পরিবেশনে ভাস্বতী। মঙ্গলবার বর্ধমান স্টেশনে। নিজস্ব চিত্র
মেয়ের পাঁচ বছরের জন্মদিন। আয়োজনে কোনও ত্রুটি রাখা হয়নি। কেক কেটে, প্রায় আড়াইশো জনকে আমন্ত্রণ জানিয়ে পালন হল জন্মদিন। তবে কোনও বাড়ি ভাড়া করে বা বড় রেস্তোরাঁয় নয়। অনুষ্ঠানস্থলের ঠিকানা বর্ধমান স্টেশনের ৮ নম্বর প্ল্যাটফর্ম। নিমন্ত্রিতের তালিকায় পথশিশু থেকে প্ল্যাটফর্মে থাকা ভবঘুরেরা। জন্মদিনের কেকে কেটে তাদের মুখে তুলে দিল পাঁচ বছরে পা দেওয়া ভাস্বতী। তার পরে মাংস-ভাতের ভোজ।
বর্ধমান স্টেশনের পোস্ট অফিসের সাব-পোস্টমাস্টার সুত্তম রুইদাস মেয়ের জন্মদিনটা পালন করলেন এ ভাবেই। তিনি জানান, ছোটবেলায় দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করে বড় হয়েছেন তিনি। অনেক দিন আধপেটা খেয়েই স্কুল যেতে হয়েছে। কারণ, বাড়ির অবস্থা ভাল ছিল না। তাই কাজে আসা-যাওয়ার পথে স্টেশন চত্বরের ওই শিশু ও ভবঘুরেদের দেখে কষ্ট হয় তাঁর। সে জন্যই মেয়ের জন্মদিন এ ভাবে পালন করার কথা মাথায় এসেছে।
মঙ্গলবার জন্মদিনের ভোজের মেনুতে ছিল ভাত, আলু-বাঁধাকপির তরকারি, মাংস, চাটনি ও বোঁদে। পথশিশুরা, তাদের মা-বাবা থেকে ভবঘুরেরা পাত পেড়ে খেলেন। তার আগে ভাস্বতী নিজে কেক কেটে খাইয়ে দেয় পথশিশুদের। কচি হাতে মাংসের ঝোলের বাটি এগিয়ে দেয় প্রায় দিনই অভুক্ত থাকা মানুষগুলোর দিকে। সুত্তমবাবুর আর্জি, রাস্তা ও স্টেশনই যে সব মানুষের ঠিকানা, তাঁদের জন্য সকলে এগিয়ে আসুন। তাহলে হয়তো বছরের বেশ কয়েকটা দিন তাঁরা পেট ভরা খাবার পাবেন।
এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাতে হাজির ছিলেন পথশিশুদের নিয়ে কাজ করা সংগঠনের দুর্গা ভট্টাচার্য, বর্ধমান উন্নয়ন সংস্থার আধিকারিক জয়ন্ত মিদ্যা। সুত্তমবাবুর সহকর্মী শ্যামাপদ চক্রবর্তী, অরূপ চক্রবর্তীরা অনুষ্ঠানে সামিল হয়ে তাঁকে অভিনন্দন জানান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy