রাতে ফোন করে দুঃসংবাদটা দিয়েছিল পুলিশ। শনিবার সকালেই কলকাতা থেকে দুর্গাপুরে পৌঁছেছেন। কিন্তু কোনও কথাই বলতে পারছিলেন না চয়নিকা মুখোপাধ্যায়। শুক্রবার রাতে অন্ডালের কাজোড়ায় দুর্ঘটনায় মা, ঠাকুমা, ভাই ও কাকার মৃত্যুতে বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছেন তিনি। শুধু চয়নিকা নন, কথা বলার অবস্থায় নেই তাঁর কাকিমা গোপাদেবীও।
শুক্রবার রাতে বাঁকুড়ার ঝাঁটিপাহাড়িতে বিয়েবাড়ি সেরে পরিবারের লোকজনকে নিয়ে দুর্গাপুরের ইস্পাতনগরীর রানা প্রতাপ রোডের বাড়িতে ফিরছিলেন দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্টের কর্মী জীবন মুখোপাধ্যায়। গাড়িতে ছিলেন তাঁর মা ভক্তিদেবী, স্ত্রী কণিকাদেবী, ছেলে সৌরেন ও ভাই মিলনবাবু। কাজোড়ায় রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রেলারে ধাক্কা দেয় তাঁদের গাড়ি। তখন পিছন থেকে আসা একটি ট্রাক তাঁদের গাড়িকে ধাক্কা মেরে দুমড়ে দেয়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় চার জনের। জীবনবাবু দুর্গাপুরে এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি।
ইস্পাতনগরীতে পাশাপাশি আবাসনে বাস জীবনবাবু ও মিলনবাবুর পরিবারের। মিলনবাবু আসানসোলে এক গাড়ির শো-রুমের কর্মী। তাঁর মেয়ে স্বস্তিকা পড়ে পঞ্চম শ্রেণিতে। জীবনবাবুর মেয়ে চয়নিকা কলকাতার কলেজে পড়েন। ছেলে সৌরেন শহরের এক ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে অষ্টম শ্রেণির ছাত্র ছিল।
জীবনবাবুদের আত্মীয় প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘চরম ক্ষতি হয়ে গেল পরিবারটির।’’ প্রতিবেশী মৌসুমী আকুড়িয়া বলেন, ‘‘দুর্ঘটনার খবর আসার পরে পাড়ায় সারা রাত কারও ঘুম নেই। সবাই দুশ্চিন্তায় ছিলাম। মৃত্যুর খবর আসার পরে গোটা পাড়া স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে।’’ তিনি জানান, গভীর রাতে অন্ডাল থানার পুলিশ চয়নিকাকে ফোন করে দুর্ঘটনার খবর দেয়। চয়নিকা ফোন করে জানান গোপাদেবীকে।
গাড়িটি চালাচ্ছিলেন মিলনবাবু। দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেলারটি দেখে তিনি নিয়ন্ত্রণ হারান, না কি ব্রেক ফেল হয়েছিল, সে নিয়ে ধন্দে পুলিশ। তবে জাতীয় সড়কের পাশে ট্রাক, ট্রেলার রাখা নিয়ে ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা। পুলিশের আশ্বাস, নজরদারি বাড়ানো হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy