বিসর্জন: দুর্গাপুরের বীরভানপুর ঘাটে। ছবি: শৈলেন সরকার ও বিকাশ মশান
দামোদরের ঘাট নিয়মিত সাফ করছে দুর্গাপুর পুরসভা। দু’-এক দিনের মধ্যেই হাত পড়বে শহরের ভিতরের পুকুরগুলিতেও। জলদূষণ রোধে পুরসভার এমন তৎপরতা দেখা যাচ্ছে গত কয়েক বছর ধরেই। এ বারেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। কিন্তু গ্রামাঞ্চলের পরিস্থিতি বদলাচ্ছে না বলে অভিযোগ। সেখানে জলে ভাসছে প্রতিমার রং, পচা ফুল, বেলপাতা, কলাগাছ। পুকুরে পাড়ে পড়ে রয়েছে প্রতিমার কাঠামো।
শনিবার থেকে বিসর্জন শুরু হয়ে গিয়েছে। দু’-একটি যা বাকি আছে তা-ও গতকাল, সোমবার রাতে হয়ে গিয়েছে।
কিন্তু প্রতি বারের মতো এ’বারও গ্রামাঞ্চলে বিসর্জন নিয়ে দূষণের আশঙ্কা রয়েই গিয়েছে বলে দাবি পরিবেশপ্রেমীদের। বিসর্জনের জন্য পুরসভা দামোদরের কিছু ঘাট নির্দিষ্ট করে দিয়েছিল। রাতে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা ছিল। দূষণ কমাতে ঘাটের পাশে জাল দিয়ে ঘেরা একটি জায়গা পুজোর উপাচার ফেলার ব্যবস্থা করা হয়। শহরের একটা বড় এলাকার প্রতিমা নিরঞ্জন হয়ে থাকে দামোদরের ঘাটে।
সোমবার বীরভানপুর ঘাটে গিয়ে দেখা গেল, জল থেকে কাঠামো তোলার কাজে ব্যস্ত পুরসভা নিযুক্ত কর্মীরা। পাড়ে এক জায়গায় কাঠামো ডাঁই করে রাখছেন তাঁরা। জল থেকে পুজোর উপাচারও তুলে ফেলছেন পাড়ে। কর্মীরা জানাচ্ছেন, প্রতি দিন নিয়ম করে ঘাট পরিষ্কার করছেন তাঁরা।
তবে শহরের বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, দামোদরের ঘাটে দূষণ নিয়ন্ত্রণে পুরসভার তরফে লাগাতার চেষ্টা করা হলেও ডিএসপি টাউনশিপের পুকুরগুলিতে সেই রকম কোনও ব্যবস্থা চোখে পড়ছে না। পুরসভার মেয়র পারিষদ সদস্য অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য জানিয়েছেন, দামোদরের ঘাটে নিয়মিত সাফাই কাজ করছেন কর্মীরা। দু’এক-দিনের মধ্যেই ইস্পাতনগরী-সহ অন্যান্য জায়গার পুকুরগুলিও পুরসভার তরফে সাফ করার কাজ শুরু করা হবে।
শহরের পুকুর দ্রুত সাফ হয়ে গেলেও গ্রামাঞ্চলের পুকুর পরিষ্কার হচ্ছে না বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। বিভিন্ন পুকুরে ভাসছে প্রতিমার কাঠামো, পুজোর উপাচার। এর জেরে দৈনন্দিন কাজে পুকুর ব্যবহার করতে গিয়ে সমস্যায় পড়ছেন বাসিন্দারা। প্রতিমার গায়ের যে সিসা মেশানো রং ব্যবহার করা হয়, বিসর্জনের পরে তা জলে মিশে দূষণ ঘটায়। তাই প্রতিমা বিসর্জনের সঙ্গে সঙ্গে তা সরিয়ে ফেলা দরকার। কিন্তু তা না হওয়ায় সেই জলই ব্যবহার করতে বাধ্য হন বাসিন্দারা। এক দিকে, প্রতিমার রাসায়নিক রং জলে মিশে গিয়ে জল দূষণের আশঙ্কা বাড়ছে। আবার কাঠামো সহ পুজোর অন্যান্য উপাচার পচে যাচ্ছে। দুর্গাপুর-ফরিদপুর পঞ্চায়েত সমিতির এক সদস্য বলেন, ‘‘বিসর্জনের পরে পুকুর সাফ করার স্থায়ী কোনও ব্যবস্থা নেই। তবে একশো দিনের প্রকল্পে পুকুর সাফ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়ে থাকে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy