Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

যত্রতত্র গরু-শুয়োর, ক্ষুব্ধ চিত্তরঞ্জন

শিশুদের খেলার জায়গায় গজিয়ে উঠেছে খাটাল। কিন্তু গরু, মহিষ, শুয়োর সেই খাটালে আটকে থাকছে না। শহর জুড়ে তাদের বিচরণে অতিষ্ঠ বাসিন্দারা। বছর দুয়েক আগেই পরিচ্ছন্নতার জন্য যে শহর পুরস্কৃত হয়েছিল, গবাদি পশুর যত্রতত্র চলাফেরায় সেই চিত্তরঞ্জনেই অস্বাস্থ্যকর অবস্থা তৈরি হচ্ছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। রেল কর্তৃপক্ষ জানান, খাটাল মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

রেল শহরের পথে। —নিজস্ব চিত্র।

রেল শহরের পথে। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০১৫ ০২:৩০
Share: Save:

শিশুদের খেলার জায়গায় গজিয়ে উঠেছে খাটাল। কিন্তু গরু, মহিষ, শুয়োর সেই খাটালে আটকে থাকছে না। শহর জুড়ে তাদের বিচরণে অতিষ্ঠ বাসিন্দারা। বছর দুয়েক আগেই পরিচ্ছন্নতার জন্য যে শহর পুরস্কৃত হয়েছিল, গবাদি পশুর যত্রতত্র চলাফেরায় সেই চিত্তরঞ্জনেই অস্বাস্থ্যকর অবস্থা তৈরি হচ্ছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। রেল কর্তৃপক্ষ জানান, খাটাল মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

রেল শহর চিত্তরঞ্জন একটি সংরক্ষিত এলাকা। রেল কর্তৃপক্ষই শহরের সমস্ত কিছুর দেখভাল করেন। দু’বছর আগে পরিবেশ রক্ষার জন্য স্বর্ণময়ূর পুরস্কার পেয়েছে এই শহর। কিন্তু শহরের বাসিন্দা রেলকর্মীদের অভিযোগ, এখন এখানে রাস্তায় সার বেঁধে ঘুরে বেড়ায় গরু, মহিষ। ইচ্ছে মতো যেখানে সেখানে ঢুকে পড়ে শুয়োর। আরও অভিযোগ, নানা আবাসনের পাশে শিশুদের খেলাধুলোর জায়গায় খাটল গড়ে উঠেছে। সেগুলির মালিকেরা পরিচ্ছন্নতার দিকে কোনও নজর দেন না। অভিযোগ, বর্জ্য যেখানে-সেখানে ফেলা হয় বা জমা করে রাখা হয় জ্বালানি হিসেবে ব্যবহারের জন্য।

শহরে গিয়ে দেখা যায়, লোকো পার্ক এলাকায় ঝকঝকে রাস্তা দিয়েই সার বেঁধে গরু হেঁটে বেড়াচ্ছে। পার্কের ভিতরে চরে বেড়াচ্ছে শুয়োর। তিন নম্বর গেট থেকে শুরু করে মিহিজাম গেট পর্যন্ত কয়েক কিলোমিটার এলাকায় প্রায় চল্লিশটি খাটাল রয়েছে। বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, খাটাল মালিকেরা হয় কর্তৃপক্ষ অথবা রাজনৈতিক নেতাদের ঘনিষ্ঠ। তাই, এ নিয়ে মুখ খুলতে পারেন না বাসিন্দারা। এ ভাবে খাটাল চালানোর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে বাসিন্দাদের সঙ্গে বচসা থেকে মারামারি পর্যন্ত হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। এলাকাবাসী জানান, চিত্তরঞ্জনের ৩৯ নম্বর রাস্তার একটি খাটালকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি ধুন্ধুমার বাঁধে। পরে পুলিশ ও রেল নিরাপত্তা বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।

শহরে অবাধে গরু, শুয়োরের বিচরণ ও খাটাল বন্ধ করতে সংস্থার জেনারেল ম্যানেজারের কাছে তদ্বির করেছেন রেল কারখানার স্টাফ কাউন্সিলের সদস্যেরা। গত ১৯ মার্চ বৈঠকে এ নিয়ে কড়া পদক্ষেপ করার আর্জিও জানিয়েছেন তাঁরা। সিটু নেতা অলোক ঘোষ দাবি করেন, “আগে এমন ছিল না। সম্প্রতি এই দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। কর্তৃপক্ষ কোনও গা করছেন না। আমরা এক মাসের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছি।” আইএনটিইউসি নেতা নেপাল চক্রবর্তীরও অভিযোগ, “সংরক্ষিত এলাকা হওয়ার পরেও শহর জুড়ে এই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ তৈরি হচ্ছে শুধুমাত্র কর্তৃপক্ষ নির্বিকার বলে।” তাঁদের অভিযোগ, দেশ জুড়ে সোয়াইন ফ্লুয়ের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ব্যবস্থা নেওয়া আরও জরুরি।

সংস্থার জনসংযোগ আধিকারিক মন্তার সিংহ অবশ্য বলেন, “কর্তৃপক্ষ হাত গুটিয়ে বসে নেই। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।” তিনি জানান, শহরের খাটালগুলি চিহ্নিত করা হয়েছে। একাধিক খোঁয়াড় বানানো হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE