বেহাল: এই স্বাস্থ্যকেন্দ্র নিয়েই অভিযোগ বাসিন্দাদের। নিজস্ব চিত্র
গাফিলতিতে শিশু মৃত্যুর অভিযোগ তুলে গুসকরা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের এক চিকিৎসককে মারধরের ঘটনা ঘটেছে রবিবার। ওই ঘটনার পরে এলাকাবাসীর একাংশের ক্ষোভ, স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির পরিকাঠামো দীর্ঘ দিন ধরেই বেহাল। ভাল ভাবে চিকিৎসা না করেই বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে রোগী স্থানান্তরিত করার অভিযোগও রয়েছে। আর এর ফলেই মাঝেসাঝে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে বলে দাবি বাসিন্দাদের একাংশের।
বাসিন্দারা জানান, গুসকরা শহরের এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির উপরে গুসকরা, ভাতার, মঙ্গলকোট, আউশগ্রাম-সহ জেলার বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ ভরসা করেন। লাগোয়া এলাকায় জাতীয় সড়কে কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে জখমদেরও এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রেই আনা হয়।
অথচ এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি নিয়ে রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। যেমন, গুসকরার বাসিন্দা হবি বিবি নামে এক জনের অভিযোগ, ‘‘গর্ভবতী মহিলাদের এখানে প্রসবের জন্য আনা হলে বেশির ভাগ সময়ে বর্ধমানে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।’’ বাসিন্দাদের একাংশের আবার দাবি, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের অদূরেই রয়েছে চিকিৎসকদের আবাসন। রয়েছেন চার জন চিকিৎসক। অথচ রাতবিরেতে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসক থাকেন না বলে অভিযোগ গুসকরার চন্দন ঠাকুর, আউশগ্রামের পিচকুরির জাহাঙ্গির শেখদের। গুসকরা নাগরিক সুরক্ষা সমিতির অন্যতম কর্তা তপন মাজির অভিযোগ, ‘‘চিকিৎসকেরা নির্দিষ্ট সময়সূচি মেনে ‘ডিউটি’ করেন না।’’
সমস্যা রয়েছে স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির পরিকাঠামো নিয়েও। এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, অনেক সময়েই ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, ‘এখানে যন্ত্র নেই। অন্যত্র যান।’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের এক চিকিৎসকও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম না থাকার কথা স্বীকার করেছেন। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মীদের একাংশের দাবি, ১০টি শয্যা রয়েছে এখানে। অথচ স্বাস্থ্যেকেন্দ্রে মজুত অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা খুবই কম। অনেক সময়, এমনও হয়েছে যে, বাইরে থেকে সিলিন্ডার আনতে হয়েছে। যদিও পরিকাঠামোগত সমস্যার কথা মানতে চাননি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রণব রায়। তাঁর দাবি, ‘‘প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নিরিখে যা যা পরিকাঠামো থাকা দরকার, তার সবটাই রয়েছে।’’
গুসকরার পুরপ্রধান বুর্ধেন্দু রায়ের অবশ্য বলেছেন, ‘‘ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির উপরে বহু মানুষ নির্ভর করেন। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিকাঠামো উন্নত করার জন্য পুরসভার তরফে স্বাস্থ্য দফতরে চিঠি দেওয়া হয়েছে।’’ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের রোগী কল্যাণ সমিতির সভাপতি তথা বিধায়ক অভেদানন্দ থান্ডারের আশ্বাস, ‘‘স্বাস্থ্যকেন্দ্রটিকে যাতে ‘স্টেট জেনারেল হাসপাতাল’ করা হয়, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরে আবেদন জানাব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy