Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

‘নিয়মভঙ্গে’র দিন রক্তদান কর্মসূচি

 মা ছিলেন সমাজসেবী। তাই মায়ের শ্রাদ্ধানুষ্ঠানটাতেও সমাজসেবার ছোঁয়া থাকে যেন, এই ভাবনা থেকেই পরিকল্পনাটা করেছিলেন কুলটির থানা মোড়ের বাসিন্দা গোপীকৃষ্ণ দত্ত। বুধবার ‘নিয়মভঙ্গে’র দিনে রক্তদান কর্মসূচির আয়োজন করলেন তিনি। ওই কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে খুশি অতিথিরাও। 

শিবির: থানা মোড়ে রক্তদাতাকে গোলাপ দিচ্ছেন গোপীকৃষ্ণ। নিজস্ব চিত্র

শিবির: থানা মোড়ে রক্তদাতাকে গোলাপ দিচ্ছেন গোপীকৃষ্ণ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০১৭ ০১:১৩
Share: Save:

মা ছিলেন সমাজসেবী। তাই মায়ের শ্রাদ্ধানুষ্ঠানটাতেও সমাজসেবার ছোঁয়া থাকে যেন, এই ভাবনা থেকেই পরিকল্পনাটা করেছিলেন কুলটির থানা মোড়ের বাসিন্দা গোপীকৃষ্ণ দত্ত। বুধবার ‘নিয়মভঙ্গে’র দিনে রক্তদান কর্মসূচির আয়োজন করলেন তিনি। ওই কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে খুশি অতিথিরাও।

গত ৩০ নভেম্বর মৃত্যু হয়, থানা মোড় এলাকার বাসিন্দা, প্রায় ৯২ বছরের সমাজসেবী বাদলবালা দত্তের। বাদলাবালাদেবীর ইচ্ছে অনুযায়ী তাঁর দেহ বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল এবং চোখ কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে দান করেছেন ছেলে।

এ দিন ছিল ‘নিয়মভঙ্গ’। তার জন্য থানা মো়ড়়ের একটি অনুষ্ঠানবাড়ি ভাড়া নেন অবসরপ্রাপ্ত ইস্কো কর্মী গোপীকৃষ্ণবাবু। অতিথিরা সেই বাড়িতে খানিক অবাক, একটি খাট রাখা। তার সঙ্গে টাঙানো প্রচারমূলক ব্যানার। তাতে লেখা, ‘চক্ষু দান মহা দান’ ইত্যাদি। সেই সঙ্গে আর্জি, রক্তদানে এগিয়ে আসার।

কিন্তু শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে রক্তদান কেন? গোপীকৃষ্ণবাবু বলেন, ‘‘এই আয়োজনটা আমার ইচ্ছেতেই হয়েছে। অতিথিদের রক্তদানে উৎসাহ দিতেই এই ভাবনা।’’ শুধু তাই নয়, এ দিন ‘ক্রিয়াকর্ম’ করে প্রথম রক্তদান করেছেন গোপীকৃষ্ণবাবু নিজেই।

সকাল ১১টা নাগাদ এই কর্মসূচি শুরু হয়। তাতে ভি়ড় জমান অতিথি এবং প়়ড়শিরা। যাঁরা রক্ত দিয়েছেন, তাঁদের প্রত্যেককেই লাল গোলাপ দিয়ে সংবর্ধনা জানান গোপীকৃষ্ণবাবু। কয়েক জন বিশিষ্ট রক্তদাতাকেও সংবর্ধনা জানানো হয়। দুপুর দু’টো নাগাদ কর্মসূচি শেষ হয়। আসানসোল জেলা হাসপাতালের ব্ল্যাড ব্যাঙ্কের চিকিৎসক সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় জানান, এ দিন মোট ২২ ইউনিট রক্ত মিলেছে। সরকারি নিয়ম অনুসারে, প্রত্যেক রক্তদাতাকে ২৫ টাকার টিফিন দেওয়া হয়েছে বলেও জানান ওই চিকিৎসক।

মায়ের শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে এমন কর্মসূচির আয়োজন দৃষ্টান্ত স্থাপন করল, বলছেন এলাকাবাসী। গোপীকৃষ্ণবাবুকে অভিনন্দন জানিয়ে রক্তদান আন্দোলনের কর্মী তপন সরকার বলেন, ‘‘এর ফলে সাধারণ মানুষ রক্তদান কর্মসূচির প্রয়োজনীয়তা বুঝতে পারবেন।’’

চিকিৎসক সঞ্জীববাবুর আশা, ‘‘সমাজে এর প্রতিফলন ঘটলে জেলায় আর রক্তের আকাল থাকবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Blood Donation Camp Death Mother
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE