রানিগঞ্জে ২ নম্বর জাতীয় সড়কে। নিজস্ব চিত্র
প্রায় দশ মাস আগে দু’নম্বর জাতীয় সড়কে আন্ডারপাস দু’টি তৈরি হয়ে গিয়েছিল। নিয়মমাফিক নির্মাণকাজ পরীক্ষার কাজও হয়ে যায়। কিন্তু তার পরেও এ পর্যন্ত রানিগঞ্জ মোড় এবং আমরাসোঁতা মোড়ের ওই দু’টি আন্ডারপাস চালু হয়নি। যাত্রীদের ক্ষোভ, এর জেরে ঘুরপথে যাতায়াত করতে হচ্ছে। রয়েছে যানজটের সমস্যাও।
দু’নম্বর ও ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক মিশেছে রানিগঞ্জ মোড়ে। এই মোড়টি কলকাতা, বীরভূম-সহ দক্ষিণবঙ্গের সঙ্গে উত্তরবঙ্গের একাংশের যোগাযোগের মাধ্যম। শুধু তাই নয়, এই মোড় দিয়ে ফি দিন ১৮৩টি মিনিবাস চলে বলে আসানসোল মহকুমা মিনিবাস অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে জানা যায়। গত বছর নভেম্বরেই এই মোড় থেকে এক কিলোমিটার দূরে আমরাসোঁতা মোড়ে দ্বিতীয় আন্ডারপাস তৈরির কাজও শেষ করেন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ।
কিন্তু দু’টি আন্ডারপাসই চালু হয়নি। এর জেরে রানিগঞ্জ শহরে ঢুকতে গেলে মোট চার কিলোমিটার অতিরিক্ত রাস্তা ঘুরতে হচ্ছে বলে যাত্রী ও চালকেরা জানান। এর ফলে গন্তব্য পৌঁছতে যেমন দেরি হচ্ছে, তেমনই গাড়ির পেট্রোলের খরচও বাড়ছে। তা ছাড়া, সাতটি নার্সিংহোম, দু’টি কলেজ, দশটি স্কুলে যাওয়ার অন্যতম রাস্তা রানিগঞ্জ মোড় হয়ে। ফলে গাড়ির চাপও থাকে প্রচুর।
এই পরিস্থিতি দুর্ঘটনার আশঙ্কাও বাড়ছে। চালকেরা জানান, জাতীয় সড়কের যে অংশটি ঘুরপথে যেতে হচ্ছে, সেখানে রাস্তার দু’পাশে থাকা সার্ভিস রোড ব্যবহার করা হয়। এর ফলে অনেক সময়েই একমুখী রাস্তা দ্বিমুখী হয়ে যাচ্ছে। তা ছাড়া, রানিগঞ্জ শহরে ঢুকতে অতিরিক্ত রাস্তা না ঘুরে অনেক ট্রাক, লরি সিহারশোল রাজবাড়ির রাস্তাও ধরছে। ফলে সেই রাস্তাও ভাঙতে শুরু করেছে, জানান মিনিবাস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সুদীপ রায়। বাসিন্দারা জানান, রানিগঞ্জ মোড়ের আন্ডারপাসটি ব্যবহার না হওয়ায় এই মুহূর্তে ওই এলাকার আন্ডারাপাসটি ট্রাফিক পুলিশের বিশ্রামাগারে পরিণত হয়েছে। কোনও গাড়ির চালক নিয়ম ভাঙলে, তাঁকে আন্ডারপাসে নিয়ে গিয়ে কথাবার্তাও বলা হয়।
সুদীপবাবু জানান, সংগঠনের তরফে আন্ডারপাস চালুর জন্য আসানসোলের মহকুমাশাসকের কাছে দরবার করা হয়েছিল। চলতি বছরের ফ্রেব্রুয়ারির গোড়ায় জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ খড়গপুর আইআইটি থেকে বিশেষজ্ঞ দলকে এনে দু’টি আন্ডারপাসের নির্মাণকাজ পরীক্ষা করিয়েছিলেন। ওই বিশেষজ্ঞরা ২১ দিন পরে আন্ডারপাস দু’টি চালু করার পরামর্শ দেন বলে মিনিবাস অ্যাসোসিয়েশনের দাবি। তার পরেও এ যাবৎ তা চালু হয়নি। এক চালকের আশঙ্কা, ‘‘দুর্গাপুজোর আগে আন্ডারপাস দু’টি চালু না হলে রানিগঞ্জ মোড়ে ব্যাপক যানজট ও দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।’’
মহকুমাশাসক (আসানসোল) প্রলয় রায়চৌধুরীর অবশ্য আশ্বাস, ‘‘জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যা মেটানো হবে।’’ জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের আধিকারিক বিনোদ ত্রিপাঠী বলেন, ‘‘আন্ডারপাসটি ফেব্রুয়ারিতে খুলে দেওয়া হতো। কিন্তু ওখানে একটি উচ্চ ক্ষমতার বিদ্যুতের লাইন আছে। সেটি সরানো হচ্ছে। সপ্তাহ তিনেকের মধ্যে আন্ডারপাস চালু হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy