শোকগ্রস্ত পাড়া। নিজস্ব চিত্র
শীত থেকে বাঁচতে বদ্ধ ঘরে দম্পতির মৃত্যুর পরে ঘরে উনুন জ্বালা নিয়েই আতঙ্ক তৈরি হয়েছে কুড়ুরিয়াডাঙার বাউড়িপাড়ার মনসাতলায়। বাসিন্দাদের দাবি, এই ঘটনার পরে ঘরে উনুন নিয়ে ঘুমোতে যাওয়ার ‘বিপদ’ সম্পর্কে তাঁরা হাতেকলমে জানতে পারলেন। এই পরিস্থিতিতে শীতের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া, এটাই এখন চ্যালেঞ্জ বলে জানান বাসিন্দারা। চিকিৎসকদের পরামর্শ, শীতে ঘর গরম করার ব্যবস্থা করলে, খেয়াল রাখতে হবে, যেন কোনও ভাবেই বাতাস চলাচলের পথে বাধা তৈরি না হয়।
গত কয়েক দিন, দুর্গাপুর শহরে তাপমাত্রা ঘোরাফেরা করছে ন’ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশেপাশে। সন্ধ্যা নামতে না নামতেই সুনসান হয়ে যাচ্ছে পথঘাট। ইতিউতি আগুন পোহাতেও দেখা যাচ্ছে অনেককে। এই পরিস্থিতিতে তাড়াতাড়ি খাওয়াদাওয়া সেরে ঘরের উনুনে হাত-পা সেঁকে ঘুমোতে যাচ্ছেন অনেকেই, জানান দুর্গাপুর পুরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কুড়ুরিয়াডাঙার বাসিন্দারা।
স্থানীয় বাসিন্দা গৌরী বাউড়ি, জয়া বাউড়ি’রা বলেন, ‘‘প্রবল শীত পড়েছে। সবাই খুব কষ্টে রয়েছি। শোওয়ার আগে আগুনের আঁচে হাত-পা সেঁকে নিই। অনেকে শুনি, উনুন জ্বালিয়েও রাখেন। কিন্তু তার জন্য এত বড় বিপদ ঘটে গেল। এ বার তো বাড়িতে উনুন জ্বালানোর আগেও পাঁচ বার ভাবব।’’ কিন্তু শীত থেকে কী ভাবে বাঁচা সম্ভব, তা নিয়ে তাঁরা আতান্তরে পড়েছেন।
চিকিৎসকদের পরামর্শ, শুধু উনুন নয়, দীর্ঘক্ষণ ধরে ‘রুম হিটার’, ‘ব্লোয়ার’ ব্যবহার করাটাও ঠিক নয়। অনেকের বাড়িতে ফায়ার-প্লেসে আগুন জ্বালানোর ব্যবস্থাও থাকে। অসতর্ক হলে আগুন লাগার ভয় তো রয়েইছে। কারণ বদ্ধ ঘরের ভিতর কার্বন মনোক্সাইডের মাত্রা বেড়ে গিয়ে বিপদ ঘটার সম্ভাবনা থাকে। বহুক্ষণ ঘর গরম করার ব্যবস্থা চালু থাকলে মাথা ঝিমঝিম, বমি ভাব, ঝিমুনি, শ্বাসকষ্ট দেখা দিতে পারে। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে। চিকিৎসক অর্পণ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘ঘর গরম করার ব্যবস্থা একটানা দীর্ঘক্ষণ ব্যবহার করা উচিত নয়। তা ছাড়া ঘরের ভিতরে বাইরের বাতাস চলাচলের ব্যবস্থাও রাখতে হবে। তবেই বিপদ এড়ানো যাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy