নিজের গাড়ি নেই। অথচ, মোবাইলে বার্তা এসেছে, কলকাতায় তাঁর গাড়ি ট্র্যাফিক আইন ভাঙায় মামলা হয়েছে। জলদি হাজিরা না দিলে সমন বা গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হতে পারে।
কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের (কেটিপি) এমন এসএমএস পেয়ে চোখ কপালে উঠেছে বর্ধমানের এক তরুণীর। শুধু ওই তরুণী নন, ট্র্যাফিক বিধি না ভেঙেও জরিমানা ভরার এমন বার্তা পেয়ে ঘুম ছুটছে জেলার অনেকেরই।
দিনকয়েক আগে একটি গাড়ির নম্বর উল্লেখ করে কেটিপি-র তরফে একটি এসএমএসে ওই তরুণীকে জানানো হয়, সেটির বিরুদ্ধে আদালতে চারটি মামলা রয়েছে। আর একটি ক্ষেত্রে পুলিশকে জরিমানা দিতে হবে। বাকি তথ্য জানতে বিভাগের ওয়েবসাইট দেখতেও বলা হয়। তরুণী জানান, পরিবহণ দফতরের ‘বাহন’ মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে তিনি জেনেছেন, ওই নম্বরের গাড়িটি এক বেসরকারি সংস্থার নামে নথিবদ্ধ ট্রেলার। তরুণী বলেন, ‘‘মামলার নিষ্পত্তি করতে আমাকে আলিপুর আদালতে যেতে বলা হয়েছে! আমি কেন যাব?’’
এমন এসএমএসে চোখ কপালে উঠেছিল বর্ধমানেরই রথতলার ইটভাটা এলাকার বিশ্বনাথ দে-র। ২০১৬-র এপ্রিলে তিনি একটি ‘সেকেন্ড হ্যান্ড’ গাড়ি কেনেন। কিছু দিন আগে এসএমএস পান, ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে কলকাতার রাস্তায় আইন ভাঙায় তাঁর বিরুদ্ধে আলিপুর আদালতে মামলা জমে রয়েছে। বিশ্বনাথবাবু বলেন, ‘‘তখন তো আমার গাড়িই ছিল না। আইন ভাঙব কী করে?’’
দুর্গাপুরের ডিএসপি টাউনশিপের দেবনাথ কর্মকার এমন এসএমএস পেয়ে তথ্য জানার অধিকার আইনে কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশকে পাল্টা চিঠি দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমি কলকাতা যাইনি। অথচ, গত মে মাসে নাকি সেখানে মোটরবাইক নিয়ে আইন ভেঙেছি! মিথ্যে অভিযোগে আমার সম্মানহানি হয়েছে।’’
কলকাতা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কোনও গাড়ি শহরের পথে আইন ভাঙলে সিসি (ক্লোজড সার্কিট) ক্যামেরার ফুটেজ দেখে গাড়ির নম্বর চিহ্নিত করে বিশেষ সফটওয়্যারের মাধ্যমে মালিকের বিষয়ে তথ্য জেনে এসএমএস পাঠানো হয়। অনেক সময়ে পরিবহণ দফতরের কাছে তথ্য চেয়েও ব্যবস্থা নেওয়া হয়। কিন্তু এত ‘ভুল’ এসএমএসের অভিযোগ কেন, তার কোনও স্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে পারছেন না ট্র্যাফিক পুলিশের কর্তারা।
কলকাতা পুলিশের ডিসি ট্র্যাফিক (দক্ষিণ) কল্যাণ মুখোপাধ্যায় শুধু বলেন, “আমাদের দফতরে অভিযোগ করলে কী হয়েছে খতিয়ে দেখা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy