পড়শি যুবক যখন অত্যাচার করছে, দৃষ্টিহীন তরুণীর আর্তনাদ চাপা পড়েছিল এলাকা জুড়ে মনসা পুজোয় বাজা মাইকের শব্দে। কিন্তু হামলাকারীর গলার স্বর শুনে সন্দেহ হয়েছিল মেয়েটির। জানিয়ে ছিলেন পুলিশকে। মঙ্গলবার বর্ধমানের কাটোয়ায় ওই তরুণীকে ধর্ষণে অভিযুক্ত যুবককে ধরেছে পুলিশ।
বছর আঠারোর ওই তরুণীর বাবা-মা মারা গিয়েছেন বছর পাঁচেক আগে। ঠাকুর্দা-ঠাকুমার সঙ্গে থাকা ওই মেয়েটি খাজুরডিহি মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্রের ছাত্রী। মঙ্গলবার তাঁর বাংলা ও ইতিহাস পরীক্ষা ছিল। এ দিন সকালে স্কুলে বেরনোর আগে জামাকাপড় শুকোতে দিচ্ছিলেন তিনি। মেয়েটির ঠাকুমা পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন, সেই সময়ে বাড়ির পিছন দিক দিয়ে ভিতরে ঢুকে পড়শি যুবক বাপি মাঝি তাঁর নাতনিকে ধর্ষণ করে। পালিয়ে যাওয়ার আগে বলে যায়, ‘এ কথা পাঁচ কান করলে, তোকে খুন করে দেবো।’
ওই ছাত্রীর ঠাকুমার কথায়, “আমার স্বামী কাজে গ্রামের বাইরে গিয়েছিলেন। আমি কাজে গ্রামের এক জনের বাড়ি গিয়েছিলাম। সকাল ৯টা নাগাদ বাড়িতে ফিরে দেখি, নাতনি কান্নাকাটি করছে। ভেবেছিলাম, পুজোর দিনে বাবা-মায়ের জন্য মন খারাপ। ওকে বলি, ‘আমরা কি তোকে খুব কষ্টে রেখেছি’? তখনই ও ঘটনাটা জানায়।”
এ দিন দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, মনসা পুজোর জন্য এত জোরে এলাকায় মাইক বাজছে যে পাশের লোকের কথাও স্পষ্ট শোনা যাচ্ছে না। অভিযোগকারিণীর এক তলা মাটির বাড়ির পাঁচিলের একাংশ এবং দরজা ভাঙা। মেয়েটির দাবি, হুমকি যে দিচ্ছে, তার গলার স্বর বাপির মতো বলে সন্দেহ হয় তাঁর। এ দিন সন্ধ্যায় বাপিকে গ্রেফতার করা হয়। থানায় নিয়ে যাওয়ার পরে নির্যাতিতাকে ওই যুবকের গলার স্বর শুনিয়ে শনাক্তও করায় পুলিশ। এ দিনই কাটোয়া হাসপাতালে তরুণীর ডাক্তারি-পরীক্ষা করানো হয়।
বাপির বাবা নির্মল মাঝি অবশ্য বলেন, “যে সময়ে ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে, তখন আমার ছেলে পাড়াতে ছিলই না। ওকে ফাঁসানো হল।” ওই তরুণীর ঠাকুমার পাল্টা প্রশ্ন, “একটি দৃষ্টিহীন মেয়ে নিজের সম্পর্কে এ রকম মিথ্যে বলবে কেন?” এসডিপিও (কাটোয়া) ধ্রুব দাসের কাছে গ্রামে ফিরলে তাঁদের উপরে হামলা হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তরুণীর ঠাকুর্দা-ঠাকুমা। নিরাপত্তার ব্যাপারে তাঁদের আশ্বস্ত করেন এসডিপিও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy