Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা

গলিত ধাতব ছিটকে জখম ৩

ফের দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানায় গলিত ধাতব ছিটকে জখম হলেন তিন কর্মী। মাসখানেকের মধ্যে এ নিয়ে দ্বিতীয় বার এমন ঘটনা ঘটায় প্রশ্ন উঠে গিয়েছে কারখানার নিরাপত্তা নিয়েই। কারখানা কর্তৃপক্ষ যদিও আশ্বাস দিয়েছেন দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০১৫ ০১:৪৮
Share: Save:

ফের দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানায় গলিত ধাতব ছিটকে জখম হলেন তিন কর্মী। মাসখানেকের মধ্যে এ নিয়ে দ্বিতীয় বার এমন ঘটনা ঘটায় প্রশ্ন উঠে গিয়েছে কারখানার নিরাপত্তা নিয়েই। কারখানা কর্তৃপক্ষ যদিও আশ্বাস দিয়েছেন দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

শুক্রবার দুপুরে ওই রাষ্ট্রায়ত্ত কারখানার ‘বেসিক অক্সিজেন ফার্নেস’-এর ‘কনটিনিউয়াস কাস্টিং প্ল্যান্টের’ গলিত ধাতব ছিটকে দগ্ধ হন দেবাশিস ভট্টাচার্য, অমিত কুমার এবং কামোদকুমার রাম নামে তিন কর্মী। তিনজনকেই ডিএসপি হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। ডিএসপি সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন ল্যাডল ফার্নেস থেকে রাউন্ড ব্লুম কাস্টারে গলিত ধাতব পদার্থ ভর্তি উত্তপ্ত ল্যাডল সরানোর কাজ চলছিল। ক্রেন চালাচ্ছিলেন দেবাশিসবাবু। আচমকা ক্রেনটি নীচে নামতে থাকে। দেবাশিসবাবু চেষ্টা করেও তা থামাতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত তিনি ক্রেনটি তুলনায় ফাঁকা জায়গায় নিয়ে যেতে পারলেও গলিত ধাতব পদার্থ ল্যাডল থেকে ছিটকে পড়ে। তিনি এবং আরও দু’জন জখম হন।

দেবাশিসবাবু ও অমিতবাবু সিনিয়র টেকনিশিয়ান হিসাবে এই কারখানায় কর্মরত। এ দিন দুর্ঘটনার পরে বারবার কেন এমন ঘটছে দাবিতে সরব হয়েছে কর্মী সংগঠনগুলিও। সিটু নেতা সৌরভ দত্তের অভিযোগ, ‘‘বারবার দুর্ঘটনায় কর্তৃপক্ষের নিরাপত্তা নিয়ে গাফিলতিই প্রকট হচ্ছে।’’ আইএনটিইউসি নেতা দেবাশিস চৌধুরীও বলেন, ‘‘লাগাতার দুর্ঘটনা ঘটছে। প্রাণহানি হচ্ছে। সেল চেয়ারম্যান নিজে ছুটে এসেছেন। অথচ ডিএসপির পরিস্থিতি বদলাচ্ছে না।’’

মাসখানেক আগেও ওই প্ল্যান্টে কাজ করার সময় গলিত ধাতু ছিটকে জখম হয়েছিলেন তিন কর্মী। তাঁদের বিধাননগরের এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সপ্তাহ খানেকের মধ্যে তিন জনই মারা যান। দুর্ঘটনার খবর শুনে সেলের চেয়ারম্যান সিএস ভার্মা নিজে এসেছিলেন দুর্গাপুরে। দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখতে তদন্তে কমিটি গড়েছিল ডিএসপি কর্তৃপক্ষ। সেই কমিটি বাতিল করে অন্য ইস্পাত কারখানা থেকে আধিকারিকদের নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠনের দাবিও করে শ্রমিক সংগঠনগুলি। সেল চেয়ারম্যান সে দাবি মেনে ডিএসপি’র কমিটি ভেঙে নতুন উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গড়ে দেন। সেই কমিটি শুধু দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখছে না, কিভাবে এই ধরণের দুর্ঘটনা রোধ করা যায় তাও দেখছে। তার মধ্যেই জুন মাসের গোড়ায় প্রায় একই জায়গায় কাজ করার সময় হোস পাইপ থেকে তপ্ত জল বেরিয়ে দগ্ধ হন এক সিনিয়র টেকনিশিয়ান। শুক্রবারও একই বিভাগে ফের দুর্ঘটনা ঘটে জখম হলেন তিনজন। শ্রমিকদের আশঙ্কা, এ রকম ঘটতে থাকলে প্রাণ হাতে নিয়ে প্রতিদিন কাজে আসতে হবে তাঁদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Durgapur iron factory DSP hospital
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE