এমনই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ হয়ে রয়েছে বুদবুদে। নিজস্ব চিত্র
রাজ্য জুড়ে বেড়েই চলেছে অজানা জ্বর ও ডেঙ্গির দাপট। উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গায় বহু মানুষ ডেঙ্গিতে আক্রান্ত। বিভিন্ন জায়গায় মশা মারার জন্য প্রশাসনের তরফ থেকে নানারকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু বুদবুদের বিভিন্ন এলাকায় এখনও সেই উদ্যোগ চোখে পড়েনি বলে দাবি বাসিন্দাদের।
এই এলাকায় মাস ছ’য়েক আগে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয় ডেঙ্গিতে। এখন এলাকার বেশকিছু মানুষ অজানা জ্বর নিয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। যদিও গলসি ১ পঞ্চায়েত সমিতির তরফে জানানো হয়েছে, বিভিন্ন এলাকায় মশা দমনের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
বুদবুদের সুকান্তনগরে সরিতা দে নামে এক অন্তঃসত্ত্বা বধূর ডেঙ্গিতে মৃত্যু হয় চলতি বছরের জুন মাসে। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। ঘটনার পরই প্রশাসনের তরফে সুকান্তনগরে মেডিক্যাল দল পাঠানো হয়েছিল। এলাকা সাফসুতরোও করা হয়। বেশকিছুদিন ধরে ওই মেডিক্যাল দল এলাকার বাসিন্দাদের রক্ত পরীক্ষা-সহ বিভিন্ন শারীরিক পরীক্ষা করেন। বুদবুদ এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় মশাবাহিত রোগের উপদ্রব বাড়ছে। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যাও। এই এলাকাতেও বহু মানুষ অজানা জ্বর নিয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। দিন দু’য়েক আগেই মানকরের নতুনগ্রামের এক যুবক অজানা জ্বর নিয়ে রাজবাঁধের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তা ছাড়া মানকর গ্রামীণ হাসপাতাল বা গলসি ১ ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রেও জ্বর নিয়ে বহু রোগী যাচ্ছেন। তবুও এলাকায় মশা নিধনের কোনও উদ্যোগই নেয়নি প্রশাসন।
বুদবুদের বাসিন্দা মহম্মদ আকবর, সঞ্জয় মণ্ডলদের ক্ষোভ, ‘‘এলাকার বিভিন্ন জায়গায় জল জমে রয়েছে। বহু জায়গায় নিকাশি নালা মজে গিয়ে আবর্জনায় ভরে গিয়েছে। শুধু বুদবুদ বাজার এলাকায় নয়, আশপাশের মাড়ো, মানকর, রণডিহা, চাকতেঁতুল-সহ বিভিন্ন গ্রামগুলিতেও মশার উপদ্রব বাড়ছে।’’ তাঁরা বলেন, ‘‘অনেক মানুষই জ্বরে ভুগছেন। প্রতিটি এলাকায় দ্রুত সাফাই করে উপযুক্ত ব্যবস্থা না নিলে সমস্যা আরও বাড়বে। বহু বাসিন্দা নিজেরাই এলাকায় ব্লিচিং, মশা মারার ওষুধ ব্যবহার করছেন।’’
এলাকাবাসীর দাবি, মশার উপদ্রব কতটা তা বিভিন্ন এলাকায় ঘুরলেই বোঝা যাবে। মানকরের নতুনগ্রামে যেখানে এক যুবক অজানা জ্বর নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি, সেখানে জলা জায়গা রয়েছে। তার পাশেই ফেলা হচ্ছে নোংরা। পুরো অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ রয়েছে গ্রামে। গ্রামবাসী কালু শেখ, মিলন শেখরা বলেন, ‘‘এলাকায় দীর্ঘদিন একশো দিনের কাজ হয়নি। ফলে নিকাশি নালা থেকে জলা জায়গাগুলি আবর্জনায় ভরে গিয়েছে। মশার উপদ্রব বেড়েছে এলাকায়। অবিলম্বে সেগুলি সাফাইয়ের ব্যবস্থা করা হোক।’’ তাঁদের দাবি, দ্রুত এ সব এলাকা পরিষ্কার করে ব্লিচিং, কীটনাশক স্প্রে করা দরকার। পুকুরের জলে গাপ্পি মাছ ছাড়ারও প্রয়োজন।
যদিও গলসি ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি জনার্দন চট্টোপাধ্যায় জানান, বিভিন্ন পঞ্চায়েতে ব্লিচিং পাউডার, মশা মারার নানান উপকরণ দেওয়া হয়েছে। দ্রুত সেগুলি এলাকায় দেওয়া হবে। তিনি বলেন, ‘‘এলাকা সাফসুতরো রাখার জন্য এলাকাবাসীদেরকে জানানো হয়েছে। প্রশাসনের তরফেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy