তৃণমূলের সভা। নিজস্ব চিত্র
শিয়রে পঞ্চায়েত ভোট। তার প্রস্তুতিতে যাতে কোনও ফাঁক না থাকে, সেই বার্তা দিতে রবিবার পূর্ব বর্ধমান জেলার সব এলাকার নেতাদের নিয়ে বৈঠক করলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। বর্ধমানের দু’টি মহকুমার নেতাদের নিয়ে বৈঠক হয় শহরের সংস্কৃতি লোকমঞ্চে। কালনা ও কাটোয়ার বৈঠকটি হয় পূর্বস্থলী ১ ব্লকের নজরুল মঞ্চে। দুই বৈঠকেই নেতারা গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বন্ধের নির্দেশ দেন।
বর্ধমানের সভায় দলের জেলা সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, “দলীয় স্তরে অনুমতি ছাড়া এখন থেকে আর কোনও রাজনৈতিক অনুষ্ঠান করা যাবে না। কেউ বিচ্ছিন্ন ভাবে সভা-মিছিল করলে দল তা অনুমোদন করবে না। প্রয়োজনে প্রশাসনকে বিষয়টি দেখতে বলা হবে।”
তৃণমূল সূত্রের খবর, দুর্গাপুরে পুরবোর্ড গঠনের দিনই দলের জেলা পর্যবেক্ষক অরূপ বিশ্বাস এ বার পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে মাঠে নামার নির্দেশ দেন নেতাদের। জেলা সাধারণ সম্পাদক উত্তম সেনগুপ্তকে ২১৫টি পঞ্চায়েতের সদস্য, ২৩টি পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যদের মধ্যে প্রাথমিক বাছাই তালিকা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। সে প্রসঙ্গ তুলেই এ দিন স্বপনবাবু বলেন, “এক বার দলের প্রার্থী হয়ে জিতেছি মানে আজীবন প্রার্থী হওয়া যাবে, এই ধারণা বদলাতে হবে। রাজ্য স্তরের কোর কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, দলের আনুগত্য ও স্বচ্ছতা রয়েছে, এমন সদস্যদেরই প্রার্থী করা হবে।” বর্ধমানের পুরপ্রধান স্বরূপ দত্তও বলেন, “নিচু স্তরে গিয়ে মানুষের কথা শুনে আমাদের এগোতে হবে।”
তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, এ দিন সভায় নেতারা কিছু প্রধান অনিয়ম করছেন দাবি করায় অনেকে প্রতিবাদ করে ওঠেন। এ ছাড়া আত্মসমালোচনার সুরও শোনা গিয়েছে অনেক নেতার মুখে। বর্ধমানের সভায় তৃণমূল নেতা আবু আয়েশ মণ্ডল দাবি করেন, অনেক নেতা এমন কাজকর্ম করেছেন যে মানুষ ভয় পান। পূর্বস্থলীর সভায় দলের কালনা ২ ব্লক সভাপতি প্রণব রায় বলেন, ‘‘অনেকে ভাবছেন, আমিই শেষ কথা। তাঁরা ঠিক ভাবছেন না।’’ কালনার বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডু দাবি করেন, বুথভিত্তিক সংগঠন তৈরিতে এক সময়ে সিপিএমের সুনাম ছিল। পঞ্চায়েত ভোটের আগে দলকে সে ভাবে সংগঠন তৈরি করতে হবে।
দু’টি সভায় এ দিন যাঁরা যোগ দেননি তাঁদের তালিকা দলীয় পর্যবেক্ষকের কাছে পাঠানো হবে বলে জানান স্বপনবাবু। প্রধানদের উদ্দেশে জেলা সভাধিপতি দেবু টুডু বলেন, “বাড়ি বা পঞ্চায়েতে বসে নয়, এখন থেকে প্রতিদিন একটি করে বুথে যেতে হবে আপনাদের। আমরাও সেখানে হাজির থাকব। চলার পথে আমাদের কোনও ভুল হয়ে থাকলে, ক্ষমা চেয়ে নিন।” তাঁর সংযোজন, “অস্বচ্ছ কোনও ব্যক্তিকে দল প্রার্থী করবে না।”
জেলা সিপিএমের এক নেতার টিপ্পনী, “তৃণমূলে আবার স্বচ্ছ কেউ আছে না কি!”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy