Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

তিরাটে ভাঙল সেতু, কাঁকসায় ডুবে বহু গ্রাম

তিরাটের বাসিন্দা, তৃণমূল নেতা অনল মুখোপাধ্যায় জানান, দীর্ঘদিন আগে তৈরি এই সেতুটি অনেক নিচু হওয়ায় প্রতি বছর বর্ষায় জলে ডুবে যায়। তাঁরও অভিযোগ, ‘‘বারবার সংশ্লিষ্ট দফতরে উঁচু করে সেচু তৈরির আবেদন করেছি আমরা।

ভাঙা সেতু। নিজস্ব চিত্র

ভাঙা সেতু। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
রানিগঞ্জ ও দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০১৭ ০০:৫০
Share: Save:

কোথাও ভাঙল সেতু। কোনও এলাকায় আরও বাড়ল জল। পশ্চিম বর্ধমানের নানা এলাকায় বৃহস্পতিবার ছবিটা ছিল এই রকম।

রানিগঞ্জের তিরাটের হাড়াভাঙায় নুনি নদীর উপরে একটি সেতু ভেঙে যায় এ দিন। এর জেরে প্রায় পনেরোটি গ্রামের মানুষ বিপাকে পড়েছেন। তাঁদের প্রায় পাঁচ কিলোমিটার ঘুরে যাতায়াত করতে হচ্ছে। এই সেতু দিয়ে সরাসরি ২ নম্বর জাতীয় সড়কে যাতায়াত করা যেত। বাসিন্দারা জানান, সেতুটির দু’পাড়ে পাঁচটি কোলিয়ারির কর্মীরা থাকেন। দীর্ঘদিন ধরে জীর্ণ সেতুটি সংস্কারের দাবি জানালেও কোনও ফল হয়নি বলে তাঁদের অভিযোগ।

হাড়াভাঙা, চেলোদ, দামালিয়া, তিরাট, রাঙাডাঙা, বাবলাডাঙা, হারানপুর, নিমচা ওসিপি কলোনি, পলাশডাঙা, ডহরপাড়া, বেগুনিয়া পাড়া, কামারপাড়া, মোর্গাথোল, ৪ নম্বর কলোনি ও জেকে নগরের বাসিন্দাদের কাছে এই সেতুটি গুরুত্বপূর্ণ। ওই সব এলাকার বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, এই বেহাল সেতু দিয়েই নিয়মিত ভারী যান চলত। দিন কয়েকের প্রবল বৃষ্টিতে ভেঙে পড়েছে। বৃহস্পতিবার ব্লক অফিসের প্রতিনিধিরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

তিরাটের বাসিন্দা, তৃণমূল নেতা অনল মুখোপাধ্যায় জানান, দীর্ঘদিন আগে তৈরি এই সেতুটি অনেক নিচু হওয়ায় প্রতি বছর বর্ষায় জলে ডুবে যায়। তাঁরও অভিযোগ, ‘‘বারবার সংশ্লিষ্ট দফতরে উঁচু করে সেচু তৈরির আবেদন করেছি আমরা। প্রশাসন নজর দেয়নি। কিছু দিন আগে পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের দেড় কোটি টাকায় তিরাট পাথর খাদান যাওয়ার রাস্তা তৈরি শুরু হয়েছে। ওই রাস্তা সাধারণ মানুষের কাজে লাগবে না। বাসও চলে না।’’ রানিগঞ্জ ব্লক প্রশাসনের তরফে জানানো হয়, সেতুটি তৈরির জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ দিন কাঁকসার সিলামপুর, বুদবুদের ভরতপুর, শালডাঙা, মুন্সেপুর এলাকায় নদীর জল অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে বলে বাসিন্দারা জানান। দুর্গাপুরের ন’ডিহা লাগোয়া রামকৃষ্ণপল্লি ছোটো মানা এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। বহু বাড়ি, কৃষিজমি জলের তলায়। বাসিন্দারা স্কুলঘর ও এলাকার উঁচু পাকা বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। বড় মানা এলাকাতেও অধিকাংশ বাড়ি জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। এ দিন প্রশাসন নানা এলাকায় ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দেয়। তবে জল বেশি থাকায় কিছু জায়গায় ত্রাণ পৌঁছনো যায়নি। এলাকার বাসিন্দা রবীন্দ্রনাথ মণ্ডল, চারুবালা মণ্ডলেরা বলেন, ‘‘বহু জমি এখনও জলের তলায়। ধান, নানা আনাজে ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।’’

কাঁকসার সিলামপুরের কলতলা ঘাট এলাকার বাসিন্দাদের কমিউনিটি সেন্টারে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। মোবারকগঞ্জ লাগোয়া মানার বাসিন্দাদের এ দিন অস্থায়ী শিবিরে এনেছে প্রশাসন। কাঁকসার বিডিও অরবিন্দ বিশ্বাস জানান, জলমগ্ন বাসিন্দাদের সব রকম সাহায্য করা হয়েছে। অন্ডালে দামোদরের শ্রীরামপুর মানা ও পাড়ে ইকোপার্ক জলে তলিয়ে গিয়েছে। অন্ডালের বিডিও মানস পাণ্ডা জানান, শ’খানেক পরিবারকে শ্রীরামপুর পঞ্চায়েত কার্যালয়ে রাখা ও খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE