দোকানে সারাই হল রেডিও। নিজস্ব চিত্র
বছরভর পড়ে থাকে অবহেলায়। কিন্তু খোঁজ পড়ে দেবীপক্ষ শুরুর আগেই। ধুলো ঝেড়ে, নতুন ব্যাটারি পরিয়ে তৈরি করে রাখা হয় মহালয়ার ভোরের জন্য। যদি দেখা যায় বিগড়ে রয়েছে, লাইন দিতে হয় সারাইয়ের দোকানে। বর্ধমানের নানা রেডিও সারানোর দোকানেও গত কয়েক দিনে ছিল এমনই লাইন।
নতুন প্রজন্ম অনেক বেশি স্বচ্ছন্দ এফএম বা ইন্টারনেট-মিডিয়ায়। কিন্তু রেডিওতে মহালয়া শোনা না হলে এখনও যেন পুজোর আমেজ শুরু হয় না প্রবীণ মানুষজনের অনেকের। মহালয়ার ভোরে তাঁরা শুনতে চান সেই পরিচিত কন্ঠ। বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের পাঠ শোনার জন্য মহালয়ার আগে থেকেই রেডিওর খোঁজ শুরু করে দেন তাঁরা।
বর্ধমান শহরের প্রবীণ নাগরিক স্মৃতিমেদুর দাঁ বলেন, ‘‘আগে ভোর ৪টে বাজার আগেই রেডিও চালানো হতো। তার খানিক পরেই শুরু হয়ে যেত বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের সেই চণ্ডীপাঠ। এখন শহরের খুব কম বাড়ি থেকেই মহালয়ার আগমনী বার্তা ভেসে আসতে শুনি!’’ মহালয়া শোনার জন্য রেডিও ঠিক করতে এই ক’দিন দোকানে ভিড়ও জমিয়েছিলেন অনেকে। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন কর্মী সমর খান্না থেকে উদয়পল্লির রঞ্জনা দাসদের কথায়, ‘‘মহালয়ার ভোরে রেডিওতে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠস্বর শোনার কোনও বিকল্প হয় না। তাই রেডিও ঠিক করিয়েছি।’’
কাঞ্চননগরের রেডিও সারাইয়ের দোকানদার গৌরাঙ্গ ঘোষ বা বড়বাজারের দেবব্রত দাসদের দোকানে সপ্তাহ দুয়েক ধরে জমা পড়েছিল বেশ কিছু পুরনো রেডিও। তাঁদের কথায়, “৬০-৭০ বছরের পুরনো রেডিও-ও সারাই করে দিয়েছি। এই ক’দিন টিভি বা অন্য ইলেকট্রনিক জিনিস সারাইনি।’’ তাঁরা জানান, প্রতিদিন গড়ে ২০-২৫টি করে রেডিও সারিয়েছেন।
যন্ত্রাংশ মেলা মুশকিল, তবু ভাঙা রেডিও সারিয়ে দেওয়ার জন্য নাছোড়বান্দা ক্রেতা। দোকানদারেরা বলছেন, ‘‘মহালয়ার প্রতি টান যে অটুট, এর থেকেই পরিষ্কার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy