উদ্ধার হওয়া বিস্ফোরক। নিজস্ব চিত্র
রাতের অন্ধকার। একের পর এক গাড়ি আসছে পড়শি জেলা থেকে। তল্লাশিতে পুলিশকর্মীরা। ‘গাড়ি থামান’, নির্দেশ কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের। নির্দেশ শুনেই গাড়ি থেকে চম্পট দেওয়ার চেষ্টা করলেন চালক ও এক আরোহী। তাঁদের পাকড়াও করে গাড়ি খুলতেই চক্ষু চড়কগাছ পুলিশের। পুলিশের দাবি, মিলেছে জিলেটিন, ডিটোনেটর ও অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট। গ্রেফতার করা হয় দু’জনকে। শুক্রবার রাতে রানিগঞ্জের সাহেবগঞ্জ মোড়ের ঘটনা।
রানিগঞ্জ থানার বল্লভপুর পুলিশ আউটপোস্টের পুলিশ জানায়, বাঁকুড়ার সঙ্গে রানিগঞ্জের যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম মেজিয়া সেতু। শুক্রবার রাত আটটা থেকে পুলিশকর্মীরা সেতু লাগোয়া সাহেবগঞ্জ মোড়ে প্রতিটি গাড়ি আটকে তল্লাশি চালাতে শুরু করেন। সেই সময়েই বাঁকুড়া থেকে মেজিয়া সেতু পার হয়ে আসা একটি চার চাকার গাড়ি আটক করে পুলিশ। অভিযোগ, আটক হতেই গাড়ির চালক ও এক আরোহী চম্পট দেওয়ার চেষ্টা করে। পুলিশকর্মীরা দ্রুত ওই দু’জনকে পাক়ড়াও করে।
পুলিশের দাবি, ওই গাড়িতে কয়েকটি কার্ডবোর্ডের বাক্স রাখা রয়েছে। সেগুলি খুলতেই পাঁচশো করে ডিটোনেটর ও জিলেটিন স্টিক মেলে। গাড়ির ডিকি খুলে প্রায় ১০ বস্তা অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট মেলে বলেও পুলিশের দাবি। ঘটনাস্থলে আসেন আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এসিপি (সেন্ট্রাল) অজয় চট্টোপাধ্যায়-সহ পুলিশকর্তারা। এর পরে রানিগঞ্জের গির্জাপাড়ার বাসিন্দা, গাড়ির চালক রাজেশ কেওড়া এবং বাঁকুড়ার শালতোড়ার কাস্তোড়ার বাসিন্দা শেখ মুস্তাকিনকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতদের শনিবার আসানসোল আদালতে তোলা হলে ছ’দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়।
বিশেষ সূত্রে জানা যায়, এই ধরনের বিস্ফোরকগুলি খনিতে কাজে লাগে। পুলিশের অনুমান, পাথর খাদানের জন্য এই সামগ্রী পাচার করা হচ্ছিল। এই বিস্ফোরক উদ্ধারের খবর চাউর হতেই এলাকায় অবৈধ খাদানের রমরমা নিয়ে সরব হয়েছে সিপিএম। রানিগঞ্জের সিপিএম বিধায়ক রুনু দত্তের ক্ষোভ, ‘‘দুষ্কৃতীরা এই সব বিস্ফোরক বেআইনি কয়লা বা পাথর খাদানের মাফিয়াদের কাছে সরবরাহ করে।’’
এসিপি (সেন্ট্রাল) অজয়বাবু বলেন, ‘‘তদন্ত করে পুরো চক্রটিকে উৎখাত করা হবে। কোথা থেকে ওই বিস্ফোরকগুলি নিয়ে আসা হচ্ছিল, কোথায় পাচার করা হচ্ছিল, সে সবও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy