Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
ক্ষোভ বিরোধীদের

ভোট পিছোল এএসপি-তে

সমবায় ভোটেও এক সঙ্গে লড়ার ব্যাপারে তারা একমত হয়েছে, দুই সংগঠন সূত্রেই খবর। এর আগে ডিএসপি-র সমবায় ভোটে ভরাডুবি হয়েছে আইএনটিটিইউসি-র। গত বিধানসভা ভোটে শহরের দু’টি আসনেই হেরেছে তৃণমূল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০১৭ ০৩:৪০
Share: Save:

পর্যাপ্ত পুলিশ নেই, এই কারণ দেখিয়ে অনির্দিষ্ট কাল পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে দুর্গাপুরের অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টের (এএসপি) কর্মী সমবায়ের বোর্ড গঠনের নির্বাচন। যা নিয়ে রাজনৈতিক চাপান-উতোর শুরু হয়ে গিয়েছে শহরে।

এএসপি সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১২ সালের ২২ জুন বর্তমান বোর্ড দায়িত্ব নেয়। পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষের দিকে। তার আগে নতুন বোর্ড গড়ে ফেলার কথা। সম্প্রতি ভোটের প্রাথমিক প্রক্রিয়া শুরু হয়। কিন্তু ২৬ মে সহকারী রিটার্নিং আধিকারিক অশোক মণ্ডল বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানান, নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। কো-অপারেশন ডিরেক্টরেট, বর্ধমান রেঞ্জ ৩-এর সহকারী রেজিস্ট্রারের দফতরের নির্দেশ মেনে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। পর্যাপ্ত পুলিশ মিলবে না, তাই এখন নির্বাচন হবে না। নতুন নির্বাচনের তারিখ পরে জানিয়ে দেওয়া হবে।

সমবায় আইন অনুযায়ী, এক হাজারের উপরে সদস্য থাকলে প্রথমে তাঁরা প্রতিনিধি নির্বাচন করেন। সেই প্রতিনিধিরা এর পরে ‘বোর্ড অফ ডিরেক্টরস’ নির্বাচন করে থাকেন। ২০১২ সালে বোর্ড দায়িত্ব নেওয়ার সময়ে সমবায়ের সদস্য ছিল প্রায় ২৩০০। মোট ৫৮ জন প্রতিনিধির মধ্যে আইএনটিইউসি-র ২৯ জন ও সিটুর ২৮ জন নির্বাচিত হন। একটি আসনে জেতেন আইএনটিটিইউসি-র এক প্রতিনিধি, যিনি বোর্ড গঠনে আইএনটিইউসি-কে সমর্থন করেন। সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রতিনিধিত্বের সুবাদে ৯ জনের বোর্ড গড়ে আইএনটিইউসি। এএসপি-তে লাগাতার কর্মী হ্রাসের পরে এখন সমবায়ের সদস্য দাঁড়িয়েছে ৮৯৬। সমবায় আইন অনুযায়ী, হাজারের নীচে সদস্য হওয়ায় এ বার বোর্ডের ৯ জন ডিরেক্টর নির্বাচনে সরাসরি ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবেন সদস্যেরা।

এএসপি-র কৌশলগত বিলগ্নিকরণের কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সম্প্রতি একযোগে আন্দোলন করছে সিটু এবং আইএনটিইউসি। সমবায় ভোটেও এক সঙ্গে লড়ার ব্যাপারে তারা একমত হয়েছে, দুই সংগঠন সূত্রেই খবর। এর আগে ডিএসপি-র সমবায় ভোটে ভরাডুবি হয়েছে আইএনটিটিইউসি-র। গত বিধানসভা ভোটে শহরের দু’টি আসনেই হেরেছে তৃণমূল।

জুনে দুর্গাপুর পুরসভার বোর্ডের মেয়াদ ফুরোলেও সময়ে নির্বাচন হচ্ছে না বলেই প্রশাসন সূত্রের খবর। এর মধ্যে এএসপি-র সমবায় ভোটও অনির্দিষ্ট কাল পিছিয়ে যাওয়ার পিছনে শাসকদলের হাত দেখছে বিরোধীরা। ২২ জুনের মধ্যে নতুন বোর্ড দায়িত্ব না নিলে প্রশাসক বসার কথা। সিটুর এএসপি-র সম্পাদক বিজয় সাহা দাবি করেন, ‘‘এএসপি-তে শাসকদলের শ্রমিক সংগঠনের ভরাডুবি নিশ্চিত। পুরভোটের আগে মুখরক্ষা করতেই ভোট পিছিয়ে দেওয়া হল।’’ আইএনটিইউসি সভাপতি বিকাশ ঘটকেরও বক্তব্য, ‘‘এই সমবায়ের ভোটে এত দিন তো তেমন কোনও পুলিশি ব্যবস্থার দরকার হয়নি। আসলে শাসকদল ভোট এড়াতে চাইছে, তাই এ সব যুক্তি দেওয়া হচ্ছে।’’

যদিও বিরোধীদের অভিযোগ উড়িয়ে আইএনটিটিইউসি নেতা অশোক কুণ্ডুর পাল্টা অভিযোগ, ‘‘সিটু এবং আইএনটিইউসি গত বোর্ডে কিছু দুর্নীতি করেছে। তারা যৌথ ভাবে যারা ভোট করাবে তাদের সঙ্গে মিলে প্রশাসক বসানোর ছক কষছে। আমরা তার বিরোধিতা করছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Election Alloy Steels Plant
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE