দেদার: এই ধরনের পানীয় নিয়েই প্রশ্ন। নিজস্ব চিত্র
স্থান, আসানসোল রেল স্টেশন লাগোয়া এলাকা। চাঁদিফাটা গরমে রাস্তার পাশে পসরা সাজিয়ে বসেছেন সরবতের দোকানি। ঢকঢক করে রঙিন ঠান্ডা পানীয়ে খানিক গলা ভিজিয়ে নিলেন অফিস ফেরত এক কর্মী। আর এতেই বিপত্তি। আসানসোলের চিকিৎসক মহলের দাবি, এ ভাবে অস্বাস্থ্যকর পানীয় আর কাটা ফল খেয়ে পেটের সমস্যা বাড়ছে শহরবাসীর। প্রশ্ন রয়েছে পানীয়ে ব্যবহৃত বরফের মান নিয়েও।
আসানসোলের রেল স্টেশন ও বাসস্ট্যান্ড-সহ শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় রাস্তার ধারে, ফুটপাথে দেদার বিক্রি হচ্ছে কাটা ফল ও রঙিন পানীয়। আট থেকে আশি, গরমে সকলেরই পছন্দ এ সব। আর এখানেই আপত্তি জানিয়েছে চিকিৎসক মহল। আসানসোল জেলা হাসপাতালের সুপার নিখিলচন্দ্র দাস বলেন, ‘‘এই ধরনের পানীয়ে ব্যবহৃত জল, রঙ কোনওটাই স্বাস্থ্যসম্মত নয়। এ সব খেলে অসুস্থ হয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’’ তাঁর দাবি, এগুলি থেকে ডায়রিয়া, টাইফয়েড, কৃমি জাতীয় নানা রোগের প্রকোপ দেখা দিতে পারে।
চিকিৎসকদের পরামর্শ, এই গরমে পরিষ্কার জলে ওআরএস গুলে অথবা নুন-চিনির জল খেতে হবে। নিখিলবাবুর দাবি, এই সময়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে প্রচুর পরিমাণে ওআরএস মজুত রাখা হয়েছে। ফলে তা সহজলভ্য।
পুর আধিকারিকদের দাবি, ইতিমধ্যেই শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অভিযোগ মিলছে যে রঙিন শরবতে ব্যবহৃত রং খাবার উপযোগী নয়। প্রশ্ন রয়েছে ব্যবহৃত জল, বরফের গুণগত মান নিয়েও। সম্প্রতি কলকাতায় নিউ মার্কেট এলাকার একাধিক শরবতের দোকানে গিয়ে চোখ কপালে ওঠে প্রশাসনের কর্তাদের। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, ডাঁই করা বরফের টুকরো ভেঙে তা দেওয়া হচ্ছে শরবতে। সেই বরফ আসলে ব্যবহৃত হয় মাছ, মাংস, এমনকী দেহ সংরক্ষণে। আসানসোলেও তেমনটা চলছে বলে চিকিৎসকদের একাংশের অভিযোগ।
তবে এই ধরনের রঙিন পানীয়, কাটা ফল বিক্রির বিষয়ে পদক্ষেপ করা হবে বলে পুরসভার আধিকারিকদের দাবি। পুরসভার দাবি, ইতিমধ্যেই বিজ্ঞপ্তি জারি করে বিক্রেতাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে খাদ্যদ্রব্য বিক্রির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসকদের অভিযোগ, সেই নির্দেশ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মানা হচ্ছে না। তবে আসানসোল পুরসভার মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) দিব্যেন্দু ভগত বলেন, ‘‘রাস্তার ধারে বিক্রি হওয়া রঙিন পানীয়, কাটাফল, বরফ, জল স্বাস্থ্যসম্মত কি না, তা খতিয়ে দেখতে নিয়মিত অভিযান চালানো হবে। বেনিয়ম দেখলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy