Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
ভোটের পরেও তপ্ত শহর

গোলমালে ক্ষোভ, পথে বিরোধীরা

ভোটের দিন তৃণমূলের বিরুদ্ধে বহিরাগতদের দিয়ে বুথ দখল ও ছাপ্পা ভোট করানোর অভিযোগ তুলেছিল সিপিএম। দলের নেতাদের দাবি, পুলিশ-প্রশাসনকে জানিয়েও কোনও ফল হয়নি। পুলিশের চোখের সামনেই সব ঘটনা ঘটেছে।

প্রতিবাদ: জাতীয় সড়কে অবরোধ সিপিএমের। নিজস্ব চিত্র

প্রতিবাদ: জাতীয় সড়কে অবরোধ সিপিএমের। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০১৭ ০৬:২০
Share: Save:

ভোটের দিন বারবার শহরে বহিরাগত দৌরাত্ম্যের অভিযোগ তুললেও প্রতিরোধের রাস্তায় যেতে দেখা যায়নি সিপিএমকে। সোমবার সিটি সেন্টারের পুরসভা মোড়ে রাস্তা অবরোধ করে পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন দলের কর্মী-সমর্থকেরা। এ দিনই ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা ভোটের দিন তল্লাশির নামে পুলিশ অত্যাচার চালিয়েছে অভিযোগ তুলে মহকুমাশাসকের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ দেখান।

ভোটের দিন তৃণমূলের বিরুদ্ধে বহিরাগতদের দিয়ে বুথ দখল ও ছাপ্পা ভোট করানোর অভিযোগ তুলেছিল সিপিএম। দলের নেতাদের দাবি, পুলিশ-প্রশাসনকে জানিয়েও কোনও ফল হয়নি। পুলিশের চোখের সামনেই সব ঘটনা ঘটেছে। এ দিন বিকেলে সিটি সেন্টারে দলের কার্যালয় থেকে মিছিল করে পুরসভা মোড়ে হাজির হন দলের কর্মী-সমর্থকেরা। জাতীয় সড়ক মিনিট পাঁচেকের জন্য অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। তবে তার পরেই তাঁরা সরে যান পুরসভা মোড়ে। উপস্থিত পুলিশকর্মীদের উদ্দেশে স্লোগান দেন কেউ-কেউ। মিনিট দশেক পরে বৃষ্টি নামতেই অবশ্য তাঁরা ফিরে যান। শহরের সিপিএম নেতা পঙ্কজ রায় সরকারের অভিযোগ, ‘‘ভোটের দিন তৃণমূলের পক্ষ নিয়ে পুলিশ দর্শকের ভূমিকা নিয়েছিল। এ দিন তাই দলের কর্মী-সমর্থকরা রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করেন।’’

ভোটের দিন ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে বড় গোলমাল বাধে। বোমাবাজি করে, ভয় দেখিয়ে ভোটারদের বুথে যেতে বাধা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করে বিজেপি। প্রতিবাদে তারা জাতীয় সড়ক অবরোধ করলে পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ বাধে। এ দিন ওই ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী পঙ্কজকুমার গুপ্তের নেতৃত্বে এলাকার বেশ কিছু বাসিন্দা মহকুমাশাসকের অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখান। তবে তাঁদের সঙ্গে দলের পতাকা নজরে পড়েনি।

বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, তৃণমূলের পক্ষ নিয়ে পুলিশ তাঁদের বাড়ি-বাড়ি ঢুকে তল্লাশির নামে ভাঙচুর করেছে। মারধরও করা হয়েছে। কলি দেবী নামে এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘ভোটের দিন দুপুরে আমাদের বাড়ি-বাড়ি ঢুকে পুলিশ নির্যাতন করেছে। সব ভেঙেচুরে দিয়েছে। তৃণমূলকে ভোট দিতে অস্বীকার করায় আমাদের এই হাল করে ছেড়েছে পুলিশ!’’ প্রার্থী পঙ্কজবাবুরও অভিযোগ, ‘‘কী ভাবে ভোট হয়েছে শহরে সবাই তা জানেন। আমাদের ওয়ার্ডে ভোটাররা নিজেদের ভোট নিজে দেওয়ার জন্য জোর করাতেই এ ভাবে পুলিশি নির্যাতনের শিকার হয়ে হয়েছে।’’

পুলিশ যদিও অত্যাচার বা নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। কমিশনারেটের এক কর্তা বলেন, ‘‘অশান্তি পাকানোর জন্য ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই ছিল।’’

এ দিন কোকওভেন থানায় বীরভানপুরের বাসিন্দারা ভোটে বহিরাগত-দৌরাত্ম্যের প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখান। ঘণ্টাখানেক বিক্ষোভ চলে। ওই বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, রবিবার এলাকায় বাইরের লোকজন ঢুকেছিল। এলাকাবাসী একজোট হয়ে তাড়া করলে তারা পালিয়ে যায়।

তৃণমূলের দুর্গাপুর জেলা সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায়ের পাল্টা বক্তব্য, ‘‘বিরোধীরা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে নানা অভিযোগ আনছে। বিজেপি-র বহিরাগত দুষ্কৃতীদের হাতে আমাদের কর্মীরাই আক্রান্ত হয়েছেন। এক কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।’’ তৃণমূলের তরফে জানানো হয়েছে, ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডে ভোট দিয়ে ফেরার পথে জহরলাল শর্মা নামে দলের এক কর্মী গুলিবিদ্ধ হন। বিধাননগরে এক বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা চলছে। বহিরাগত আনার অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছে বিজেপি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE