Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

পরিবেশের পাঠ দিয়ে পুরস্কৃত স্কুল

কয়েক বছর আগেও অবশ্য ছবিটা এই রকম ছিল না। স্কুলের স্থায়ী কোনও ঘরই ছিল না তখন।

সিঁড়ি: নানা উপায়ে পাঠ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে। —নিজস্ব চিত্র।

সিঁড়ি: নানা উপায়ে পাঠ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৭ ০০:২৬
Share: Save:

গাছগাছালিতে ভরা একটি ভবন। সুদৃশ্য গেটে পরিবেশ সচেতনতার ছাপ। দেওয়ালে চিত্রকলা। দরজায় যামিনী রায়ের শিল্পকর্মের আদলে ছবি। ভিতরে মন ভাল করে দেওয়ার মতো পরিবেশ। নানা রকম গাছের পরিচর্যায় ব্যস্ত পড়ুয়ারা। খেলার ফাঁকে পড়া বুঝে নেওয়ার জন্য নানাবিধ ব্যবস্থা। এমন পরিবেশ ও সংস্কৃতি সচেতনতার জন্য ২০১৭ সালের যামিনী রায় পুরস্কার পাচ্ছে বর্ধমান শহরের আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়।

কয়েক বছর আগেও অবশ্য ছবিটা এই রকম ছিল না। স্কুলের স্থায়ী কোনও ঘরই ছিল না তখন। এলাকার অনেক অভিভাবক ছেলেমেয়েদের পাঠাতেন না এই স্কুলে। কিন্তু এখন পরিস্থিতিটা আর সে রকম নেই। সর্বশিক্ষা অভিযান, নানা সংস্থার সাহায্যে হয়েছে বড় ভবন। আর তাকে সুন্দর করে সাজিয়ে তুলেছেন স্কুলের শিক্ষক-পড়ুয়ারা। মঙ্গলবারই শিক্ষা দফতর জানিয়েছে, পশ্চিম মেদিনীপুর ও জলপাইগুড়ির সঙ্গে এ বার পুরস্কার পাচ্ছে বর্ধমানের এই স্কুলটিও।

জেলার সর্বশিক্ষা প্রকল্প আধিকারিক শারদ্বতী চৌধুরী বলেন, ‘‘মাধ্যমিক স্তরে জেলা থেকে আমরা একটি স্কুলেরই নাম পাঠিয়েছিলাম। সেই স্কুলটি যামিনী রায় পুরস্কার পেতে চলেছে, যা খুব আনন্দের।’’ ২০১২ সালে অবিভক্ত বর্ধমান জেলা থেকে একটি স্কুল এই পুরস্কার পেয়েছিল। গত অগস্টে দেশে সেরা তিরিশটি স্বচ্ছ বিদ্যালয়ের তালিকায় নাম ছিল স্কুলটির। কেন্দ্র থেকে পুরস্কারও মিলেছিল। গত বছর মেলে শিশুমিত্র পুরস্কার। শারদ্বতীদেবী জানান, প্রথমে দেওয়া হয় নির্মল স্কুলের পুরস্কার। তার পরে আসে শিশুমিত্র পুরস্কার। ওই দু’টি পুরস্কার যে সব স্কুল পায়, তাদের মধ্যে থেকে বেছে নিয়ে যামিনী রায় পুরস্কারের জন্য নাম পাঠানো হয়। রাজ্য স্তরের বিচারকেরা সেই স্কুলগুলি ঘুরে সেরা তিনটি বেছে নেন।

স্কুল সূত্রে জানা যায়, পড়াশোনার বাইরে পড়ুয়াদের সাংস্কৃতিক সচেতনতা, পরিবেশ সম্পর্কে ধারণা, নানা বিষয়ে আগ্রহ, স্কুলে মেডিক্যাল ইউনিট, পাখিরালয় তৈরির মতো বিষয়গুলিই আর পাঁচটা স্কুলের থেকে তাদের ফারাক গড়ে দিয়েছে। দেওয়ালে সচেতনতার পাঠ, সাধারণ ফুল-ফলের সঙ্গে বৃষ্টির জল ধরে ভেষজ বাগান তৈরি, গাছে-গাছে ছোট মাটির পাত্রে পাখিদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা— উদ্যোগ হয়েছে নানা রকমের। স্কুলের পড়ুয়া মেহেরুন্নেসা খাতুন, রাহুল বেসরাদের কথায়, ‘‘আমরা নিজেরাই পরিচর্যা করি এ সবের।’’ স্কুলের সিঁড়িতে বীজগণিতের সূত্র, ইংরেজি ব্যাকরণের পাঠ, পাঁচিলে জ্যামিতির সূত্র, গাছ বাঁচানোর আহ্বান রয়েছে। পচনশীল ও পচনশীল নয় এমন বর্জ্য নিয়ম করে আলাদা রাখা হয়। পচনশীল বস্তু থেকে সার তৈরি করে বাগানের কাজে লাগান পড়ুয়া-শিক্ষকেরা।

প্রধান শিক্ষক সুবীরকুমার দে বলেন, ‘‘সবাই মিলে স্কুলে একটা সুন্দর পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে। রাজ্যের এই পুরস্কার আমাদের দায়িত্ব আরও বাড়িয়ে দিল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

School Award Environmental awareness
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE