Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

লম্ফ থেকে আগুন, পুড়ে ছাই সাতটি বাড়ি

আগুন প্রথম লাগে জগনারায়ণ চৌধুরীর বাড়িতে। তিনি জানান, তাঁর বাড়িতে বিদ্যুতের লাইন নেই। স্ত্রী রেখাদেবী বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ লম্ফ জ্বালাতেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে।

ছাই হয়ে গিয়েছে ঘরবাড়ি। শুক্রবার। —নিজস্ব চিত্র।

ছাই হয়ে গিয়েছে ঘরবাড়ি। শুক্রবার। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
অন্ডাল শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০১৮ ০০:৫৬
Share: Save:

শ্রীরামপুর পঞ্চায়েতের শ্রীরামপুর রায়মানা। দামোদর নদের এই এলাকায় বৃহস্পতিবার রাতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে সাতটি বাড়ি। মৃত্যু হয়েছে গবাদি পশুর।

শুক্রবার বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ ওই এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, সাতটি পরিবারের সদস্যরা ভস্মীভূত বাড়ির সামনে বসে রয়েছেন। কখন সরকারি সাহায্য পৌঁছবে সেই আশায় রাস্তার দিকে তাকিয়ে রয়েছেন তাঁরা। কিছুক্ষণ একটি ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির সদস্য সীতা চৌধুরীকে অসুস্থ হয়ে পড়তে দেখা গেল। তা দেখে সঙ্গে সঙ্গে ছুটে এলেন প্রতিবেশীরা। তারপরে ব্লকের পাঠানো গাড়িতে তাঁকে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।

কী করে আগুন লাগল?

স্থানীয় সূত্রে খবর, আগুন প্রথম লাগে জগনারায়ণ চৌধুরীর বাড়িতে। তিনি জানান, তাঁর বাড়িতে বিদ্যুতের লাইন নেই। স্ত্রী রেখাদেবী বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ লম্ফ জ্বালাতেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে। রেখাদেবী দ্রুত বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসার মিনিট কয়েক পরেই বাড়িতে রাখা গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে যায়। তিরিশ ফুট দূরে গিয়ে পড়ে গ্যাস ওভেনটি। আর তাতেই বিপত্তি আরও বাড়ে। একে একে আরও কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরে যায়। আগুনের লেলিহান শিখার সামনে কার্যত বনে যান স্থানীয় বাসিন্দারা। প্রতিবেশীরা মিলে জল ঢেলে আগুন নেভাতে চাইলেও লাভ হয়নি। রানিগঞ্জ থেকে দমকলের একটি ইঞ্জিন আসার আগেই সাতটি বাড়ি পুড়ে ছাই হয়ে যায়। বাড়িতে রাখা সামগ্রী সব জ্বলে গিয়েছে।

সুখারি চৌধুরী জানান, তাঁর গোয়ালের একটি গরু, কিরপাল চৌধুরীর দু’টি ছাগল, ১০টি মুরগি, চকনারায়ণের একটি গরু পুড়ে মারা গিয়েছে। ২৪ হাজার টাকা, টিভি, ফ্যান, মোবাইল পুড়ে গিয়েছে সুখারিবাবুর। বাকি চার জনের আসবাব-সহ অধিকাংশ সামগ্রী পুড়ে গিয়েছে। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় অন্ডাল পঞ্চায়েত সমিতির পক্ষ থেকে খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। শুক্রবার দুপুর ১২টা নাগাদ পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ কাঞ্চন মিত্র, ব্লক অফিসের প্রতিনিধিদের ঘটনাস্থলে যান। তাঁরা ত্রিপল, রান্নার সরঞ্জাম, আনাজ দিয়ে আসেন। দুর্গাপুরের মহকুমাশাসক শঙ্খ সাঁতরা জানান, প্রত্যেক ক্ষতিগ্রস্তদের আলাদা করে ক্ষতির তালিকা পাঠানো হবে বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরে। সেখান থেকে অনুমোদন মিললে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।

কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, এই মানায় বসবাস করা তো যায় না? তা হলে দীর্ঘদিন ধরে লোকজন থাকছেন কী করে? স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিযেচে, এলাকাটি নদের ধারে হওয়ায় জলের সমস্যা হয় না। ফলে চরের পাশের এলাকা চাষের জন্য খুব উপযুক্ত। চাষবাসের সূত্র ধরে পুরুষের পর পুরুষ ধরে এই এলাকায় বাস করছেন তাঁরা। বন্যার আগে তাঁরা চরের পাশ থেকে সরে যান। বিপদ কেটে গেলে ফের ফিরে আসেন।

প্রশাসনই বা ব্যবস্থা নিচ্ছে না? মহকুমাশাসক জানিয়েছেন, এখানে থাকার কোনও নিয়ম নেই। সামাজিক একটা প্রভাব কাজ করে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

houses Burnt
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE