বাবার জন্য রাস্তার ধারে অপেক্ষা করছিল দুই ভাই-বোন। কিন্তু বাবার মোটরবাইক কাছে আসা মাত্রই বিপত্তি। মুহূর্তের মধ্যে পিছন থেকে আসা এক বেপরোয়া গাড়ি ধাক্কা মারল ওই মোটরবাইককে। পিষে দিল খুদেকেও। রবিবার দুপুরে ২ নম্বর জাতীয় সড়কে কাঁকসার বিরুডিহার কাছে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল বাবা ও দুই সন্তানের।
পুলিশ জানায়, মৃতদের নাম, শ্যাম থাপা (৪০), জিমি থাপা (৮) ও আদি থাপা (৩)। বাড়ি, পানাগড় গ্রামের ডাঙাপাড়ায়। পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, এ দিন সকালে এক আত্মীয়ের বাড়িতে দুই সন্তানকে রেখে রাজবাঁধে এক জায়গায় নির্মাণকাজে গিয়েছিলেন পেশায় মাটিকাটার যন্ত্রের ‘অপারেটর’ শ্যাম। বাবা বাড়ি নিয়ে যাবে, দুপুর ১২টা নাগাদ এই জন্য বিরুডিহা বাসস্ট্যান্ডের কাছে অপেক্ষা করছিল জিমি ও আদি। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, অদূরে বাবার মোটরবাইক দেখতে পেয়ে খুশিতে লাফিয়ে ওঠে দুই শিশু।
কিন্তু মুহূর্তের মধ্যেই বিপত্তি ঘটে যায়। বর্ধমানগামী একটি বেপরোয়া গাড়ি ধাক্কা মারে মোটরবাইকটিকে। রাস্তায় ছিটকে পড়েন শ্যাম। এর পরে গাড়়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে জিমি ও আদিকেও পিষে দিয়ে চম্পট দেয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। তিন জনকেই রাজবাঁধের একটি বেসরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে জিমি ও আদিকে মৃত বলে জানান চিকিৎসকেরা। ঘণ্টাখানেক বাদে সেখানেই মৃত্যু হয় শ্যামেরও। দেহ তিনটিই ময়না-তদন্তের জন্য দুর্গাপুর মহকুমা হাসাপাতালে পাঠানো হয়।
এই ঘটনার খবর চাউর হতেই জাতীয় সড়কে যানবাহনের বেপরোয়া গতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বাসিন্দাদের একাংশ। তাঁদের ক্ষোভ, যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণ করতে স্পিড-গান বসানো, ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ কর্মসূচি নিয়ে একাধিকবার পথে নামতে দেখা গিয়েছে পুলিশ-প্রশাসনকে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি বলে অভিযোগ। এমনকী, এই স্ট্যান্ডের কাছে সাম্প্রতিক অতীতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস ওল্টানোর মতো ঘটনাও ঘটে। তার পরেও ওই এলাকায় ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণে কোনও সিভিক ভলান্টিয়ার বা পুলিশ মোতায়েন করা হয়নি।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (পূর্ব) অভিষেক মোদী। তিনি বলেন, ‘‘কেন ঘটল এমন দুর্ঘটনা, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy