গুসকরা, বর্ধমান, কাটোয়ার পরে এ বার মেমারি।— বর্ধমান গ্রামীণে তৃণমূলের হাতে থাকা পাঁচটি পুরসভার চারটিতেই শাসকদলের গোষ্ঠীকোন্দল প্রকাশ্যে চলে এল। সম্প্রতি মেমারি পুরসভার ন’জন তৃণমূল কাউন্সিলর মুখ্যমন্ত্রী-সহ দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে চিঠি দিয়ে পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে সরব হলেন। অভিযোগ, পুরপ্রধান মেমারিতে ‘একনায়কতন্ত্র’ চালাচ্ছেন। এর জেরে ব্যহত হচ্ছে উন্নয়নের কাজ।
উপপুরপ্রধান সুপ্রিয় সামন্ত, কাউন্সিলর সন্তোষ বোয়াল, মানসুরা বেগম শেখ, বিদ্যুৎ দে-সহ ন’জন কাউন্সিলর মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে চিঠি দিয়েছেন বলে পুরসভা সূত্রের খবর। চিঠির প্রতিলিপি দেওয়া হয়েছে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সুব্রত বক্সী, মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, স্বপন দেবনাথ ও বিধায়ক নার্গিস বেগমকে।
কাউন্সিলরদের অভিযোগ, পুরপ্রধান স্বপন বিষয়ী তাঁদের মর্যাদা দেন না। বোর্ডের সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তের প্রতিলিপিও কাউন্সিলরদের হাতে পৌঁছয় না। বিভিন্ন ওয়ার্ডের উন্নয়নের কাজও থমকে রয়েছে। কাউন্সিলরদের আরও অভিযোগ, ভবন নির্মাণের নকশা, মিউটেশন-সহ বিভিন্ন কাজগুলির জন্য হয়রান হতে হচ্ছে নাগরিকদের। বিভিন্ন প্রকল্পের আয়-ব্যয় নিয়েও পুরপ্রধান কাউন্সিলরদের অন্ধকারে রাখেন বলে অভিযোগ। চিঠির শেষে কাউন্সিলরেরা দাবি করেছেন, পুরপ্রধানের ‘অহমিকা’ ও প্রতিহিংসাপরায়ণ মনোভাবের জন্য পুর-এলাকায় তৃণমূলের ভোট কমছে। মেমারিতে কাউন্সিলরদের অভিযোগ প্রসঙ্গে স্বপনবাবু যদিও দাবি করেছেন, ‘‘এ রকম চিঠির কথা আমার জানা নেই। তাই কোনও প্রতিক্রিয়াও নেই।”
গুসকরা, বর্ধমান ও কাটোয়া পুরসভাতেও তৃণমূল কাউন্সিলরদের মধ্যে গোলমালের ঘটনা আগেই প্রকাশ্যে এসেছে। সম্প্রতি গুসকরা ও কাটোয়া পুরসভায় পুরপ্রধানদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে দলের পর্যবেক্ষক থেকে জেলা সভাপতির কাছে চিঠি পাঠান কাউন্সিলরেরা। বর্ধমান পুরসভাতেও পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে ক্ষোভ রয়েছে কাউন্সিলরদের। জেলা পর্যবেক্ষক অরূপ বিশ্বাস ও জেলাশাসক সৌমিত্র মোহনের উপস্থিতিতে পুরপ্রধান স্বরূপ দত্তের বিরুদ্ধে কাউন্সিলরদের একাংশকে ক্ষোভ উগরে দিতে দেখা গিয়েছে। দলীয় ভাবে জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথকে প্রতি মাসে কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠকের নির্দেশ দেন অরূপবাবু। পাশাপাশি সরকারিস্তরেও জেলাশাসককে পুরসভার সুবিধা-অসুবিধা নিয়মিত ভাবে খতিয়ে দেখার জন্য বলা হয়। পুরসভার কাজকর্মে মুখ্যমন্ত্রী যে অসন্তুষ্ট, তা প্রশাসনিক সভায় তিনি জানিয়ে গিয়েছিলেন।
বিধায়ক নার্গিস বেগম বলেন, “চিঠি হাতে পাওয়ার পরে জবাব দেব।” মেমারির পর্যবেক্ষক উত্তম সেনগুপ্ত বলেন, “কোনও সমস্যা হয়ে থাকলে উপ নির্বাচনের পরে আলোচনার মাধ্যমে মিটিয়ে নেওয়া হবে।” জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথেরও বক্তব্য, “এখন উপনির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত রয়েছি। এ সব বিষয়ে পরে কথা বলব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy