Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Dengue

ডেঙ্গিতে প্রাণ গেল গলসির বালিকার

জ্বর, মাথায় যন্ত্রণা নিয়ে ন’বছরের মেয়েটিকে ভর্তি করানো হয়েছিল হাসপাতালে। রোগীর চাপে মেলেনি বিছানা। ‘বেড নেই, তবু ভর্তি করলাম’ লিখেই ভর্তি করান বাড়ির লোকজন। কিন্তু রক্ষা হল না। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু হল সমাপ্তি মেটে নামে ওই বালিকার।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০১৭ ০০:০৮
Share: Save:

জ্বর, মাথায় যন্ত্রণা নিয়ে ন’বছরের মেয়েটিকে ভর্তি করানো হয়েছিল হাসপাতালে। রোগীর চাপে মেলেনি বিছানা। ‘বেড নেই, তবু ভর্তি করলাম’ লিখেই ভর্তি করান বাড়ির লোকজন। কিন্তু রক্ষা হল না। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু হল সমাপ্তি মেটে নামে ওই বালিকার। ডেথ সার্টিফিকেটে লেখা হয়েছে ‘ডেঙ্গি শক সিনড্রোম’।

বুধবার দুপুরে মৃত্যু হয় গলসির বিক্রমপুরের মেয়েটির। বৃহস্পতিবার হাসপাতালের সুপার অমিতাভ সাহা বলেন, ‘‘আশঙ্কাজনক অবস্থায় মেয়েটিকে আমাদের কাছে আনা হয়েছিল। প্লেটলেট স্বাভাবিক ছিল। তবে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের জন্য আমরা প্লেটলেট ও প্লাজমা দিয়েছিলাম। পিকু-তে রেখেও চিকিৎসা করা হয়েছিল।’’ জেলায় এ বার ডেঙ্গিতে মৃত্যুর ঘটনা এই প্রথম।

সমাপ্তির বাবা, বাউলশিল্পী ধনঞ্জয় মেটে বলেন, ‘‘কাটোয়ায় শহরে এক আত্মীয়ের বাড়ি গিয়েছিল মেয়ে। সেখান থেকে ফেরার পরেই জ্বর হয়। জ্বর, বমি, মাথায় ব্যথা কমছে না দেখে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।’’ জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা যায়, শনিবার প্রবল জ্বর নিয়ে আদ্রাহাটির ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়েছিল সমাপ্তিকে। তাকে দেখার পরেই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক ‘আশঙ্কাজনক’ বলে জানান। সেখানে ম্যালেরিয়ার পরীক্ষা করে কিছু পাওয়া যায়নি। তার পরেই তাকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

মেয়েটির মা বেলা মেটের অভিযোগ, ‘মেডিক্যালে মাটিতে রেখে চিকিৎসা শুরু হয়।’’ পরিজনেরা জানান, সোমবার দুপুরে ভর্তির সময়ে ‘বেড নেই, তবুও ভর্তি করলাম’ বলে মুচলেকাও দিতে হয়েছিল। হাসপাতালের তথ্যও সে কথা জানাচ্ছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ভর্তি করানোর সময়েই সমাপ্তি কথা বলার মতো অবস্থায় ছিল না, কাউকে চিনতেও পারছিল না। রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট আসার আগে চিকিৎসকরা প্রথমে ‘অ্যকিউট এনসেফেলাইটিস সিম্পটমের’ চিকিৎসা শুরু করেন। পরে ম্যানিনজাইটিস অনুমান করেও ওষুধ দিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। রক্ত পরীক্ষার এলাইজা রিপোর্টে এনএস ওয়ান ‘নেগেটিভ’ ছিল। কিন্তু আইজিএম ‘পজিটিভ’ থাকায় ডেঙ্গির চিকিৎসা শুরু হয়।

হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের এক চিকিৎসক বলেন, ‘‘সমাপ্তির প্লেটলেট ছিল ২ লক্ষ ১০ হাজার, যা স্বাভাবিক বলে ধরা যায়। কিন্তু অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের জন্য আমরা দু’বার প্লেটলেট ও এক বার প্লাজমা দিয়েছিলাম। দ্বিতীয় বার আর প্লেটলেট গোনার সময় পাওয়া গেল না।’’

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ৫৭ জন জ্বরে আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ ছাড়া ১৮ জনের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছে, যাঁদের মধ্যে ১২ জন হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন। এ দিন ডেপুটি সিএমওএইচ (২) সুনেত্রা মজুমদারের নেতৃত্বে একটি দল গলসির বিক্রমপুর গ্রামে গিয়ে বেশ কয়েক জনের রক্তের নমুনা পরীক্ষা সংগ্রহ করেন। সুনেত্রাদেবী বলেন, ‘‘ওই এলাকায় মশা মারার দল যাবে। শনিবার সচেতনতা শিবির করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death Dengue Mosquito Galsi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE