ধৃত অনুপ অগ্রবাল।—নিজস্ব চিত্র
রাজ্যের ও দেশের বাইরে চাল রফতানি চলছিল। কিন্তু বছরের পর বছর ধরে পূর্ব বর্ধমানের চালকল মালিকদের বকেয়া টাকা মেটাচ্ছিলেন না কাটোয়ার ব্যবসায়ী অনুপ অগ্রবাল। এমনকী, চালকল মালিকদের তাগাদায় কলকাতার ভবানীপুরে গা ঢাকা দিয়েছিলেন। সোমবার রায়নার আহ্লাদিপুরে এক চালকল মালিকের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ অনুপবাবুকে বর্ধমান জেলা আদালতে তোলে। ভারপ্রাপ্ত সিজিএম ধৃতকে চার দিন পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন তাঁকে। পুলিশ জানায়, প্রতারণার অভিযোগে কলকাতার বড়বাজারের এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে আগেই গ্রেফতার করা হয়েছিল তাঁকে।
চালকল মালিকদের রাজ্য সংগঠন ‘বেঙ্গল রাইস মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের’ মুখপত্র আব্দুল মালেকের দাবি, শুধুমাত্র পূর্ব বর্ধমানের ৩৯টি চালকল মালিক ধৃতের কাছ থেকে ৫২ কোটি টাকা পান। জেলার বেশির ভাগ থানাতেই ধৃতের বিরুদ্ধে প্রতারণা করে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করা হয়েছে। তাঁর দাবি, কাটোয়ার ওই ব্যবসায়ী বড়বাজারে গ্রেফতার হওয়ার পরেই তাঁরা খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। মন্ত্রীর কথামতো রাজ্য এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের (ইবি) ডিজির সঙ্গেও দেখা করেন তাঁরা। তারপরে বিভিন্ন নথি নিয়ে জেলা পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবালের সঙ্গেও কথা বলেন। তারপর থেকেই বিভিন্ন থানায় ধৃতের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন চালকল মালিকেরা। রাজ্য ইবি মামলার তদন্তভার তুলে নেয়। তদন্তে নেমে ইবি জানতে পেরেছে, শুধু বর্ধমান নয়, বাঁকুড়া, হুগলি ও কলকাতার বিভিন্ন থানায় ধৃতের নামে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়াও মুম্বইয়ের এক ব্যবসায়ীর চার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে বলে ইবি জেনেছে।
এ দিন বর্ধমান আদালতে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে চালকল মালিকরা হাজির হয়েছিলেন। তাঁরা জানান, ২০১০ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত চাল কিনেও টাকা দেননি অনুপবাবু। মাঝেমধ্যে চেক দিলেও তা ব্যাঙ্কে বাউন্স করত। এমনকী, টাকা চাওয়ার জন্য তাগাদা দিলে হুমকি দেওয়া হতো, বা ভবানীপুরে গেলে ‘বাউন্সার’রা তাঁদের দিকে তেড়ে আসত বলেও চালকল মালিকদের অভিযোগ। গত দু’বছর ধরে এ ভাবেই চলছিল। আইনজীবীরা জানিয়েছেন, আদালতে সওয়াল চলাকালীন সরকারি আইনজীবীর সঙ্গে ধৃতের আইনজীবীদের গোলমাল শুরু হয়ে যায়। বিচারক সোমনাথ দাস এজলাস ছেড়েও চলে যান। বেশ কিছুক্ষণ পর ফিরে এসে ধৃতকে পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy