Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

পেনশন পেতে অসুস্থ শরীরে সকাল থেকে লাইন পিএফ অফিসে

ফি বছর নভেম্বরের মধ্যে পেনশনভোগীরা ব্যাঙ্কের যে শাখা থেকে পেনশন তোলেন, সেখানে বেঁচে থাকার প্রমাণপত্র জমা দিতে হয়।

দুর্ভোগ: প্রতি দিন এমনই লাইন দেখা যাচ্ছে। নিজস্ব চিত্র

দুর্ভোগ: প্রতি দিন এমনই লাইন দেখা যাচ্ছে। নিজস্ব চিত্র

সুব্রত সীট
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০১৭ ০২:২২
Share: Save:

পাঁচ জেলার প্রায় ৬০ হাজার পেনশনভোগী। ডিসেম্বরের মধ্যে সারতে হবে ডিজিটাল লাইফ সার্টিফিকেটের বায়োমেট্রিক অথেনটিকেশন পর্ব। আর তাই ফি দিন ওই পাঁচ জেলার পেনশনভোগীর একমাত্র গন্তব্য, দুর্গাপুরের প্রভিডেন্ড ফান্ড (পিএফ) অফিস। যাতায়াতের ধকল এবং দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হওয়ায় সমস্যা বাড়ছে বলে অভিযোগ প্রবীণদের।

ফি বছর নভেম্বরের মধ্যে পেনশনভোগীরা ব্যাঙ্কের যে শাখা থেকে পেনশন তোলেন, সেখানে বেঁচে থাকার প্রমাণপত্র জমা দিতে হয়। কাগজের প্রমাণপত্রের জায়গায় ডিজিটাল লাইফ সার্টিফিকেট চালুর কথা জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।

আর তাতেই বেধেছে গোল। এ ক্ষেত্রে ডিসেম্বরের মধ্যে পেনশনভোগীকে সশরীরে হাজির হয়ে ‘অথেনটিকেশন পর্ব’ সারতে হবে। না হলেই বন্ধ পেনশন! দুর্গাপুরের পিএফ কার্যালয়টি থেকে দুই বর্ধমান, বীরভূম, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ার ওই ৬০ হাজার পেনশনভোগীর জন্য দু’টি রাষ্ট্রায়ত্ত ও দু’টি বেসরকারি ব্যাঙ্কে পেনশন বাবদ অর্থ পাঠানো হয়।

এই পরিস্থিতিতে ওই পাঁচ জেলার পেনশনভোগীকে ভোর থেকে দাঁড়াতে হচ্ছে দুর্গাপুরের পিএফ কার্যালয়ের দরজায়। সম্প্রতি সেখানে গিয়ে দেখা ডিএসপি-র প্রাক্তন কর্মী সুকুমার মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে। তিনি জানান, সকাল সকাল চলে এসেছেন। লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে না পেরে পাশের সিঁড়িতে বসে আছেন। তিনি বলেন, ‘‘খুব ভিড়। অসুস্থ শরীর। কিন্তু উপায় নেই।’’ বাঁকুড়া থেকে এসেছেন আরও এক জন। তাঁর দাবি, ‘‘সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের শাখাতেই ব্যবস্থা করা দরকার ছিল। তা হলে এত পরিশ্রম হতো না। অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন লাইনে দাঁড়িয়ে।’’

যদিও পিএফ কার্যালয় জানায়, ভিড় সামলাতে ও প্রবীণদের দুর্ভোগ কমাতে বেশ কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ওই কার্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সকাল সাড়ে ছ’টা থেকে কার্যালয়ের নিরাপত্তারক্ষী ‘টোকেন’ বিলি করছেন। দুর্ভোগ এড়াতে সকালে কেউ টোকেন নিয়ে গিয়ে টোকেনের নম্বর দেখে মোটামুটি ভাবে সময় আন্দাজ করে এলে দুর্ভোগ কম হবে বলেই অনুমান পিএফ কার্যালয়ের কর্তাদের। কিন্তু এই প্রক্রিয়া শহর দুর্গাপুর ছাড়া অন্যদের ক্ষেত্রে কতটা উপযোগী, সে প্রশ্ন করেছেন প্রবীণেরা।

কার্যালয়ের ভিতরে এক সঙ্গে পাঁচ-ছ’টি যন্ত্রের মাধ্যমে গোটা প্রক্রিয়াটি চলছে। পিএফ কার্যালয়ের কর্তারা জানান, এক সঙ্গে দশ জনের বেশি পেনশনভোগীকে ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। এতে হুড়োহুড়ি এড়ানো যাচ্ছে।

তবে শুধুমাত্র পিএফ কার্যালয়েই কি এই ‘অথেনটিকেশন’ প্রক্রিয়াটি হয়? পিএফ দফতরের এক কর্তার দাবি, কিছু কিছু ব্যাঙ্কেও ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু পেনশনভোগীদের সকলে পিএফ কার্যালয়েই আসছেন। যদিও একাধিক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, এই প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করার মতো যন্ত্র নেই অধিকাংশ শাখাতেই। তা ছাড়া অভাব রয়েছে কর্মীরও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Elderly PF office Pention
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE