প্রতীকী ছবি।
আইনজীবী অপহরণ-কাণ্ডের তদন্তে আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করছে না পুলিশ, অভিযোগ করলেন কালনার আইজীবীরা। এই মামলার তদন্তকারী অফিসার হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন কালনার সার্কেল ইনস্পেক্টরকে (সিআই)। কিন্তু কালনা বার অ্যাসোসিয়েশনের দাবি, আদালত জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদমর্যাদার কোনও আধিকারিকদের দিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন। এ ছাড়া ঘটনার ঠিকমতো তদন্তও হচ্ছে না বলে মঙ্গলবার এসিজেএম আদালতে সরব হন আইনজীবীরা।
অক্টোবরে আগে রাজস্থানে একটি মামলার কাজে গিয়ে পূর্বস্থলী ২ ব্লকের বাসিন্দা, আইনজীবী ফিরদৌস মণ্ডল অপহৃত হন বলে অভিযোগ। আইনজীবীরা অভিযোগ করেন, এই ঘটনায় ফিরদৌস পূর্বস্থলী থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে তা নেওয়া হয়নি। আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সরব হন আইনজীবীরা।
আদালত পুলিশকে ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেয়। ৮ নভেম্বর পুলিশ একটি মামলা রুজু করে। তবে অভিযোগের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয় পূর্বস্থলীর আইসি-র নাম। তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় সিআই তাপস দাসকে। সম্প্রতি আইনজীবীরা এসিজেএম আদালতে অভিযোগ করেন, যথাযথ তদন্ত হচ্ছে না। ২৪ নভেম্বর বিচারক কুসুমিকা দে মিত্র সিআই এবং মামলার রেকর্ডিং অফিসার আবু বরকত মির্দাকে কেস ডায়েরি-সহ হাজির হতে নির্দেশ দেন। কিন্তু সে দিন তাঁরা আসেননি। সিআই আইন-শৃঙ্খলার কাজে ও রেকর্ডিং অফিসার ছুটিতে রয়েছেন বলে জানান আদালতকে। মঙ্গলবার ফের তাঁদের হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল আদালত।
এ দিন ওই দুই পুলিশ অফিসার আদালতে এলে তদন্ত নিয়ে নানা প্রশ্ন তোলেন আইনজীবীরা। বার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য চঞ্চল রাহার প্রশ্ন, ‘‘পুলিশ ফিরদৌসকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠিয়েছে পূর্বস্থলী থানায়। যে থানার আইসি-র বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে সেখানে নিরপেক্ষ তদন্ত কী করে সম্ভব?’’ আইনজীবী পার্থসারথি কর, অতনু মজুমদারদের অভিযোগ, ‘‘আদালতের নির্দেশ রয়েছে, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পর্যায়ের কোন আধিকারিক ঘটনার তদন্ত করবে। অথচ, তা মানেনি পুলিশ।’’ আইনজীবীরা আদালতে দাবি করেন, অভিযোগের তালিকা থেকে আইসি-কে বাদ দিয়ে যে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ, তাতে গলদ রয়েছে। আদালতের পর্যবেক্ষণে তদন্তের দাবি তোলেন তাঁরা।
এ দিন আদালতে সিআই জানান, তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই তদন্ত শুরু করেছেন। তা যথাযথই চলছে। ওই আইনজীবীর সুবিধার জন্যই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদে পূর্বস্থলী থানায় ডাকা হয়েছে। আদালত থেকে বেরিয়ে অবশ্য সিআই মুখ খুলতে চাননি। তিনি বলেন, ‘‘যা বলার আদালতকেই বলেছি।’’ তবে পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ইতিমধ্যে ফিরদৌসের কাছে কয়েক দফা প্রশ্নের উত্তর চাওয়া হয়েছে। তা তিনি এখনও জানাননি। কালনার এক পুলিশ আধিকারিকের বক্তব্য, ‘‘আদালত ঘটনায় আইসি-র ভূমিকা অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে তদন্ত করে দেখার নির্দেশ দিয়েছিল। তিনি উত্তরও দিয়ে দিয়ে দিয়েছেন। ফলে, তদন্তের ক্ষেত্রে নির্দেশ না মানার কথা ঠিক নয়।’’ আইনজীবীরা জানান, বিচারক ১২ ডিসেম্বরের মধ্যে তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে পুলিশকে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy