Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
শ্রীনু-খুন

হুমকি ফোন, কাটোয়া থেকে ধৃত দুই পড়ুয়া

শ্রীনু খুনের মামলায় সরকারি আইনজীবীর কাছে হুমকি ফোন আসার ঘটনায় দু’জন কলেজ পড়ুয়াকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃত ইন্দ্রজিৎ বেরা ও শেখ হাদিউজ্জামান বর্ধমানের কাটোয়ার এক পলিটেকনিক কলেজের পড়ুয়া।

শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০১৭ ০১:১১
Share: Save:

শ্রীনু খুনের মামলায় সরকারি আইনজীবীর কাছে হুমকি ফোন আসার ঘটনায় দু’জন কলেজ পড়ুয়াকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃত ইন্দ্রজিৎ বেরা ও শেখ হাদিউজ্জামান বর্ধমানের কাটোয়ার এক পলিটেকনিক কলেজের পড়ুয়া। মঙ্গলবার রাতে কাটোয়ার হস্টেল থেকে তাঁদের দু’জনকে ধরা হয়। পুলিশের এক সূত্রে খবর, ঘটনার পিছনে আরও এক জন যুক্ত। তার নির্দেশ মতোই ওই হুমকি ফোন করা হয়েছিল। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ওই অভিযুক্তের নাম-পরিচয় জানতে পেরেছে পুলিশ। তার খোঁজখবরও শুরু হয়েছে।

ধৃত দু’জনের হস্টেলের ঘরে থাকা বাকি তিন ছাত্রের দাবি, তাঁরা হাদিউজ্জামানকে ফোনে ভয়ে দেখাতে, হুমকি দিতে শুনেছেন। ধৃতদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন ও সিমকার্ড বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। ওই ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের অধ্যক্ষ স্বপন ঘোষাল বলেন, ‘‘ওই দুই ছাত্রের বাড়িতে পুরো ঘটনার কথা জানানো হয়েছে। দু’জনকে কলেজে রাখা হবে কি না তা নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’ বুধবার ধৃতদের মেদিনীপুর সিজেএম আদালতে তোলা হলে দু’জনেরই চারদিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে খবর, পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ার বাসিন্দা ইন্দ্রজিৎ ‘ইনফর্মেশন টেকনোলজি’র তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। কম্পিউটার সায়েন্সের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র হাদিউজ্জামানের বাড়ি দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার ফ্রেজারগঞ্জে। তাঁরা দু’জনেই কাটোয়া-বর্ধমান রাস্তার পাশে সিপাইদিঘির কাছে বিআইটি মোড়ে একটি হস্টেলে থাকত। এই হস্টেলটি কলেজের নিজস্ব নয়, একটি সংস্থাকে লিজে দেওয়া। ইন্দ্রজিৎ, হাদিউজ্জামানদের সঙ্গে হস্টেলে একই ঘরে থাকতেন বসিরহাটের বাসিন্দা সাইনুর রহমান। তাঁর দাবি, ইন্দ্রজিতের কাছে মোবাইলের একাধিক সিম ছিল। তারই একটা সিম মোবাইলে লাগিয়ে হাদিউজ্জামান ফোন করত। খড়্গপুরের মহাদেব নামে এক বন্ধু হাদিউজ্জামানকে হুমকি দেওয়ার কথা বলত বলেও সাইনুরের দাবি।

ধৃতদের সঙ্গে একই ঘরে থাকা পড়ুয়াদের আরও দাবি, এ সব করতে হাদিউজ্জামানকে নিষেধ করলে সে বলত, ‘সাইবার ক্রাইম এত উন্নত হয়নি যে অত দূর থেকে আমাকে ধরে ফেলবে’। তবে তারা কাকে ফোন করত, সে বিষয়ে কিছু বলতে পারেননি ধৃতদের সহপাঠীরা। মহাদেবের সম্বন্ধেও কিছু বলতে পারেননি তাঁরা।

গত ১১ জানুয়ারি খড়্গপুরের নিউ সেটেলমেন্টে তৃণমূলের কার্যালয়েই আততায়ীদের গুলিতে খুন হয় ‘ডন’ শ্রীনু নায়ডু। সেই খুনের মামলার সরকারি আইনজীবী সৈয়দ নাজিম হাবিব অভিযোগ করেন, তাঁর স্ত্রীর মোবাইলে গত রবিবার রাতে ফোন করে কেউ বলে, ‘শ্রীনু খুনে ধৃতদের বিরুদ্ধে সওয়াল করলে ফল ভাল হবে না। এই ফোনের কথা পুলিশকে জানালে ‘ফল আরও খারাপ হবে’ বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। পরে ফোন কেটে দেন স্ত্রী। পরদিন সোমবার বিকেলে ফের তাঁর স্ত্রীর মোবাইলে ফোন করে হুমকি দেওয়া হয়। রবিবার রাতে কেন তিনি ফোন কেটে দিয়েছিলেন, সেই কৈফিয়তও চাওয়া হয়। রবিবার রাতের ঘটনার পরই মেদিনীপুর কোতয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন সরকারি আইনজীবী। সোমবার থেকে ওই আইনজীবীকে নিরাপত্তারক্ষীও দেওয়া হয়।

ঘটনার দ্রুত কিনারার দাবি জানায় পশ্চিম মেদিনীপুরের ডিস্ট্রিক্ট বার অ্যাসোসিয়েশন। অভিযুক্তরা গ্রেফতার না-হলে সাত দিন শ্রীনু হত্যা মামলার অভিযুক্তদের হয়ে কোনও আইনজীবী সওয়াল করবেন না বলেও গত সোমবার সিদ্ধান্ত নেয় বার অ্যাসোসিয়েশন। ঘটনায় দু’জন ধরা পড়ার পর এ দিন অবশ্য বার ওই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নিয়েছে। বুধবার অভিযুক্তদের হয়ে সওয়াল করেছেন আইনজীবীরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Two Students Arrest Srinu Naidu
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE