পতঙ্গবিদ নেই। বিশেষজ্ঞ কর্মী নেই। ঢাল-তরোয়াল ছাড়াই মশার বিরুদ্ধে লড়াই করছে দুর্গাপুর পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগ। কীটনাশক স্প্রে করার পাশাপাশি পুর কর্তৃপক্ষ ভরসা করছেন সচেতনতার প্রচারে।
দুর্গাপুরে গত কয়েক বছরে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। ২০১২ সালে দু’জনের মৃত্যু হয়। ২০১৫ সালে এক বালিকার মৃত্যু হয়। সে বছরেই দুর্গাপুর থেকে কলকাতায় ডাক্তারি পড়তে গিয়ে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হস্টেলে থাকা এক ছাত্রীর মৃত্যু হয়। গত বছর মারা যান সেপকো টাউনশিপের এক বয়স্ক মহিলা। তাঁর রক্তপরীক্ষায় ডেঙ্গি ধরা পড়েছিল। সে বারই ডিএসপি টাউনশিপের ভারতী রোডে সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রের মৃত্যু হয়। ডেঙ্গি হেমারেজিক জ্বরে আক্রান্ত হয়েই ওই বালকের মৃত্যুর সম্ভাবনার কথা জানিয়েছিল হাসপাতাল।
গরম পড়তেই মশার দাপট শুরু হয়ে গিয়েছে শহরে। ইতিমধ্যে এক দফা মশা মারার ওষুধ ও কীটনাশক স্প্রে করেছে পুরসভা। শহরের ৫টি বরোকে ওয়ার্ড ধরে দ্বিতীয় দফার কীটনাশক স্প্রে করার কর্মসূচি জমা দিতে বলেছে পুরসভা। মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) লাভলি রায় জানান, রুটিন স্প্রে তো হবেই। কোনও এলাকার বাসিন্দারা বা কাউন্সিলর চাইলে ফের সেখানে স্প্রে করার ব্যবস্থা হবে।
কিন্তু শহরের কোথায় কোন প্রজাতির মশা বংশবিস্তার করছে, তা জানার জন্য পতঙ্গবিদ দরকার। মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) জানান, তা তাঁদের নেই। বিশেষজ্ঞ কর্মী ছাড়া কাজ হবে কী ভাবে? লাভলিদেবীর জবাব, ‘‘কী নেই তা ভেবে লাভ নেই। মশা নিয়ন্ত্রণের জন্য সাধারণ ভাবে যা-যা করা দরকার, পুরোদমে করা হচ্ছে।’’
পুরসভার তরফে জানানো হয়, একশো দিনের কাজে নর্দমা ও আগাছা পরিষ্কারের কাজ হচ্ছে নিয়ম করে। সাড়ে তিনশো মহিলা কর্মীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তাঁরা শহরের ৪৩টি ওয়ার্ডে বাড়ি-বাড়ি ঘুরে সচেতনতার পাঠ দেবেন। বাড়ির লোকজনকে মশার বংশবৃদ্ধি রোধে কী করতে হবে, তা বোঝাবেন। বিলি করবেন লিফলেট। পরীক্ষা করে দেখবেন, কোথাও জল জমে আছে কি না। কোনও ছোট পাত্রেও জল জমে থাকলে তাঁরা তা ফেলে দেবেন। পুরসভা সূত্রে জানা যায়, ডেঙ্গি রুখতে ইতিমধ্যে ‘ম্যাক অ্যালাইজা’ পরীক্ষার যন্ত্র কিনে তা মহকুমা হাসপাতালের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। শুধু পুর এলাকা নয়, আশপাশের গ্রামের বাসিন্দারাও যাতে এর সুবিধা পান, সে জন্যই এই ব্যবস্থা।
পুরসভার ব্যবস্থার আশ্বাস সত্ত্বেও মশা নিয়ে বাসিন্দাদের অভিযোগের অন্ত নেই। সন্ধের পরে তো বটেই, দিনের বেলাও মশার উপদ্রব বাড়ছে। সেই সঙ্গে ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়ার আতঙ্কও তাড়া করছে শহরবাসীকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy