Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
খুনের কারণ নিয়ে ধন্দ

খেতের ধারে ব্যবসায়ীর দেহ উদ্ধার

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রমেশবাবুর বাড়ি ঘটনাস্থলের কাছেই সিমলা গ্রামের পশ্চিমপাড়ায়। বাড়ি থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে মেমারির কেন্না ঘোষপাড়া বাজারে তাঁর গয়নার দোকান রয়েছে।

শোকার্ত পরিজনেরা। নিজস্ব চিত্র

শোকার্ত পরিজনেরা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০১৮ ০০:৩২
Share: Save:

মোটরবাইকের আলো দেখে খেত জমির দিকে এগিয়ে গিয়েছিলেন দু’জন। সেখানে গিয়ে তাঁরা দেখতে পান, মুখ থুবড়ে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন এক ব্যক্তি। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে মেমারি শহরের কাছেই নুদিপুর বাঁধ লাগোয়া এলাকার ঘটনা। পুলিশ জানায়, মৃত ব্যক্তি গয়না ব্যবসায়ী রমেশ বিশ্বাস (৪৯)। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানায়, রমেশবাবুর দেহে ধারাল অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রমেশবাবুর বাড়ি ঘটনাস্থলের কাছেই সিমলা গ্রামের পশ্চিমপাড়ায়। বাড়ি থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে মেমারির কেন্না ঘোষপাড়া বাজারে তাঁর গয়নার দোকান রয়েছে। দোকান তৈরির দু’বছরের মাথায় চুরি হওয়ায় তিনি ফি দিন একটি ব্যাগে করে সোনা-রুপো নিয়ে বাড়ি থেকে যাতায়াত করতেন বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে। সাধারণ ভাবে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার মধ্যে তিনি বাড়ি ফিরতেন। মৃতের ভাই রাধাগোবিন্দ বিশ্বাসের আক্ষেপ, “প্রায় দু’দশক ধরে দাদা গয়নার ব্যবসা করতেন। ওই রাস্তা দিয়ে সকাল-সন্ধে যাতায়াত ছিল তাঁর।”

কিন্তু রাধাগোবিন্দবাবু বলেন, “বৃহস্পতিবার রাত ৯টার সময়েও দাদা বাড়ি ফেরেননি দেখে বারবার ফোন করা হয়। কিন্তু ফোন হচ্ছিল না। তখন আমি ও বড় ভাইপো মোটরবাইকে করে দোকানে গিয়ে জানতে পারি, দাদা সাড়ে ৬টার মধ্যে দোকান বন্ধ করে বাড়ি চলে গিয়েছে। বাঁধ দিয়ে ফেরার সময়ে দূর থেকে একটা আলো চোখে পড়ে। সেই আলো লক্ষ করে কাছে যেতেই দাদার নিথর দেহ দেখতে পেলাম।”

মৃতের স্ত্রী মান্তুদেবী দাবি করেন, সোনা-রুপোর গয়না ও টাকা ভর্তি ব্যাগটি দেহের পাশ থেকে মেলেনি। পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, মৃতের হাতে আংটি, জামা-প্যান্টের পকেট থেকে টাকা মিলেছে। পুলিশ জানায়, বুকে-কাঁধে ও হাতে ধারাল অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তবে কী কারণে খুন, সে বিষয়ে শুক্রবার রাত পর্যন্ত ধন্দে রয়েছে পুলিশ। যদিও এসডিপিও (বর্ধমান দক্ষিণ) শৌভনিক মুখোপাধ্যায় বলেন, “বেশ কিছু সূত্র হাতে এসেছে। সেগুলি খতিয়ে দেখে তদন্ত শুরু করেছি। আশা করছি, খুব দ্রুত অভিযুক্তদের ধরতে পারব।’’

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, রমেশবাবুর দুই ছেলে। বড় ছেলে রাহুল আইন নিয়ে উচ্চশিক্ষা করছেন। ছোট ছেলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। তদন্তকারীরা জানান, এই খুনের নেপথ্যে পারিবারিক কোনও কারণ রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ব্যবসাগত কারণেও রমেশবাবুর সঙ্গে কয়েক জনের মনোমালিন্য চলছিল বলে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন। সে কারণেই এই খুন কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে খুনের ধরন দেখে তদন্তকারীদের অনুমান, দু’জনের বেশি আততায়ী ঘটনাস্থলে ছিল না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Murder Dead Body Memari
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE