Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
নালিশ রূপনারায়ণপুরে

আবাসন ফাঁকা হতেই বসছে ঠেক

এক সময় গমগম করত এলাকা। কিন্তু কারখানা বন্ধের পরে সে সব অতীত। অনেকেই তল্পিতল্পা গুটিয়ে এলাকা ছাড়তে শুরু করেছেন। খাঁ-খাঁ করছে রূপনারায়ণপুরের হিন্দুস্তান কেব্‌লসের আবাসনগুলি। আর সেই ফাঁকা আবাসনে বসছে মদের ঠেক, চুরি যাচ্ছে দরজা-জানলা— অভিযোগ আশপাশের বাসিন্দাদের।

খালি হয়ে গিয়েছে আবাসন। নিজস্ব চিত্র।

খালি হয়ে গিয়েছে আবাসন। নিজস্ব চিত্র।

সুশান্ত বণিক
রূপনারায়ণপুর শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০০:১১
Share: Save:

এক সময় গমগম করত এলাকা। কিন্তু কারখানা বন্ধের পরে সে সব অতীত। অনেকেই তল্পিতল্পা গুটিয়ে এলাকা ছাড়তে শুরু করেছেন। খাঁ-খাঁ করছে রূপনারায়ণপুরের হিন্দুস্তান কেব্‌লসের আবাসনগুলি। আর সেই ফাঁকা আবাসনে বসছে মদের ঠেক, চুরি যাচ্ছে দরজা-জানলা— অভিযোগ আশপাশের বাসিন্দাদের। ভবিষ্যতে দুষ্কৃতী-দৌরাত্ম্য আরও বাড়বে বলে আশঙ্কায় রয়েছেন তাঁরা।

প্রায় ছ’দশক আগে কারখানাকে কেন্দ্র করে তৈরি হয় কলোনি। গড়ে ওঠে প্রায় দু’হাজার আবাসন, ব্যাঙ্ক, থানা, ডাকঘর, বাজার। সংস্থার অনেকেই আবার কর্তৃপক্ষের মৌখিক অনুমতি নিয়ে ফাঁকা জমিতে অস্থায়ী আবাসনও গড়েছিলেন। কিন্তু পরিস্থিতি দ্রুত বদলাতে শুরু করে জানুয়ারিতে। ৩১ জানুয়ারি কারখানা বন্ধের সপ্তাহখানেক আগেই আবাসন ও শহর খালি করার বিজ্ঞপ্তি জারি হয়।

সেই মতো আবাসন ছাড়তে শুরু করেন বাসিন্দারা। তবে পাওনা টাকা হাতে না পাওয়া পর্যন্ত অনেকে আরও কয়েক দিন থেকে গিয়েছেন আবাসনে। দুলারি সাউ নামে তেমনই এক জন বলছিলেন, ‘‘চারপাশ ফাঁকা হয়ে গিয়েছে। ভয় লাগছে থাকতে।’’ স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই লোয়ার কেশিয়া এলাকার প্রায় সাতশো আবাসনের প্রায় সবই খালি হয়ে গিয়েছে। বি-৩ ও ২, ওল্ড কলোনি, নিউ কলোনি, অফিসার্স কলোনি, বেশ কয়েকটি বাংলোও ফাঁকা পড়ে রয়েছে। কারখানার কর্মী অমিতাভ মিত্র, প্রদীপ বিশ্বাসেরা বলেন, ‘‘কীসের টানে আর এখানে পড়ে থাকব!’’

সংস্থার এক আধিকারিক অভিযোগ করেন, ইতিমধ্যে কয়েকটি ফাঁকা আবাসনের জানলার কাঠ ও লোহার বিম চুরি গিয়েছে। মদের ঠেকও বসতে শুরু করেছে বলে অভিযোগ। কেব্‌লস সূত্রে জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রকের নির্দেশে শহরের আবাসন এলাকা ও কারখানা পাহারা দেওয়ার জন্য বেসরকারি সংস্থার লাঠিধারী নিরাপত্তারক্ষী থাকলেও সন্ধে নামার পরে জঙ্গলে ঘেরা এলাকায় তাঁদের দেখা মেলে না। স্থানীয় বাসিন্দা অনাথবন্ধু চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শহরের রাস্তায় আলো জ্বলছে না। ঝোপ-জঙ্গলে ঢেকেছে পথঘাট। নিরাপদে চলাফেরাও করা যাচ্ছে না।’’

এই পরিস্থিতিতে পুলিশকর্মীরা ফাঁকা আবাসনগুলি ভেঙে দেওয়ার পরামর্শ দিলেও মন্ত্রকের অনুমতি ছা়ড়া তা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন কেব্‌লস কর্তৃপক্ষ। কমিশনারেটের এডিসিপি (পশ্চিম) অনমিত্র দাস বলেন, ‘‘নিরাপত্তা নিয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। কেব্‌লসের নিরাপত্তারক্ষী ও পুলিশকর্মীরা নিয়মিত টহল দেবেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Housing Drunken
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE