যোগ দেবেন। তাঁদের ক্ষোভ, বয়কটের সিদ্ধান্তের মতো এজলাসের বিক্ষোভ দেখানো নিয়েও বারের কর্তারা দেওয়ানি আদালতের আইনজীবীদের ভুল পথে চালনা করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জেলা জজ, সিজিএম ও মন্দাক্রান্তাদেবীর এজলাসে বিক্ষোভ হওয়ার কথা থাকলেও অজানা কারণে, কোনও আলোচনা ছাড়াই জেলা জজ ও সিজিএমের এজলাসের সামনে বিক্ষোভ দেখাননি বারের কর্তাদের একাংশ। দেওয়ানি আদালতের প্রবীণ আইনজীবীদের কথায়, “এ রকম চলতে থাকলে আমাদেরকে আলাদা সংগঠনের কথা ভাবতে হবে।”
যদিও বার অ্যাসোসিয়েনের সহ-সম্পাদক পার্থ হাটি ও মোল্লা মহাতাবউদ্দিন বলেন, “আলোচনার মাধ্যমেই সিজিএম এজলাসের বয়কট উঠেছে। পক্ষে-বিপক্ষে তো কথা হবেই। পরবর্তী সময়ে মন্দাক্রান্তাদেবীর এজলাস নিয়েও আলোচনা করে সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy