বেহাল: পারুলিয়ার পাম্পহাউস। —নিজস্ব চিত্র।
জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের দু’টি প্রকল্পের বেহাল পরিকাঠামোর জেরে ভুগছে দুই এলাকা। পূর্বস্থলী ও পাটুলিতে শুদ্ধ পানীয় জল পেতে সমস্যায় পড়ছেন বাসিন্দারা। প্রশাসন সূত্রে অবশ্য জানা গিয়েছে, প্রকল্প দু’টির হাল ফেরানোর চেষ্টা চলছে।
এলাকায় পানীয় জলের সমস্যা মেটাতে ১৯৮২ সালে পূর্বস্থলী ২ ব্লকে এই প্রকল্প দু’টি তৈরি হয়। পরের বছর সেখান থেকে জল পেতে শুরু করেন বাসিন্দারা। তবে ১৯৯৫ সালে জেলার ১৪টি প্রকল্প জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর জেলা পরিষদকে হস্তান্তর করে। জেলা পরিষদ প্রকল্পগুলি দেখভালের দায়িত্ব দেয় সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত সমিতিগুলিকে।
পাটুলির প্রকল্পটিতে রয়েছে দু’টি পাম্প। সেখান থেকে পাটুলি এবং পিলা পঞ্চায়েত এলাকার নারায়ণপুর, দাসপাড়া, ভট্টাচার্যপাড়া, কুমোরপাড়া, মামুদপুর, নতুনপাড়া, সন্তোষপুর, মহাজনপট্টি, ঘটকপাড়া, আচার্যপাড়া, পিলা, সন্তোষপুর, পাটুলি স্টেশন বাজার-সহ প্রায় ১৫টি এলাকার ১২ হাজার মানুষকে জল দেওয়া হয়। বাসিন্দাদের অভিযোগ, বিপুল মানুষকে পানীয় জলের পরিষেবা দেওয়া হলেও বহু বছর ধরে প্রকল্পের পরিকাঠামোর দিকে নজর দেওয়া হয়নি। পাম্প হাউস চত্বর ভরে গিয়েছে আগাছায়। অযত্নে রিজার্ভারের অবস্থাও খারাপ। লম্বা রিজার্ভারের গায়ে ফাটল দেখা দিয়েছে। পাম্প হাউস চত্বরে আলোর ব্যবস্থা নেই। ভিতরে জলের একটি কল থাকলেও মাস তিনেক ধরে সেটি অকেজো। ফলে, কর্মীদের বাইরে থেকে জল এন খেতে হয়। প্রকল্প দেখভালের জন্য রয়েছেন পাম্প অপারেটর, ভাল্ভম্যান, পাহারাদার-সহ ছ’জন কর্মী। পাম্প হাউস চত্বরে কর্মীদের থাকার ঘরের অবস্থাও বেহাল। সামান্য বৃষ্টি হলেই ছাদ চুঁইয়ে জল পড়ে। ঘর থেকে খসে পড়ছে চাঙড়।
বিশাল এলাকার পরিষেবার জন্য রয়েছে প্রায় ৩০০টি পয়েন্ট। বাসিন্দাদের অভিযোগ, গত এক দশকে লাফিয়ে-লাফিয়ে জনসংখ্যা বাড়লেও তুলনায় পয়েন্ট বাড়েনি। মাঝে-মধ্যেই রাস্তায় যানবাহনের চাপে তলার পাইপ ফেটে যায়। মেরামতি করতে দীর্ঘ সময় লাগে। মাসে অন্তত এক বার ব্লিচিং দিয়ে রিজার্ভার পরিষ্কার করার নিয়ম থাকলেও তা হয় না বলে অভিযোগ। পাটুলি পাম্পহাউসের কর্মী দ্বারকানাথ দাস, লাল্টু ঘোষেরা বলেন, ‘‘যতটা সম্ভব ভাল পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা করি। তবে পাইপ পাল্টানো, রিজার্ভার তৈরি-সহ নানা সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’’
পূর্বস্থলীর প্রকল্পটির অবস্থাও শোচনীয়। এখান থেকে পূর্বস্থলী ,পলাশপুলি, চুপি-সহ চারটি এলাকায় জল সরাবরাহ করা হয়। রিজার্ভারটির অবস্থা এত খারাপ যে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে কোনও কাজ করতে গেলে সেটি ভেঙে পড়তে পারে। পাম্পহাউসে আলো নেই। ভেঙে গিয়েছে কর্মীদের থাকার ঘরের দরজা-জানলা। মাসখানেক আগে এই প্রকল্পের পাইপ ফেটে জল দূষিত হয়ে পলাশপুলি এলাকায় আন্ত্রিক ছড়ায় বলে অভিযোগ। বাসিন্দাদের দাবি, অবিলম্বে প্রকল্পটি সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে।
দু’টি প্রকল্পেরই সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করেছে পূর্বস্থলী উত্তরের প্রাক্তন বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর পূর্বস্থলীর প্রকল্পটি সংস্কারের জন্য ৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন। পাটুলির প্রকল্পটি সংস্কারের কথাও জানানো হয়েছে।’’ জেলা সভাধিপতি দেবু টুডুর আশ্বাস, প্রকল্প দু’টির পরিস্থিতি খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy