বাড়িতে কান্নার রোল। তার মধ্যেও হেসে চলছে আড়াই বছরের মেয়েটি। মাঝে মাঝে শুধু মাকে খুঁজছে।
রবিবার দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের উরর নবাবহাট মোড়ের কাছে ডাম্পারের সঙ্গে মোটরবাইকের ধাক্কা লাগতেই মেয়েকে রাস্তায় ছুঁড়ে দিয়েছিলেন মা টিনা বেগম। মেয়ে বাঁচলেও তিনি নিজে বা তাঁর স্বামী বাপি দেওয়ান কেউই বাঁচেননি। ডাম্পারের চাকার ফাঁকে দেহ ঢুকে যায় তাঁদের। রাস্তায় মুখ থুবড়ে পড়া একরত্তি সাহেরি সুলতানা দেওয়ানকে ভর্তি করানো হয় হাসপাতালে। মাথায় চোট লেগেছিল তার। তবে চোট গুরুতর না হওয়ায় রাতেই তাকে ছেড়ে দেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। রাতেই তাকে পৌঁছে দেওয়া হয় রায়না থানার বড় কয়রাপুরে দাদু-ঠাকুমার কাছে। একমাত্র ছেলে ও বউমাকে হারিয়ে বৃদ্ধ দম্পতি মেহেবুব আলি দেওয়ান ও আজমিরা বেগম তখন শোকে পাথর। নাতনিই এখন তাঁদের একমাত্র ভরসা।
ওই পরিবারের পরিজন শেখ হালিম বলেন, “টিনার বুদ্ধির জোরেই মেয়েটি বেঁচে গেল।” পড়শি শেখ সফিউল, প্রবীর শেখরা জানান, ওই পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভাল নয়। ছোট্ট মেয়েটির পাশে থাকার চেষ্টা করব। জানা যায়, রবিবার রাতে বড় কয়রাপুর থেকে বর্ধমানের তালিতে এক আত্মীয়ের বিয়ে বাড়িতে যাচ্ছিলেন ওই দম্পতি। সঙ্গে ছিল সাহেরি। প্রত্যক্ষদর্শীদের কথায়, মোটরবাইকের পিছনে বসা মায়ের কোলেই শুয়েছিল শিশুকন্যাটি। ডাম্পারটি মোটরবাইকে ধাক্কা লাগার মূহুর্তেই শিশুটিকে রাস্তার ডান দিকে ছুঁড়ে দেন টিনা। রাস্তার ধারে মাটিতে গিয়ে পড়ে মেয়েটি। তারপরেই পুলিশ মেয়েটিকে উদ্ধার করে নার্সিংহোমে ভর্তি করে।
বৃদ্ধ দম্পতির কথায়, “নাতনিকে বাঁচিয়ে দিয়ে বউমা আমাদেরও বাঁচিয়ে দিল।ওই আমাদের জীবনশক্তি।” এ দিন কাটোয়া থেকে ময়না-তদন্তের পরে দেহ দুটি রায়নার বাড়িতে নিয়ে আসা হয়।
এই ঘটনায় সিমেন্টবোঝাই ওই ডাম্পার চালককে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃত রকিব হোসেনের বাড়ি মালদার মানিকচকে। তাঁকে রবিবার রাতে নবাবহাট মোড় থেকেই পুলিশ ধরে। ধৃতের বিরুদ্ধে পুলিশ বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালানো, মারাত্মক ভাবে জখম ও অনিচ্ছাকৃত মৃত্যু ঘটানোর ধারা রুজু করেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy