দেবীর মন্দির। নিজস্ব চিত্র
শীতেও বাজছে আগমনী গান। মাঘ মাসের শুক্লা নবমীতে বর্ধমানের আমুল ও গৌড়ডাঙা গ্রামে দুর্গা রূপে পুজো হয় দেয়াসিন চণ্ডী ও গৌরী চণ্ডীর।
এলাকাবাসীর দাবি, ১১০৭ বঙ্গাব্দ থেকে চলে আসছে এই পুজো। কথিত রয়েছে, কালাপাহাড়ের আক্রমণে দেবীমূর্তী দ্বিখণ্ডিত হয়ে গিয়েছিল। এখন দেবীর ঊর্ধ্বাঙ্গ অর্থাৎ মস্তক ও ধ়ড় গৌরীচণ্ডী নামে গৌড়ডাঙা গ্রামে এবং কোমর থেকে পা পর্যন্ত অংশ দেয়াসিন চণ্ডী নামে তিন কিলোমিটার দক্ষিণে আমুল গ্রামে রয়েছে।
প্রতি বছর সরস্বতী পুজোর চার দিন পরে এই পুজো শুরু হয়। এ বার আজ, শুক্রবার শুরু হচ্ছে দেবীর আরাধনা। দু’টি গ্রামে একই দিনে একই তিথিতে পুজো হয়। ঘটা করে তিন দিন পুজো হলেও সারা বছর দু’বেলা নিত্যপুজো হয়। জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সমস্ত গ্রামবাসী পুজোয় যোগ দেন। আশপাশের গ্রাম থেকেও বহু লোক ভিড় জমান। পুজো পরিচালনার দায়িত্বে আছেন প্রগতিশীল যুবগোষ্ঠী ও সব্যসাচী ক্লাবের সদস্যেরা। দু’টি পুজোতেই তিন দিন ধরে মেলা, যাত্রা ও সঙ্গীতানুষ্ঠান হয়।
কথিত আছে, আমূলের আমুল গ্রামের নিধিরাম চক্রবর্তী নামে এক ব্যক্তি স্বপ্নাদেশ পেয়ে পাশের খাল থেকে তিনটি পাথর-মূর্তি লাভ করেন। গ্রামে নিয়ে এসে সেগুলির পুজো শুরু হয়। শেওড়াফুলির রাজা প্রণবেশ রায় দেবীর কথা শুনে ১২ বিঘা জমি দান করেন। পরবর্তী কালে সেই জমিতে মন্দির নির্মাণ হয়। পুরোহিত ও সেবাইতেরা বংশপরম্পরায় পুজো ও নিত্যসেবা করে আসছেন।
প্রতিষ্ঠার পর কিছুদিন শিলাখণ্ড রূপে দেবীর পুজো হলেও এখন প্রতিমা গড়ে পুজো হয়। প্রতি বছর দেবী মূর্তির বিসর্জন হয়না। তিন-চার বছর ধরে একই মূর্তি পুজো করা হয়। দু’জায়গাতেই একচালার মাটির প্রতিমাকে ষোড়শ উপাচারে পুজো করা হয়। দু’টি গ্রামেই আশ্বিনের তুলনায় মাঘের দুর্গাপুজো বেশি আকর্ষণীয় বলে গ্রামবাসীরা জানান। মাঘের শীতকে উপেক্ষা করেই গ্রামবাসী এই তিনদিন গ্রামবাসী মেতে ওঠেন জগৎমাতার আরাধনায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy