Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

ভোট মিটলেও জিরনোর ফুরসত নেই অনেকেরই

পরীক্ষা শেষ। এ বার ফলের অপেক্ষা। তার মাঝেই কেউ ব্যস্ত কাজে, কেউ বা আবার দলের আক্রান্ত নেতা-কর্মীদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। এক জন আবার একটু ফাঁকে ঘুরে আসতে চান। উল্টো দিকে তাঁর প্রবল প্রতিপক্ষ ব্যস্ত মেয়ের বিয়ের ব্যবস্থাপনা নিয়ে। ১১ এপ্রিল ভোট মিটে যাওয়ার পর এমনই নানা মেজাজে দেখা যাচ্ছে শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন বিধানসভা কেন্দ্রের প্রার্থীদের।

বিশ্বনাথ পাড়িয়াল ও অপূর্ব মুখোপাধ্যায়

বিশ্বনাথ পাড়িয়াল ও অপূর্ব মুখোপাধ্যায়

অর্পিতা মজুমদার
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০১৬ ০১:২৪
Share: Save:

পরীক্ষা শেষ। এ বার ফলের অপেক্ষা। তার মাঝেই কেউ ব্যস্ত কাজে, কেউ বা আবার দলের আক্রান্ত নেতা-কর্মীদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। এক জন আবার একটু ফাঁকে ঘুরে আসতে চান। উল্টো দিকে তাঁর প্রবল প্রতিপক্ষ ব্যস্ত মেয়ের বিয়ের ব্যবস্থাপনা নিয়ে। ১১ এপ্রিল ভোট মিটে যাওয়ার পর এমনই নানা মেজাজে দেখা যাচ্ছে শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন বিধানসভা কেন্দ্রের প্রার্থীদের।

গোটা ভোট ময়দান জুড়ে দাপিয়ে খেলেছেন দুর্গাপুর পশ্চিমের কংগ্রেস প্রার্থী বিশ্বনাথ পাড়িয়াল। কিন্তু ভোট মিটতেই সোজা বিছানায়। ভোটের ‘ধকল’ সামলাতে টানা চারটে দিন লেগেছে বলে জানান বিশ্বনাথবাবু। তবে তারপর থেকেই এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। সেরে ফেলছেন দলীয় বৈঠকগুলোও। ফাঁক পেলে একটু নজর বুলিয়ে নিচ্ছেন খবরের কাগজ আর টেলিভিশনে। উদ্দেশ্য রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা। এর মাঝেই গিন্নির আব্দার, কুম্ভমেলায় যেতে হবে। টিকিটটাও কাটা হয়ে গিয়েছে বেশ কয়েকদিন আগে। বিশ্বনাথবাবু বলেন, ‘‘চার দিনের ব্যাপার। দেখি যদি সবদিক সামলাতে পারি, তা হলে অবশ্যই কুম্ভে যাচ্ছি।’’ তিন দিনের জন্য বেড়াতে যাচ্ছেন এই কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী কল্যাণ দুবেও। ভোট-প্রচারে ব্যস্ত থাকায় নিজের ব্যবসার দিকে তেমন নজর দেওয়া হয়নি তাঁর। এ বার সে দিকেও একটু বাড়তি নজর দেবেন বলে জানান এই ব্যবসায়ী প্রার্থী।

জিতেন্দ্র তিওয়ারি ও সন্তোষ দেবরায়

এই কেন্দ্রেই বিশ্বনাথবাবুর প্রতিপক্ষ বিদায়ী বিধায়ক তৃণমূলের অর্পূব মুখোপাধ্যায়। তিনি অবশ্য একটু জিরিয়ে নেওয়ারও ফুরসত পাননি। ভোটের পরের দিন থেকেই শহরের বিভিন্ন কাজকর্মগুলো সামলাতে হচ্ছে মেয়রকে। এর মাঝে বাড়িতেও রয়েছে বড় অনুষ্ঠান। মেয়ের বিয়ে। দায়িত্বশীল বাবার মতোই মেয়ের বিয়ের সমস্ত খুঁটিনাটি দিকে নজর দিতে হচ্ছে অপূর্ববাবুকে। তাঁর কথায়, ‘‘ভোট মেটার পরে আবার সেই পুরনো রুটিনে ফিরে গিয়েছি। সামনে মেয়ের বিয়েও রয়েছে।’’

শিল্পাঞ্চলের আরও এক মেয়রও নেমে পড়েছেন কাজে। পাণ্ডবেশ্বরের তৃণমূল প্রার্থী তথা আসানসোলের মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি জানান, ভোট থাকায় বহু কাজ আটকে ছিল। সেগুলো দ্রুত শেষ করায় এখন লক্ষ্য বলে জানান জিতেন্দ্রবাবু। ভোট-পরীক্ষা মেটার পরেও বাড়ির লোকজন তাঁর কাছ থেকে খুব একটা সময় দাবি করেননি বলে জানা গেল। মেয়র নিজেই বলেন, ‘‘রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার সময় থেকেই বাড়ির লোকজন সর্বক্ষণ কাজ করার অনুমতি দিয়ে দিয়েছে।’’ দুর্গাপুর-সহ শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় ভোট-পরবর্তী সন্ত্রাস নিয়ে শাসকদলের বিরুদ্ধে লাগাতার সুর চড়াতে দেখা গিয়েছে বিরোধীরা। দুর্গাপুর পূর্বের সিপিএম প্রার্থী সন্তোষ দেবরায়ও জানান, ভোট মিটতেই বিভিন্ন জায়গা থেকে হামলার খবর আসছে। খবর পেয়েই আক্রান্ত কর্মীদের বাড়ি আর হাসপাতালে দৌড়তে হচ্ছে এই বাম প্রার্থীকে। সঙ্গে চলছে দলের শ্রমিক সংগঠনের কাজ, নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক, সবকিছুই। দলীয় দফতরে যেতে যেতেই সন্তোষবাবু জানিয়ে যান, ‘‘ছুটি পাওয়ার সুযোগ নেই।’’

কল্যাণ দুবে

ভোট-পরীক্ষার ফল কেমন হবে? প্রশ্ন শুনে খানিক সিরিয়াস সবাই। কমবেশি সকলেরই এক রা— ভাল ফলের আশা করছেন। সকলেই ভাল ভাবেই পরীক্ষা উতরে যাওয়ার আশা করছেন বলে জানান। তবে দলীয় সূত্রে খবরটা কিন্তু একটু অন্য রকম। প্রায় সব প্রার্থীকেই নাকি ঘনিষ্ঠ মহলে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘‘কোনও রকমে এই সময়টা গেলে বাঁচি!’’

তবে ভোট-ময়দানে কে কেমন খেলেছেন, তা জানতে ১৯ মে স্কোরকার্ড হাতে না পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা ছাড়া উপায় নেই প্রার্থীদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE