Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

র‌্যাম্পে হবু ডাক্তারেরা

মেডিক্যাল কলেজের বিভিন্ন বিভাগের পড়ুয়ারা ছাড়াও ইন্টার্নরা এই ফ্যাশন শোয়ে নেমেছিলেন। মেডিক্যাল কলেজের অডিটোরিয়ামে সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত ১২ রকমের পোশাকে র‌্যাম্পে হাঁটেন প়ড়ুয়ারা। শাড়ি, কুর্তা, গাউন, পাঞ্জাবি, জামা-সহ নানা খাদি বস্ত্রও প্রদর্শিত হয়।

কেতাদুরস্ত: মসলিনের পোশাকে হবু ডাক্তারেরা। —নিজস্ব চিত্র।

কেতাদুরস্ত: মসলিনের পোশাকে হবু ডাক্তারেরা। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৭:১০
Share: Save:

চেনা সাদা জামা, গলায় স্টেথোস্কোপ ছেড়ে র‌্যাম্পে হাঁটলেন হবু ডাক্তারেরা। ঝলমলে আলোয় দাঁড়িয়ে বাংলার মসলিনে তৈরি কেতাদুরস্ত পোশাকে সাজারও ডাক দিলেন।

কয়েক বছর ধরেই মসলিনকে ফের জনপ্রিয় করার উদ্যোগ নিয়েছে ‘পশ্চিমবঙ্গ খাদি এবং ভিলেজ ইন্ডাস্ট্রিজ বোর্ড’। নতুন প্রজন্মকে খাদির পোশাকে আগ্রহী করারও উদ্যোগ করেছে। সেই লক্ষ্যেই হবু ডাক্তারদের বেছে নিয়ে ‘ফ্যাশন-শো’-এর আয়োজন করেছে ওই সংস্থা। যদিও বৃহস্পতিবার রাতে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের ওই অনুষ্ঠান নিয়ে প্রবীণ চিকিৎসকেরা অনেকেই ক্ষুব্ধ। তাঁরা মনে করছেন, মেডিক্যাল কলেজের ভিতর এ ধরণের অনুষ্ঠান না হলেই ভাল হতো।

মেডিক্যাল কলেজের বিভিন্ন বিভাগের পড়ুয়ারা ছাড়াও ইন্টার্নরা এই ফ্যাশন শোয়ে নেমেছিলেন। মেডিক্যাল কলেজের অডিটোরিয়ামে সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত ১২ রকমের পোশাকে র‌্যাম্পে হাঁটেন প়ড়ুয়ারা। শাড়ি, কুর্তা, গাউন, পাঞ্জাবি, জামা-সহ নানা খাদি বস্ত্রও প্রদর্শিত হয়। আয়োজকেরা জানান, বর্ধমান মেডিক্যাল কলজের ৫৩ জন পড়ুয়াকে ৮টি দলে ভাগ করা হয়। ফ্যাশন ডিজাইনার নিলয় সেনগুপ্ত তাঁদের ‘গ্রুমিং’ করেন।

কলেজের ইন্টার্ন, বর্ধমানের মেয়ে নিষাদ বানু ও চন্দননগরের বাসিন্দা শালিনী মাথুর বলেন, “মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের কাজ সেরে এক-দেড় ঘন্টা সময় থাকত। অনুষ্ঠানের ৫-৬ দিন আগে থেকে ওই ফাঁকা সময়েই প্র্যাকটিস করেছি। এ রকম অভিজ্ঞতা আগে ছিল না।” খাদি পরিষদের পূর্ব বর্ধমানের জেলা আধিকারিক অনুপ দে বলেন, “নতুন প্রজন্মের মধ্যে মসলিনের জনপ্রিয়তা বাড়ানোর জন্য এই প্লাটফর্ম বেছে নিয়েছি। এঁরাই সব ধরনের মানুষের কাছে মসলিনকে পৌঁছে দেবে।

কলেজের ছাত্র সংসদের নেতা আবু মহম্মদ মুস্তাক বলেন, “আমাদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে খাদি দফতর ওই অনুষ্ঠান করার আবেদন জানায়। বাংলার মসলিনকে বাঁচাতে ‘ফ্যাশন শো’ করার সিদ্ধান্তে রাজি হয়ে যাই।”

তবে এই অনু্ষ্ঠান নিয়ে বেশ কিছু প্রবীণ চিকিৎসক আপত্তি জানিয়েছেন। বিতর্কের কথা ভেবে সরকারি অনুষ্ঠানে হাজিরও হননি অনেকে। শহরের প্রবীণ চিকিৎসক তথা পুরপ্রধান স্বরূপ দত্ত বলেন, “আমাদের চারপুরুষ চিকিৎসক। মেডিক্যাল কলেজে এ রকম অনুষ্ঠান হলে তো বুকে ব্যাথা করবেই।” তবে পেশায় চিকিৎসক-অধ্যাপক, বর্ধমান-দুর্গাপুরের সাংসদ মমতাজ সঙ্ঘমিতা মনে করেন, “অনেক প্রবীণের কষ্ট হলেও রুচিশীল ফ্যাশনকে স্বাগত না জানানোর তো কিছু নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Doctors Ramp Model
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE