Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

অ্যাকাউন্ট থেকে উধাও লক্ষাধিক টাকা

রাতবিরেতে মোবাইলে হঠাৎ পরপর এসএমএস। এক লাখ ৩০ হাজার টাকা ‘সেভিংস অ্যাকাউন্ট’ থেকে ‘ট্রান্সফার হয়ে গিয়েছে, কলকাতার বেকবাগানের একটি এটিএমের মাধ্যমে।

প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

সুশান্ত বণিক
চিত্তরঞ্জন শেষ আপডেট: ২০ মে ২০১৭ ০২:৩০
Share: Save:

রাতবিরেতে মোবাইলে হঠাৎ পরপর এসএমএস। এক লাখ ৩০ হাজার টাকা ‘সেভিংস অ্যাকাউন্ট’ থেকে ‘ট্রান্সফার হয়ে গিয়েছে, কলকাতার বেকবাগানের একটি এটিএমের মাধ্যমে। এমনই দাবি চিত্তরঞ্জনের এক দম্পতির। আর সেই বিষয়ে থানা-পুলিশ করতে গিয়ে বিস্তর হয়রানির শিকার হতে হয়েছে বলে তাঁদের অভিযোগ।

চিত্তরঞ্জন রেল ইঞ্জিন কারখানার কর্মী অনুপ দাস এবং তাঁর স্ত্রী বাবলিদেবীর একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের চিত্তরঞ্জন শাখায় ‘জয়েন্ট অ্যাকাউন্ট’ রয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, গত ১৩ মে, রাত ১১টা ৫৫মিনিটে ব্যাঙ্কে নথিভুক্ত করা মোবাইল নম্বরে হঠাৎ এসএমএস আসে। তাতে জানানো হয়, ‘কলকাতার বেকবাগান এলাকার একটি এটিএম কাউন্টারের মাধ্যমে তাঁদের অ্যাকাউন্ট থেকে ৫০ হাজার টাকা ট্রান্সফার করা হয়েছে।’ খানিক বাদে ফের দু’টি এসএমএস আসে। তাতে দেখা যায়, দু’বারে ৪০ হাজার করে মোট ৮০ হাজার টাকা ট্রান্সফার হয়েছে।

এর পরে তড়িঘড়ি ওই দম্পতি বাড়ির অদূরে একটি এটিএম কাউন্টারে যান। সেখানে গিয়ে দেখা যায় অ্যাকাউন্টে পড়ে রয়েছে মোটে আড়াই হাজার টাকা। পরের দিন, ১৪ মে রবিবার থাকায় ব্যাঙ্ক বন্ধ ছিল। তবে সেই দিনই তাঁরা চিত্তরঞ্জন থানায় যান। দম্পতির দাবি, থানায় বলা হয় আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ‘সাইবার সেল’ শাখায় অভিযোগ জানাতে। কিন্তু রবিবার তা-ও বন্ধ থাকে।

সোমবার ব্যাঙ্কে অভিযোগ জানান ওই দম্পতি। সেখানে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ বিষয়টি খতিয়ে দেখতে দু’দিন সময় চেয়েছিলেন বলে দাবি ওই দম্পতির। তার পরে ওই দম্পতি ফের আসানসোলে সাইবার সেল শাখায় অভিযোগ জানাতে যান। অনুপবাবুর দাবি, ‘‘সেখানে জানানো হয়, চিত্তরঞ্জন থানায় অভিযোগ করুন।’’ ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের কথা মতো, বুধবার ব্যাঙ্কে গেলে তাঁদের থানায় অভিযোগ জানাতে বলা হয়। শেষমেশ বৃহস্পতিবার রাতে অভিযোগ দায়ের হয় চিত্তরঞ্জন থানায়। দম্পতির দাবি, অভিযোগ দায়ের করতে বিস্তর হয়রানি হয়েছে। যদিও তা অস্বীকার করেছে পুলিশ।

তবে কী ভাবে এমন কাণ্ড ঘটল, তা নিয়ে ধন্দে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ থেকে পুলিশ, সকলেই। ব্যাঙ্কের ওই শাখার ম্যানেজার এনকে লাকড়ার দাবি, ‘‘অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য খুঁটিয়ে দেখেছি। কার্ড পাঞ্চ এবং পিন নম্বর ব্যবহার করেই টাকা ট্রান্সফার হয়েছে।’’ কিন্তু, বাবলিদেবীর দাবি, কার্ড বা পিন সংক্রান্ত কোনও তথ্য তাঁরা কারও কাছে প্রকাশ করেননি। এমনকী কার্ডটিও তাঁদের বাড়িতে রয়েছে। তা হলে কী কার্ড বা পিন নম্বর কোনও ভাবে নকল করা হয়েছে? কমিশনারেটের এডিসিপি (পশ্চিম) অনমিত্র দাস বলেন, ‘‘অভিযোগ পেয়েছি। সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে তদন্ত হচ্ছে। কী ভাবে এমনটা হল, এখনই বলা যাচ্ছে না।’’

এই ঘটনার পরে বাবলিদেবীর আক্ষেপ, ‘‘বাড়িতে নির্মাণকাজ চলছে। সেই টাকা মেটানো গেল না। চার মাস আগে অসম বেড়াতে যাওয়ার টিকিট কেটেছিলাম। মেয়ের বেঙ্গালুরু থেকে আসার কথা ছিল। সব ভেস্তে গেল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Money Bank Account
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE