Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

চৈত্রেই কমছে জল, পারাপারে সমস্যা নদীতে

চৈত্রের শুরুতেই কমতে শুরু করেছে ভাগীরথীর জলস্তর। সমস্যা দেখা দিয়েছে খেয়াঘাটে নৌকা চলাচল ও পণ্য পরিবহণে। কালনা ও কাটোয়ার মাঝিদের দাবি, জলের তলায় চরে নৌকা বা বার্জ ঠেকে যাচ্ছে। যে কোনও দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে বলেও তাঁদের আশঙ্কা।

এভাবেই পারাপার। নিজস্ব চিত্র

এভাবেই পারাপার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা ও কাটোয়া শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০১৭ ০০:৩০
Share: Save:

চৈত্রের শুরুতেই কমতে শুরু করেছে ভাগীরথীর জলস্তর। সমস্যা দেখা দিয়েছে খেয়াঘাটে নৌকা চলাচল ও পণ্য পরিবহণে। কালনা ও কাটোয়ার মাঝিদের দাবি, জলের তলায় চরে নৌকা বা বার্জ ঠেকে যাচ্ছে। যে কোনও দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে বলেও তাঁদের আশঙ্কা।

কালনার নৃসিংহপুর ফেরিঘাটের একদিকে বর্ধমান, অন্য দিকে নদিয়া। ভোর থেকে রাত পর্যন্ত হাট, বাজার, হাসপাতাল, কলেজের প্রয়োজনে হাজার হাজার মানুষ পারাপার করেন। লরি, ট্রাক, ম্যাটাডর, মোটরভ্যান ও নানা পণ্যবাহী গাড়িও বার্জের মাধ্যমে পারাপার করে। ফেরিঘাটের ইজারাদার ও মাঝিদের দাবি, প্রায় ৪০ ফুট পর্যন্ত কোমর সমান জল রয়েছে। হেঁটেই অনেকখানি চলে যাচ্ছেন অনেকে।

মাঝিদের দাবি, মিনিট দশেক পর পর দু’পার থেকে একটি করে যাত্রীবাহী নৌকা ও বার্জ ছাড়ে। জল কমে যাওয়ায় যাত্রী তোলা অর্ধেক করে দিয়েছে তাদের অনেকেই। কারণ ওজন বেশি হলে জলার নীচে চরে নৌকা ঠেকে গিয়ে বিপদের সম্ভাবনা থাকছে। দেখা গিয়েছে, আগে যেখানে ৪০ জন যাত্রী নেওয়া হতো, এখন সেখানে তোলা হচ্ছে ২০-২৫ জন। মাঝি শঙ্কর হালদারের দাবি, ‘‘কম যাত্রী নেওয়ায় যাত্রীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হচ্ছে। কিন্তু সাবধানের মার নেই।’’ রতন মাইতি, রাকেশ বারিকরাও জানান, স্বাভাবিক ভাবে নৌকা চলাচলের জন্য ৮-১০ ফুট জলের প্রয়োজন হয়। সেখানে কোনও কোনও জায়গায় জল কমে দাঁড়িয়েছে দুই থেকে আড়াই ফুট। বন্ধ হয়ে গিয়েছে কয়লাবোঝাই বার্জ চলাচলও। কালনা খেয়াঘাটের হাল তুলনায় ভাল। তবে তাও কতদিন থাকবে আশঙ্কা ইজারাদারদের। তাঁদেরই এক জন তপন ঘোষ বলেন, ‘‘একটা বার্জ যেখানে তিনটি পণ্যবাহী লরি নিয়ে যেত, সেখানে একটা নিয়ে যাচ্ছে। লম্বা লাইন পড়ে যাচ্ছে ঘাটে।’’ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে কিছু জায়গায় মেশিন দিয়ে বালি তুলে ফেলা হচ্ছে বলেও তাঁদের দাবি।

কাটোয়ার শাঁখাই ফেরিঘাটেও প্রায় সাত ফুট জল নেমেছে। ফেরিঘাট থেকে পাঁচ ফুট দূরে নৌকা বেঁধেই চলছে পারাপার। জলস্তর কমায় মোটরবাইক নৌকায় তুলতে বা পড়ে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটছে বলেো মাঝিদের দাবি। সাহেব রায়, কেশব বৈরাগ্যদের কথায়, ‘‘ফি বছরই এই সময়ে দিন কুড়ি এই সমস্যা চলে।’’ জল যত নামছে ততই বালির বস্তা বা মাটি ফেলে তা উঁচু করে চলাচলের জন্য প্রস্তুত করছেন তাঁরা। ফেরিঘাটের ইজারাদার অশোক সরকারের দাবি, স্রোতের গতি অনুযায়ী বালি ফেলার জন্য প্রতি দিন ছয় শ্রমিক নিয়োগ করতে হচ্ছে। যাত্রীবাহী নৌকার বোল্ডারে ধাকা মারা এড়াতে টায়ারও বাঁধা হয়েছে।

কালনার পুরপ্রধান দেবপ্রসাদ বাগ বলেন, ‘‘প্রশাসনিক হস্তক্ষেপে বালি চুরি বন্ধ করা গিয়েছে। নদী থেকেও বালি উঠছে না। সেই বালি জমেই চর গড়িয়ে উঠছে। পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে ভাবনা-চিন্তা চলছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

River Cross
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE