আহত ট্রাক চালক। নিজস্ব চিত্র
ট্রাক আটকে টাকা তুলছিল পুলিশ। না দেওয়ায় চালককে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠল পূর্বস্থলীর নাদনঘাটে। আহত চালক বংশি মণ্ডল কালনা মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি। অভিযুক্ত পুলিশ কর্মীদের শাস্তির দাবিতে আড়াই ঘণ্টার বেশি রাস্তা অবরোধও করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পুলিশের দাবি, কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নাদনঘাটেরই শাহজাদপুর এলাকার ভোটল শেখ নামে এক ব্যক্তির ট্রাক চালান বংশি। শনিবার সেটি নিয়েই পানাগড়ে বালি আনতে যান তিনি। রবিবার বালি পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল নবদ্বীপে। বছর পঁচিশের বংশির পরিবারের অভিযোগ, সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ গাড়িটি ন’পাড়া মোড়ের কাছে একটি বেকারির সামনে দিয়ে যাচ্ছিল। পুলিশ সেটি আটকে বলে, অতিরিক্ত বালি রয়েছে ট্রাকে। তাই হাজার টাকা দিতে হবে। পুরো টাকা না দেওয়ায় চলে মারধর। হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, মারে কপাল, গাল ফেটে, ফুলে গিয়েছে বংশির। কথা বলা তো দূর, শুনতেও পাচ্ছেন না স্পষ্ট ভাবে। বংশির মা শবনম মণ্ডল হাসপাতালে ছেলের পাশে বসে বলেন, ‘‘পুলিশের গাড়িতে চালক ছাড়া তিন পুলিশকর্মী ছিলেন। তাঁরা হাজার টাকা চাইলে বংশি প্রথমে তিনশো, পরে আরও একশো টাকা দেয়। কিন্তু বাকি টাকার জন্যও চাপ দেয় ওরা। শুরু হয় মার।’’
এ দিকে, ঘটনার কথা চাউর হতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন ওই এলাকার বাসিন্দারা। ন’পাড়া মোড়ে শুরু হয় অবরোধ। অবরোধে সামিল হন ওই রাস্তা দিয়ে যাওয়া অন্য গাড়ির চালকেরাও। তাদের অনেকেরই দাবি, শুধু নাদনঘাট এলাকাতেই নয়, বহু জায়গাতেই বালি, পাথর আনার জন্য পুলিশকে তোলা দিতে হয়। বাসিন্দাদের দাবি, ট্রাক বা ম্যাটাডরে অতিরিক্ত জিনিস চাপালে জরিমানার নিদান রয়েছে। তা না করে পুলিশ তোলা নিয়ে গাড়ি ছেড়ে দেওয়ায় বেআইনি পরিবহণের মাত্রা ক্রমশ বাড়ছে। শ্যামল মণ্ডল, বিদ্যুৎ বসাকেরা জানান, গাড়ি চালানোর জন্য চালকদের একটি নির্দিষ্ট টাকা দেয় মালিক। তাদের উপর তোলা না পেয়ে মারধরের ঘটনাটি অমানবিক।
এ দিন, আড়াই ঘণ্টা অবরোধ চলায় আটকে যায় বহু গাড়ি। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে পৌঁছন কালনার এসডিপিও প্রিয়ব্রত রায়, নাদনঘাট থানার ওসি। ন’পাড়া পঞ্চায়েতের সদস্য সহিদুল শেখ, শাহজাদপুরের পঞ্চায়েত সদস্য সহদেব দত্ত-সহ এলাকার কিছু মানুষকে নিয়ে বৈঠকের পরে অবরোধ ওঠে। এসডিপিও বলেন, ‘‘এলাকার মানুষ নির্দিষ্ট কারও নামে অভিযোগ করেননি। তবে ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। কেউ দোষী চিহ্নিত হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy