Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

বৃষ্টিতে জমল জল, ক্ষোভ নিকাশি নিয়ে

কালনা শহরে সব থেকে বেশি জল জমে বৈদ্যপুর মোড় এলাকায়। বাসস্ট্যান্ডে নেমে এই মোড় দিয়ে যাতায়াত করেন বহু মানুষ। রবিবার থেকেই এই এলাকায় জল জমতে থাকে। সোমবার আরও বাড়ে। বেশ কিছু নর্দমা থেকেও উপচে পড়ে জল। রাস্তার জমা জল ঢুকে পড়ে বেশ কয়েকটি দোকানে।

জলমগ্ন: এসটিকেকে রোডে জল জমেছে কালনায়। নিজস্ব চিত্র।

জলমগ্ন: এসটিকেকে রোডে জল জমেছে কালনায়। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৭ ০১:৫৫
Share: Save:

টানা বৃষ্টিতে জল জমল জেলার নানা এলাকায়। ফলে, সোমবার স্কুল-কলেজ, অফিস-কাছারিতে যেতে সমস্যায় পড়েন বহু মানুষজন।

বর্ধমান-কাটোয়া রাস্তায় নরজার কাছে খড়ি সেতু ডুবে গিয়েছে। ছোট গা়ড়ি পাশের সেতু দিয়ে পার করানো হচ্ছে। বর্ধমান শহরে বাজেপ্রতাপপুর এলাকায় জল জমে যায় এ দিন। এ ছাড়াও শহরের কয়েকটি এলাকায় জল জমে।

কালনা শহরে সব থেকে বেশি জল জমে বৈদ্যপুর মোড় এলাকায়। বাসস্ট্যান্ডে নেমে এই মোড় দিয়ে যাতায়াত করেন বহু মানুষ। রবিবার থেকেই এই এলাকায় জল জমতে থাকে। সোমবার আরও বাড়ে। বেশ কিছু নর্দমা থেকেও উপচে পড়ে জল। রাস্তার জমা জল ঢুকে পড়ে বেশ কয়েকটি দোকানে। এলাকার বধূ পায়েল সরকার বলেন, ‘‘অল্প বৃষ্টি হলেই এখানে জল জমে যায়। জমা জল পেরিয়ে যাতায়াত করতে ভোগান্তির শেষ থাকে না। কবে যে সমস্যা মিটবে কে জানে!’’ পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এই এলাকার জল একটি নালা হয়ে বেহুলা নদীতে মেশে। তবে ওই নদীর জল বাড়ায় উল্টে নালা দিয়ে জল শহরের দিকে আসতে শুরু করেছে। ফলে, নিকাশিতে সমস্যা দেখা দিয়েছে।

পুরপ্রধান দেবপ্রসাদ বাগ বলেন, ‘‘বৈদ্যপুর মোড় হয়ে শহরের বড় অংশের জল নিকাশির জন্য পুরসভা ১ কোটি ৬৩ লক্ষ টাকা ব্যয়ে একটি পাকা নর্দমা তৈরিতে চলেছে। সেটি তৈরি হয়ে গেলে বৈদ্যপুর মোড়ে আর জল জমবে না।’’ শুধু অবশ্য বৈদ্যপুর নয়, কালনার মেডিসিন কমপ্লেক্স, ভারত সেবাশ্রমের গলি, বৈদ্যপুর মোড় লাগোয়া এসটিকেকে রোড, আদালতের রাস্তা-সহ নানা জায়গায় জল জমায় দুর্ভোগ বাড়ে।

এরই মধ্যে কালনা ১ ব্লকের বেগপুর পঞ্চায়েতের কর্পূরডাঙা গ্রামে একটি মাটির বাড়ির দেওয়াল ধসে এক কিশোর-সহ তিন জন আহত হয়েছেন। তাঁদের কালনা মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।

এ দিন জল জমে যায় কাটোয়ার বেশ কিছু ওয়ার্ডেও। ৭ নম্বর ওয়ার্ডে নানা এলাকা, ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের পঞ্চবটী পাড়া, ১৬ নম্বরের মণ্ডলপাড়া, কাটোয়াপাড়ার বেশ কিছু অংশ জলমগ্ন হয়ে পড়ে। জল জমে ৪, ২, ৩, ১৫ ও ১ নম্বর ওয়ার্ডের নানা জায়গাতেও নর্দমা ছাপিয়ে জল চলে আসে রাস্তায়। পুরসভার স্বাস্থ্য ও নিকাশি বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরে জল বেরনোর জন্য শাঁখাই ঘাট, দরানির বাঁধ, জামাইপাড়া ও মাধাইতলায় ৪টি সুইচগেট রয়েছে। জামাইপাড়া ও শাঁখাই ঘাট লাগোয়া গেট খোলা থাকলেও প্রায়ই বন্ধ থাকে অন্য গেট দু’টি। পুরসভার ভারপ্রাপ্ত ইনস্পেক্টর বোধন রজক জানান, ‘‘বড় নর্দমা বছরে বার দুয়েক পরিষ্কার হয়। জল বেরনোর জন্য উপযুক্ত আউটলেট না থাকায় এমন অবস্থা।’’ বর্ষায় জমা জলে মশার প্রকোপ ঠেকাতে কালভার্ট সংস্কারের জন্য পুরসভায় একাধিক বার আর্জি জানিয়েছেন বলে জানান তিনি।

গলসি ২ পঞ্চায়েত সমিতির নিজস্ব বাজারটি জলমগ্ন হয়েছে পড়েছে বৃষ্টিতে। ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসীর দাবি, পঞ্চায়েত সমিতির পক্ষ থেকে জল নিকাশির ব্যবস্থা না থাকায় এই পরিস্থিতি। এলাকার ১৫-২০টি বাড়িও জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। গলসি ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গুরুদাস মুখোপাধ্যায় জানান, তাঁরা ব্লক প্রশাসনকে জানিয়েছেন। কিন্তু কোনও প্রতিকার হচ্ছে না। গলসি ২ বিডিও অপূর্বকুমার বিশ্বাস জানান, এই বাজারের পাশেই একটা বড় পুকুর আছে। বেশি বৃষ্টিতে সেটির জল চার দিকে ঢুকে সমস্যা হচ্ছে। ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rain Water Logged Municipality বৃষ্টি
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE