Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

চালক পড়ে গিয়েছেন শুনে আতঙ্ক

সোমবার সকাল সওয়া ১১টা নাগাদ দাঁইহাট ও কাটোয়ার মাঝে নসিপুর এলাকায় হাওড়া-কাটোয়া লোকাল থেকে পড়ে যান চালক ইলাবন্ত হালদার। হাসপাতালে দাঁড়িয়ে স্থানীয় বাসিন্দা উত্তম মালাকার, সঞ্জিতকুমার দাসেরা জানান, আচমকা কয়েকজন শিশু-কিশোর ‘পড়ে গেল, পড়ে গেল’ বলে চিৎকার করে।

নসিপুরে তখন আটকে রয়েছে ট্রেন। সোমবার। নিজস্ব চিত্র

নসিপুরে তখন আটকে রয়েছে ট্রেন। সোমবার। নিজস্ব চিত্র

সুচন্দ্রা দে
কাটোয়া শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০১৭ ০০:০৮
Share: Save:

কেউ কলকাতার পুজো দেখতে গিয়েছিলেন। সোমবার বাড়ি ফিরছিলেন। কেউ নিত্যদিনের মতো ব্যবসার কাজে কাটোয়ায় আসছিলেন। কিন্তু চলন্ত ট্রেন থেকে চালক ছিটকে পড়ে জখম হওয়ার জেরে ঘণ্টা দেড়েক আটকে থেকে দুর্ভোগে পড়লেন তাঁরা। পরে অন্য চালক এসে ট্রেন গন্তব্যে নিয়ে গেলেও বাড়ি বা কর্মস্থলে পৌঁছতে দেরি হয়ে যায় যাত্রীদের।

সোমবার সকাল সওয়া ১১টা নাগাদ দাঁইহাট ও কাটোয়ার মাঝে নসিপুর এলাকায় হাওড়া-কাটোয়া লোকাল থেকে পড়ে যান চালক ইলাবন্ত হালদার। হাসপাতালে দাঁড়িয়ে স্থানীয় বাসিন্দা উত্তম মালাকার, সঞ্জিতকুমার দাসেরা জানান, আচমকা কয়েকজন শিশু-কিশোর ‘পড়ে গেল, পড়ে গেল’ বলে চিৎকার করে। তা শুনতে পেয়ে অনেকে ছুটে যান। দেখা য়ায়, এক জন মুখ থুবড়ে পড়ে রয়েছেন। দেহের অর্ধেক রেললাইনের পাথরের উপরে ও বাকি অংশ ঝোপের মধ্যে রয়েছে। সংজ্ঞা নেই।

এরই মধ্যে ট্রেন থেমে যায়। নেমে আসেন গার্ড বরিষ্ঠ রাম। জানা যায়, আহত ব্যক্তি ট্রেনের চালক ইলাবন্ত হালদার। তার পরেই ইলাবন্তবাবুকে ধরাধরি করে প্রথমে রেলগেটের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে টোটোয় চাপিয়ে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরে দ্রুত চিকিৎসা শুরুর জন্য ওষুধ কেনা-সহ নানা ব্যবস্থায় নেমে পড়তে দেখা যায় এলাকার মানুষজনকেও।

রেল সূত্রে জানা যায়, ‘নচ’ (ট্রেন চালানোর সময়ে যে যন্ত্র ধরে থাকেন চালকেরা) থেকে চালকের হাত সরে গেলে খানিক দূর গড়িয়ে ট্রেন থেমে যায়। এ দিনও তেমনই হয়েছে। কী ঘটেছে দেখতে ট্রেন থেকে নেমে বাইরে ভিড় জমান যাত্রীরা। পাটুলি থেকে মায়ের চিকিৎসা করাতে কাটোয়ায় আসছিলেন ইলা বন্দোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘কাটোয়ার একদম কাছে এসেও পৌঁছতে দেড় ঘণ্টা দেরি হয়ে গেল। এখন পৌঁছে আর চিকিৎসককেও পাব না।’’

আচমকা ট্রেন দাঁড়িয়ে পড়ায় আতঙ্কও ছড়ায় যাত্রীদের মধ্যে। কলকাতায় পুজো কাটিয়ে বাড়ি ফেরা এক কিশোরের কথায়, ‘‘সময়ে বাড়ি ফিরতে পারলাম না। তবে বড় দুর্ঘটনা ঘটেনি, এটাই স্বস্তি।’’ যাত্রী সুশান্ত পোড়েল, রুবি মাঝিদের কথায়, ‘‘চালক পড়ে গিয়েছেন শুনে খুব ভয় হয়েছিল! ট্রেন নিয়ন্ত্রণ হারালে বা অন্য কোনও ট্রেন এসে পড়লে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত।’’ যদিও এ ক্ষেত্রে তেমন পরিস্থিতি ছিল না বলে রেল সূত্রের দাবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE