Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

কাটোয়ায় কংগ্রেসকে টক্কর দিতে তৃণমূলের তিন মূর্তি

কংগ্রেসের গড়ে আঘাত হানতে প্রার্থীদের নাম ঘোষণার পর থেকেই কাটোয়া-দাঁইহাটে পড়েছিলেন তৃণমূলের তিন মূর্তি। সকালে মিছিল, বিকেলে পাড়ায় পাড়ায় সভা, মাঝে সময় পেলেই বাড়ি বাড়ি ঘুরে প্রচার করে কাটোয়াতে ‘পরিবর্তন’ আনতে একরকম বদ্ধপরিকর ছিলেন তাঁরা। তবে চেনা জমির একটুকরোও বিনা যুদ্ধে ছেড়ে দিতে রাজি নয় কংগ্রেস। বিধায়ক তথা চার বারের কাউন্সিলর রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তারাও টানা মিছিল, পথসভায় প্রচার চালিয়ে গিয়েছে কাটোয়ায়।

ভোটের প্রস্তুতি। কালনায় চলছে ইভিএম পরীক্ষা।

ভোটের প্রস্তুতি। কালনায় চলছে ইভিএম পরীক্ষা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাটোয়া শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০১৫ ০১:০৭
Share: Save:

কংগ্রেসের গড়ে আঘাত হানতে প্রার্থীদের নাম ঘোষণার পর থেকেই কাটোয়া-দাঁইহাটে পড়েছিলেন তৃণমূলের তিন মূর্তি। সকালে মিছিল, বিকেলে পাড়ায় পাড়ায় সভা, মাঝে সময় পেলেই বাড়ি বাড়ি ঘুরে প্রচার করে কাটোয়াতে ‘পরিবর্তন’ আনতে একরকম বদ্ধপরিকর ছিলেন তাঁরা। তবে চেনা জমির একটুকরোও বিনা যুদ্ধে ছেড়ে দিতে রাজি নয় কংগ্রেস। বিধায়ক তথা চার বারের কাউন্সিলর রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তারাও টানা মিছিল, পথসভায় প্রচার চালিয়ে গিয়েছে কাটোয়ায়।

১৯৯৫ সালে বামফ্রন্টের হাত থেকে কাটোয়া পুরসভা ছিনিয়ে পুরপ্রধান হন রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়। সেই শুরু। পরের বছর কাটোয়া বিধানসভাতেও সিপিএম প্রার্থীকে হারিয়ে জয়ী হন তিনি। ১৯৯৮ সালে তৃণমূল গঠন হয়। তৎকালীন কাটোয়া পুরসভার কাউন্সিলর কাঞ্চন মুখোপাধ্যায়, মণ্ডল আজিজুলরা কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন। রবীন্দ্রনাথবাবু থেকে যান কংগ্রেসেই। তারপর গত কয়েক বছরে সারা রাজ্যে একের পর এক ভোটে তৃণমূল-ঝড় উঠলেও কাটোয়ায় সে হাওয়া লাগেনি। বরং কাটোয়ার পাশাপাশি দাঁইহাটেও প্রতিটি নির্বাচনে জায়গা করে নিয়েছে কংগ্রেস। সম্প্রতি কাটোয়া কলেজের ছাত্র সংসদ নির্বাচনেও ছাত্র পরিষদ সব আসনে জিতেছে।

কাটোয়ায় তল্পিতল্পা নিয়ে বুথের পথে পুলিশকর্মীরা।

এই পরিস্থিতিতে এ বারের কাটোয়ায় পুরভোটের ময়দানে নেমেছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ, কাটোয়ার সাংসদ সুনীল দেবনাথ। অন্য দিকে দাঁইহাটে মন্ত্রী ও সাংসদের সঙ্গে দৌড়েছেন পূর্বস্থলী দক্ষিণের বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায়। এই তিন জনের সঙ্গে মাঝেমধ্যে সঙ্গত করেছেন পাশের কেতুগ্রামের বিধায়ক শেখ সাহানেওয়াজ। কাটোয়া ও দাঁইহাটে ‘পরিবর্তনে’র আওয়াজ তুলেছেন তাঁরা। এমনকী বৃহস্পতিবার নজরুল মঞ্চে সভা করতে এসে অভিনেতা ও তৃণমূল যুব কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি হিরণ চট্টোপাধ্যায়ও বলেন, “সারা রাজ্যে পরিবর্তন হলেও কাটোয়াতে পরিবর্তন হয়নি। এ বার আপনারা কাটোয়াতে পরিবর্তন নিয়ে আসুন।” কাটোয়ার তৃণমূল সাংসদ সুনীল মণ্ডলের দাবি, ‘পরিবর্তন আনার জন্য তিনি কাটোয়াতে ১৫-১৬ দিন ধরে পড়েছিলেন। আর স্বপন দেবনাথ কাটোয়াতে সকাল বেলা তৃণমূলপন্থী বিশিষ্টজনদের সঙ্গে মিছিল করছেন তো বিকালে পাড়ায় পাড়ায় সভা করেছেন। তিনি বলেন, “মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার আগে বা পরে বেশ কয়েকবার কাটোয়াতে গিয়ে বৈঠক করেছি। প্রচার শুরু হওয়ার পর দু’এক দিন অন্তর কাটোয়াতে গিয়েছি। এখন সবটাই কাটোয়ার মানুষের উপর নির্ভর করছে।” তৃণমূলের কাটোয়া শহরের সভাপতি অমর রামেরও দাবি, “মন্ত্রী-সাংসদ-বিধায়করা কাটোয়াতে নজর দেওয়ায় দলের কর্মীরা উজ্জীবীত হয়েছেন। শহরের মানুষ পুরসভা কী কী ত্রুটি করছে সেটা বুঝতে পেরেছেন।’’ বর্ধমান জেলা তৃণমূলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক মণ্ডল আজিজুলও বলেন, “কাটোয়ার আশে পাশে সব এলাকায় তৃণমূলের। আবার ২০ বছর ধরে পুরসভায় কংগ্রেস থাকার ফলে নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে। এই দুই কারণে এ বারের পুরভোটের পরিস্থিতি অন্য বারের চেয়ে আলাদা। তার উপর মন্ত্রী-সাংসদ-বিধায়কদের উপস্থিতি অনুঘটকের কাজ করেছে।”

কিন্তু যাঁকে হারানোর জন্য তৃণমূলের এই ‘লড়াই’, তিনি কী বলছেন? রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “মানুষের আশীর্বাদ নিয়ে পুরসভায় ছিলাম। আশা করি, এ বারও মানুষের আশীর্বাদ নিয়ে কাটোয়া পুরসভায় কংগ্রেস জয়লাভ করবে।”

—নিজস্ব চিত্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE