Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

শারোদৎসবে ঢিমে ইনিংস সোনার গয়নার

দৃশ্যটা শহরের অন্যতম বড় এক গয়নার দোকানের। দুর্গাপুরের স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের দাবি, এই ছবিটা গত কয়েক মাস ধরে প্রায় সব দোকানেই। এমনকী পুজো-বাজার খানিকটা জমবে মনে হলেও, সে আশাও পূরণ হয়নি বলে তাঁদের দাবি।

ফাঁকা: ভিড় নেই দোকানে। নিজস্ব চিত্র।

ফাঁকা: ভিড় নেই দোকানে। নিজস্ব চিত্র।

অর্পিতা মজুমদার
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০০:০৪
Share: Save:

ভরসন্ধ্যায় কর্মচারীদের সঙ্গে আড্ডায় মশগুল মালিক। সঙ্গত দিচ্ছে চপ-মুড়ি। দৃশ্যটা শহরের অন্যতম বড় এক গয়নার দোকানের। দুর্গাপুরের স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের দাবি, এই ছবিটা গত কয়েক মাস ধরে প্রায় সব দোকানেই। এমনকী পুজো-বাজার খানিকটা জমবে মনে হলেও, সে আশাও পূরণ হয়নি বলে তাঁদের দাবি।

অথচ অন্যান্য বছর এই সময়ে হরদম ক্রেতার ভিড় দেখা যায় গয়নার দোকানে। কিন্তু চলতি বছরে নোট বাতিলের সময় থেকেই ঝিমিয়ে পড়েছে সোনার গয়নার বাজার। কিন্তু কেন এমন হাল? শহরের একাধিক স্বর্ণ ব্যবসায়ী বেশ কিছু কারণের কথা জানিয়েছেন। প্রথমত, নির্দিষ্ট অঙ্কের বেশি নগদ কেনাকাটায় বেশ কিছু বিধিনিষেধ রয়েছে। দ্বিতীয়ত, দুর্গাপুর-সহ শিল্পাঞ্চলের অধিকাংশ কারখানা ধুঁকছে। নতুন করে কল-কারখানা তৈরিও হয়নি। তৃতীয়ত, পুরভোটের কারণে এ বার পুজোর বাজার বেশ খানিকটা পরে শুরু হয়েছে। চতুর্থত, সোনার বাজারদর বেশ চড়া যাচ্ছে এই সময়ে। পঞ্চমত, ব্যবসায়ীদের দাবি, প্রতি বারই ডিএসপি-র কর্মীদের পরিবারগুলি বেশ কিছু গয়না কেনে। কিন্তু এ বছর এখনও পর্যন্ত ডিএসপি-র বোনাস চুক্তি চূড়ান্ত হয়নি।

যদিও ক্রেতার নেক নজরে আসতে চেষ্টার কসুর করেননি ব্যবসায়ীরা। পুজো স্পেশ্যাল ডিজাইন আনা, গয়নার মজুরির উপরে বিশেষ ছাড়, ‘গিফট’-সহ সব ব্যবস্থাই রয়েছে। কিন্তু তাতেও বাজার জমেনি বলেই দাবি। বেনাচিতি বাজারের স্বর্ণ ব্যবসায়ী চন্দন দাস যেমন বললেন, ‘‘পুজোয় এ বার বিক্রিবাটা একেবারেই নেই। ভেবেছিলাম, পুজোর আগে ঠিক জমবে বাজার। তা আর হল না!’’ কিন্তু এখনও হাতে তো কয়েকটা দিন? স্লগ ওভারে তো বাজার উঠতেও পারে! তেমনটা সাধারণত হয় না, দাবি ব্যবসায়ীদের। তাঁরা জানান, সাধারণত পুজোর সপ্তাহ দুয়েক আগেই গয়না কিনে ফেলেন অধিকাংশ ক্রেতা।

ক্রেতাদের পছন্দেও সোনার গয়নার ‘বিকল্প’ উঠে আসছে। দুর্গাপুরের নানা প্রান্তের মহিলাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, রুপো বা অন্যান্য ধাতুর তৈরি গয়না তাঁদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে। এ ছাড়াও রঙিন পাথর, ‘বিটস’, হাতে তৈরি নানা কিসিমের গয়নাও রয়েছে পছন্দের তালিকায়। জাতীয় সড়কের ধারের একটি শপিং মলে তেমনই কিছু গয়না কিনতে কিনতে পুজোর সাজ পরিকল্পনা করছিলেন তানিয়া রায় নামে শহরের এক বধূ। তাঁর কথায়, ‘‘এ বার নানা কারণে পকেট প্রায় ফাঁকা। সংসার খরচ বাঁচিয়ে এ বার আর সোনার গয়না কেনার মতো পরিস্থিতি নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Gold Gold Shop Durga Puja 2017
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE