চলছে গোলমাল। শুক্রবার সকালে বিএসএনএল-এর কাটোয়া অফিসে। নিজস্ব চিত্র
এমনিতেই বছরভর লিঙ্ক নিয়ে নানা সমস্যা থাকে। তার উপরে বকেয়া বিল না মেটানোয় বিএসএনএল-এর কাটোয়া শাখার বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার রাত থেকে প্রায় ২০ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বিএসএনএল-এর যাবতীয় পরিষেবা বন্ধ হয়ে গিয়েছে কাটোয়া শহরে। একই হাল কালনাতেও। এর জেরে ব্যাঙ্ক থেকে শুরু করে রেল স্টেশন, সর্বত্র দুর্ভোগের ছবি দেখা গেল শুক্রবার।
বিমা সংস্থায়
গ্রাহকেরা জানান, গত এক বছর ধরে লিঙ্ক নিয়ে সমস্যা রয়েছে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত বিমা সংস্থার কাটোয়া শাখায়। এ দিন কার্যত কোনও কাজ না হওয়ায় ক্ষুব্ধ গ্রাহক থেকে ওই সংস্থার কর্তারা। বিমা সংস্থাটির কাটোয়া শাখার মুখ্য আধিকারিক অনুপ দাস বলেন, ‘‘জেলার সবথেকে বড় শাখা এটি। ফি দিন এখানে ২৫০০ গ্রাহক লেনদেন করেন। রয়েছেন এক হাজার এজেন্ট। বিএসএনএলের গাফিলতির জন্য চরম সমস্যায় আমরা।’’ এ দিন ওই সংস্থার অফিসে গিয়ে দেখা গিয়েছে, কাউন্টারের সামনে এজেন্টদের লম্বা লাইন। প্রশান্ত ঘোষ, তরুণ রায়েরা বলেন, ‘‘লিঙ্ক বিভ্রাটে গ্রাহকেরা অসন্তুষ্ট।’’
মহকুমাশাসকের অফিস
বিএসএনএল পরিষেবা না থাকায় শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত স্বাভাবিক কাজ হয়নি। তবে বিকেলের পর থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় বলে জানান মহকুমাশাসক (কাটোয়া) সৌমেন পাল। মহকুমাশাসক (কালনা) নীতিন সিংহানিয়া অবশ্য বলেন, ‘‘বিএসএনএল নম্বর থেকে ফোন যাচ্ছে না। সমস্যা কোথায়, তা জানার চেষ্টা করছি।’’
ব্যাঙ্ক, ডাকঘর
লিঙ্ক নেই দেখে এ দিন সকালে বিএসএনএল অফিসে আসেন কাটোয়ার দু’টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কর্তারা। তাঁরা জানান, বেলা ১০টা বাজতেই গ্রাহকের লম্বা লাইন। কাছারি রোডের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের গ্রাহক বিষ্ণু দে বলেন, ‘‘সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন প্রবীণ নাগরিকেরা। এই গরমে তাঁদের কোনও কাজই হল না।’’ একই দৃশ্য ছিল কাটোয়া ডাকঘর ও কালনার বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কেও। অনেক গ্রাহককেই ফিরে যেতে হয়।
রেল স্টেশন
লোকান ট্রেনের টিকিট কাটা হোক বা দূরপাল্লার ট্রেনে সংরক্ষণের কাজ, সবেতেই সমস্যা হয়েছে বলে জানান কাটোয়ার স্টেশন ম্যানেজার দিলীপ মণ্ডল। তবে তিনি জানান, রেলের নিজস্ব সার্ভার থাকায় পরিস্থিতি সামাল দেওয়া গিয়েছে।
এ ছা়ড়াও বিএসএনএল ল্যান্ডলাইন, ব্রডব্যান্ড ও মোবাইল পরিষেবাও মুখ থুবড়ে পড়েছে বলে জানান কাটোয়া, কালনা-সহ নানা এলাকার বাসিন্দারা। কাটোয়া মহকুমা টেলিকম আধিকারিক রূপানাথ সোরেন বলেন, ‘‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিল মেটানোর আর্জি জানানো হয়েছে।’’ বিল মেটানো হলেই দ্রুত বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎ দফতর। কিন্তু কবে বিল মেটানো হবে, কবে আবার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে, সে প্রশ্ন করেছেন এলাকাবাসী। তাঁদের ক্ষোভ, দুই দফতরের টানাপড়েনে আখেরে মার খাচ্ছে নাগরিক পরিষেবাই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy