Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

গোষ্ঠীদ্বন্দ্বেই খুন, দাবি স্ত্রীর

স্থানীয় বিধায়ক সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী অবশ্য এই খুনে কোনও রাজনীতি দেখছেন না। তাঁর দাবি, ‘‘সিআইডি তদন্তের জন্য পুলিশ সুপারকে জানিয়েছি। তদন্ত হলেই দুধ কা দুধ, পানি কা পানি হয়ে যাবে।’’ মঙ্গলকোট, কেতুগ্রাম, আউশগ্রামের তৃণমূল পর্যবেক্ষক কথা বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল আবার গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা উড়িয়ে দিচ্ছেন না।

শোকার্ত পরিবার।— ফাইল চিত্র।

শোকার্ত পরিবার।— ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাটোয়া শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০১৭ ০০:৪৭
Share: Save:

পঞ্চায়েত সদস্য খুনের ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই নিহতের স্ত্রী দাবি করলেন, তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বেই প্রাণ গিয়েছে স্বামীর। যদিও রাত পর্যন্ত কারও নামে অভিযোগ হয়নি। পুলিশ জানিয়েছে, নিগন ও শিমুলিয়ায় নজরদারি চলছে। কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। অভিযোগ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

স্থানীয় বিধায়ক সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী অবশ্য এই খুনে কোনও রাজনীতি দেখছেন না। তাঁর দাবি, ‘‘সিআইডি তদন্তের জন্য পুলিশ সুপারকে জানিয়েছি। তদন্ত হলেই দুধ কা দুধ, পানি কা পানি হয়ে যাবে।’’ মঙ্গলকোট, কেতুগ্রাম, আউশগ্রামের তৃণমূল পর্যবেক্ষক কথা বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল আবার গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা উড়িয়ে দিচ্ছেন না। তিনি মঙ্গলবার বলেন, ‘‘মঙ্গলকোটে অনেক কষ্ট করে সংগঠন তৈরি করতে হয়েছে। কাউকে সস্তায় রাজনীতি করতে দেব না। আমার দলের অঞ্চল সভাপতি খুন হয়েছেন, তাতে যদি দলের কেউ জড়িত থাকে, পুলিশ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিক।’’

সোমবার সন্ধ্যায় মঙ্গলকোটের নিগন বাসস্ট্যান্ডের কাছে গুলিতে খুন হন শিমুলিয়া ১ পঞ্চায়েতের সদস্য তথা তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি সানাউল্লা শেখ ওরফে ডালিম। রাস্তার ধারে একটি মাছের আড়তে বসেছিলেন তিনি। উল্টো দিকের চায়ে দোকানে বসা মঙ্গলকোট পঞ্চায়েত সমিতির জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ মেহবুব চৌধুরী ও কয়েকজন কর্মী দাবি করেছিলেন, তাঁরা গুলির শুনে ছুটে এসে দেখেন হামলাকারীরা পালিয়ে গিয়েছে। মাথায় দুটি গুলি লাগা অবস্থায় রক্তাক্ত পড়ে রয়েছেন সানাউল্লা।

এ দিন তিন মেয়েকে পাশে নিয়ে স্ত্রী লাভলি বিবি বলেন, ‘‘আমার স্বামী ব্লক সভাপতির (অপূর্ব চৌধুরী) গোষ্ঠী করতেন বলে ছ’মাস আগে আমায় বিধবা করার হুমকি দেওয়া হয়েছি। হলও তাই।’’ সানাউল্লার বড় মেয়ে বোলপুরে একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। লাভলি বেগমের অভিযোগ, বড় মেয়ে নাফিউন্নেসা খাতুনের পড়াশোনা বন্ধ করে দেওয়ারও হুমকি দিত বিধায়ক অনুগামী বেশ কিছু দুষ্কৃতী। নিহতের আত্মীয়, পড়শিদেরও দাবি, গত নভেম্বরে নিগনে নোট বাতিলের প্রতিবাদ সভায় কিংবা দলের সম্প্রীতি সভায় ব্লক সভাপতি অপূর্ব চৌধুরীকে মঞ্চে উঠতে দেননি বিধায়ক অনুগামীরা। এর প্রতিবাদে বিধায়ক অনুগামীদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন সানাউল্লা। এ ছাড়াও শিমুলিয়ায় বিধায়ক অনুগামী হিসাবে পরিচিত সাজিদ শেখ গত বিধানসভা ভোটের আগেও ডালিমের ছায়াসঙ্গী ছিলেন। কিন্তু পরে নানা কারণে তাঁর সঙ্গে মতানৈক্য ঘটে বলেও দলের একাংশের দাবি।

তবে আর এক অংশ বলছেন, সম্পত্তি নিয়ে পারিবারিক বিবাদেই এই খুন। আত্মীয়দের সঙ্গে গোলমাল চলছিল বলেও তাঁদের দাবি।

এ দিন ব্লক সভাপতি অপূর্ব চৌধুরী ফের দাবি করেন, ‘‘ঘটনাটি রাজনৈতিক।’’ আর ডালিম শেখের স্ত্রীয়ের অভিযোগ প্রসঙ্গে বিধায়কের দাবি, ‘‘ওঁকে কেউ বিভ্রান্ত করছে। তিন মেয়ের পড়াশোনায় সাহায্য লাগলে পাশে আছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE