Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

পুজোয় কাজ করার বিজ্ঞপ্তি বাতিল পার্থর

নির্দেশের বিরোধিতা করে সোমবার জেলা শিক্ষা দফতরে স্মারকলিপি জমা দিয়েছে শিক্ষক সংগঠন এবিটিএ। সংগঠনের আসানসোলের সম্পাদক প্রদীপ মণ্ডল বলেন, ‘‘আমরা এই বিজ্ঞপ্তি মানছি না। কোনও ভাবেই পুজোয় স্কুলে যাব না।’’

পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত

পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত

সুশান্ত বণিক
আসানসোল শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৬:২০
Share: Save:

সংখ্যালঘু পড়ুয়াদের জাতীয় বৃত্তি পেতে অনলাইনে আবেদনপত্র পূরণ করতে হবে। এর জন্য ২৫ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মাধ্যমিক স্তরের স্কুলগুলিতে বিশেষ শিবির খোলার বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে পশ্চিম বর্ধমান জেলা শিক্ষা দফতর। শিবিরগুলিতে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের উপস্থিত থাকার নির্দেশও জারি করা হয়েছে। পুজোর মধ্যে কাজ করার এই বিজ্ঞপ্তি ঘিরে ক্ষোভ দানা বেঁধেছে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের মধ্যে।

নির্দেশের বিরোধিতা করে সোমবার জেলা শিক্ষা দফতরে স্মারকলিপি জমা দিয়েছে শিক্ষক সংগঠন এবিটিএ। সংগঠনের আসানসোলের সম্পাদক প্রদীপ মণ্ডল বলেন, ‘‘আমরা এই বিজ্ঞপ্তি মানছি না। কোনও ভাবেই পুজোয় স্কুলে যাব না।’’ যদিও পশ্চিমবঙ্গ মাধ্যমিক তৃণমূল শিক্ষক সংগঠনের জেলা সভাপতি নিমাই মহন্ত বলেন, ‘‘শিক্ষকেরা সমাজের সহানুভূতিশীল ও সংবেদনশীল শ্রেণি। তাঁরা সরকারের এই সিদ্ধান্তকে সম্মান করবেন, এটাই আশা রাখি।’’

তবে ঘটনা হল, কিছু দিন আগে এমনই নির্দেশ জারি করে নিজের পদ খোয়াতে হয়েছে জলপাইগুড়ি প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান ধর্তিমোহন রায়কে। পরে নির্দেশটিও বাতিল হয়। এ বার পশ্চিম বর্ধমানেও এমন বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে শুনে ক্ষুব্ধ শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর মন্তব্য, ‘‘এটা না জানিয়ে করা হয়েছে। কোনও মতেই এটা করতে দেওয়া হবে না। এই বি়জ্ঞপ্তি বাতিল করতে বলছি।’’

রবিবার দুপুরে জেলা শিক্ষা দফতর ওই বিশেষ বিজ্ঞপ্তিটি জারি করেছে। তাতে জানানো হয়েছে, রাজ্যের সংখ্যালঘু পড়ুয়াদের জন্য জাতীয় বৃত্তির জন্য নাম নথিভূক্ত করতে। সেই জন্য পুজোর সময়ে স্কুলগুলিতে বিশেষ শিবির বসিয়ে সংখ্যালঘু পড়ুয়াদের অনলাইনে আবেদনপত্র পূরণ করাতে হবে। ২৫ থেকে ৩০ তারিখ পর্যন্ত বিশেষ শিবির খোলার ব্যবস্থা করা হয়েছে। শিবিরগুলিতে প্রধান শিক্ষক-সহ অন্য শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের উপস্থিত থাকার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। একাধিক স্কুলের প্রধান শিক্ষকরা জানিয়েছেন, এই নির্দেশিকা পালন করা সম্ভব নয়। কারণ, পুজোয় ছুটিতে অধিকাংশ শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী নানা পরিকল্পনা করে রেখেছেন। তাঁদের ক্ষোভ, এই সিদ্ধান্তের পরে রাতারাতি তাঁদের পুজো-পরিকল্পনা বদল করা কঠিন।

আসানসোলের অতিরিক্ত জেলা স্কুল পরিদর্শক অজয় পাল বলেন, ‘‘রবিবার এই বিজ্ঞপ্তি স্কুলের প্রধানদের জানিয়েছি। আমি মহকুমাশাসকের নির্দেশ পালন করেছি। এর বেশি কিছু বলার নেই।’’ যদিও অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) প্রলয় রায়চৌধুরী জানান, সরকারি নির্দেশ রয়েছে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে জেলার সব সংখ্যালঘু পড়ুয়াদের জাতীয় বৃত্তির জন্য অনলাইনে আবেদন পত্র পূরণ করে দিতে হবে। সেই নির্দেশ পালন করতেই জেলার স্কুলগুলিকে নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ‘‘অনলাইনে আবেদনপত্র পূরণের কাজ করার জন্য আমরা এজেন্সির উপরে ভার দিয়েছি। স্কুলের সব শিক্ষক বা শিক্ষাকর্মীদের থাকার তো প্রয়োজন নেই। এজেন্সির কর্মীদের বসার ব্যবস্থা ও সহায়তা করতে স্কুলের তরফে এক বা দু’জন শিক্ষাকর্মী উপস্থিত থাকলেই চলবে।’’

কিন্তু এই নির্দেশিকার ব্যাপারে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী কিছুই জানেন না। প্রলয়বাবু বলেন, ‘‘সরকারি নির্দেশই তো রয়েছে, ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এই কাজটি শেষ করে ফেলতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE