Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

নিজেদেরই আয়োজনে ভাইফোঁটা প্রবীণদের

মালতিদেবী জানালেন, তাঁর দাদা খগেন্দ্রনাথ মণ্ডল থাকেন পুরুলিয়ায়। আবার ইলা সরকারের ভাই মিলন সিংহ বরাকরের বাসিন্দা।

অনুষ্ঠান চলছে। —নিজস্ব চিত্র।

অনুষ্ঠান চলছে। —নিজস্ব চিত্র।

সুব্রত সীট
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০১৭ ০২:৪২
Share: Save:

প্রত্যেকেই কর্মজীবন থেকে অবসর নিয়েছেন বহু বছর। বয়স থাবা বসিয়েছে প্রতি দিনের জীবনে। কিন্তু তা বলে ভাইফোঁটা হবে না, তা-ও কি হয়। প্রবীণ পুরুষ-মহিলারা মিলে আয়োজন করলেন ভাইফোঁটার উৎসব। শনিবার প্রবীণদের এই উৎসবের সাক্ষী থাকল দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারের চতুরঙ্গ মাঠ।

শহরেরই নানা প্রান্তে বাড়ি, মালতি মণ্ডল, প্রণয় রায়-সহ প্রায় জনা ৩৫ বয়স্কের। শরীর সুস্থ রাখতে তাঁরা সকলেই জড়ো হয়েছিলেন যোগচর্চার আসরে। সেখানেই আলাপ। তৈরি হল, ‘নিরোগ হেলথ্ ক্লাব।’ সেই ক্লাবেরই উদ্যোগেই এ দিন ভাইফোঁটা। সাতসকালে রাস্তার ধারে মাঠে গিয়ে দেখা গেল, ধান, দুব্বো, চন্দনের থালা হাতে তৈরি দিদি-বোনেরা। দাদা, ভাইরাও প্রস্তুত। সকলেই ষাটোর্ধ্ব। কারও বা বয়স আশি ছুঁইছুঁই। একে একে শোনা গেল পরিচিত উচ্চারণ, ‘ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা, যমের দুয়ারে পড়ল কাঁটা।’ চলল প্রণাম, শুভেচ্ছা আদানপ্রদান।

মালতিদেবী জানালেন, তাঁর দাদা খগেন্দ্রনাথ মণ্ডল থাকেন পুরুলিয়ায়। আবার ইলা সরকারের ভাই মিলন সিংহ বরাকরের বাসিন্দা। ডিএসপি-র জনসংযোগ বিভাগের প্রাক্তন কর্মী প্রণয় রায় জানান, বোন মধুছন্দা চৌধুরী থাকেন নাগপুরে। কিন্তু বয়সজনিত নানা কারণে ভাইফোঁটার দিন ওঁরা কেউই এক জায়গায় আসতে পারেননি। এমনকী অনেকের ক্ষেত্রে এমনও হয়েছে, যে দিদি-ভাই দুর্গাপুরেই রয়েছে। কিন্তু বয়সজনিত কারণেই শহরের প্রবীণ চিকিৎসক জলদবরণ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা হয়নি বলে জানান দিদি বিজয়লক্ষ্মীদেবী। সেই সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘তবে অনেক দাদা-ভাইকে আজ ফোঁটা দিয়েছি।’’ ভাইফোঁটা দিয়ে এবং পেয়ে, দু’পক্ষই ভীষণ খুশি। প্রণয়বাবু বলেন, ‘‘এই বয়সে ফের ফোঁটা পেলাম, এই তো অনেক।’’ পাশেই থাকা মাখনচন্দ্র দে’ও বললেন, ‘‘কতদিন যে বোনের হাতে ফোঁটা পাইনি! আজ আবার ফোঁটা পেলাম।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE