Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

আবর্জনার ধোঁয়ায় বাড়ছে চিন্তা

হাওয়া দিলেই ‘ডাম্পিং গ্রাউন্ড’ থেকে বের হচ্ছে বিষাক্ত ধোঁয়া। গত বছর প্রশাসনিক বৈঠকে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কালনা রোডের ধারে ডাম্পিং গ্রাউন্ডের জমি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন।

হাওয়া দিলেই ধোঁয়া বের হয় আবর্জনা থেকে। নিজস্ব চিত্র।

হাওয়া দিলেই ধোঁয়া বের হয় আবর্জনা থেকে। নিজস্ব চিত্র।

সৌমেন দত্ত
বর্ধমান শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৭ ০০:১৯
Share: Save:

হাওয়া দিলেই ‘ডাম্পিং গ্রাউন্ড’ থেকে বের হচ্ছে বিষাক্ত ধোঁয়া। গত বছর প্রশাসনিক বৈঠকে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কালনা রোডের ধারে ডাম্পিং গ্রাউন্ডের জমি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। কিন্তু তার পরেও ওই গ্রাউন্ডের জমির মালিকানা কার, তা নিয়ে জটিলতার সমাধান হয়নি বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের একাংশের। এই পরিস্থিতিতে বিষাক্ত গ্যাসের জেরে অতিষ্ঠ শহরবাসী।

কয়েক মাস আগে ওই ডাম্পিং গ্রাউন্ডে আগুন লাগে। তার পরে থেকেই হাওয়া দিলে সেখান থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে বলে বাসিন্দারা জানান। চিকিৎসকদের দাবি, ওই ধোঁয়ায় মিশে থাকছে কার্বন মনোঅক্সাইড, হাইড্রোজেন সালফাইড, সালফার ডাই অক্সাইড-সহ নানা গ্যাস। এই সব গ্যাস শরীরে ঢুকলে হাঁপানি-সহ শ্বাসনালী ও ফুসফুসের রোগ হতে পারে বলে জানান চিকিৎসকেরা। শহরবাসীর দাবি, এখনও ওই ডাম্পিং গ্রাউন্ডে ধিকিধিকি আগুনে বর্জ্য পোড়ার কারণেই বিষাক্ত গ্যাস তৈরি হচ্ছে। সম্প্রতি একই রকম অভিযোগ ওঠে বেলঘরিয়ার প্রমোদনগরের ভাগাড়টি নিয়েও। সেখানেও বর্জ্য পোড়ার জেরে ওই এলাকার আদর্শনগরের বাসিন্দারা রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদে অভিযোগ জানান।

প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, কয়েক বছর আগে বর্ধমানের ডাম্পিং গ্রাউন্ডটি একটি সংস্থার হাতে তুলে দেয় পুরসভা। তার বদলে ওই সংস্থা পুরসভাকে ক্ষেতিয়ার এলাকার ১৭ বিঘা জমি ও একটি বন্ধ চালকল তুলে দেয়। কিন্তু এই ‘হস্তান্তর’ বেআইনি বলে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ করেন পুরসভার কয়েক জন তৃণমূল কাউন্সিলর। গত বছর অগস্টে প্রশাসনিক সভায় এসে মুখ্যমন্ত্রী পুরপ্রধান স্বরূপ দত্তকে জিজ্ঞাসা করেন, “ডাম্পিং গ্রাউন্ড কি প্রমোটারকে দিয়ে দেওয়া হয়েছে? বিক্রি করে দিয়েছেন?” পুরপ্রধান জানান, বিক্রি নয়, জমি হস্তান্তর করা হয়েছে। তা শুনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “সেটাও তো বিক্রি করা।”

পুরসভা সূত্রে জানা যায়, চলতি মাসের ৯ তারিখে প্রাক্তন জেলাশাসক সৌমিত্র মোহনের উপস্থিতিতে জমির মালিকানা সমস্যা মেটাতে একটি বৈঠক হয়। সেখানে ঠিক হয়, জমি হস্তান্তর নিয়ে দু’পক্ষেরই ভুল রয়েছে। তাই জমি-নিবন্ধকরণই বাতিল বলে ঘোষণা করা হবে। প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, “সরকারি জমি হস্তান্তর করতে গেলে সংশ্লিষ্ট দফতরের অনুমোদন প্রয়োজন। চালকলের জমির ক্ষেত্রেও ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরের অনুমোদন নিতে হয়। দু’টি ক্ষেত্রেই নিয়ম মানা হয়নি।”

তবে নিবন্ধকরণ বাতিল করেও সমস্যা মিটবে কি না, তা নিয়ে পুরপ্রধান স্বরূপ দত্তই। তাঁর কথায়, “প্রশাসন একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে তা কতদূর কার্যকর হয়, সেটাই দেখার।” পুরসভার মেয়র পারিষদ (জঞ্জাল) সদস্য খোকন দাসও বলেন, “বিষয়টি নিয়ে আমরা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিচ্ছি। কিন্তু মালিকানা-সংক্রান্ত জট কাটার আগে কিছু হবে কি না, তা এখনই বলতে পারছি না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Smoke Garbage Pollution
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE