তাঁকে বাড়িতে বেঁধে রেখে বৃদ্ধ স্বামীকে তুলে নিয়ে গিয়ে খুন করেছে আততায়ীরা— পুলিশের কাছে এমনই অভিযোগ করেছিলেন বছর বিয়াল্লিশের মরফুজা বিবি। যদিও ওই খুনের তদন্তে নেমে নিহতের তৃতীয় স্ত্রী মরফুজাকেও সন্দেহের তালিকা থেকে বাদ রাখেনি পুলিশ।
শুক্রবার ভোরে গলসির খানো গ্রামে খেত থেকে সত্তর বছরের শেখ ইব্রাহিমের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, সম্পত্তির লোভেই ওই বৃদ্ধকে খুন করা হয়েছে।
তবে জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “জিজ্ঞাসাবাদের সময় ওই মহিলার (মরফুজার) কথায় অনেক অসঙ্গতি ছিল। ফের ওঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। আশা করা যাচ্ছে, দু’-এক দিনের মধ্যেই খুনের কিনারা করতে পারবে পুলিশ।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পেশায় গ্রামীণ চিকিৎসক ইব্রাহিমের প্রথম ও দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী অনেক দিন আগেই মারা গিয়েছেন। গত দশ বছর ধরে তিনি মরফুজার সঙ্গে খানো পুলের ধারে থাকতেন। তাঁর আদি বাড়ি খানো গ্রাম থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে বড় মুড়িয়া গ্রামে। সেখানেই তাঁর প্রথম পক্ষের তিন ছেলে থাকেন। বড় ছেলে হিরাবাবু শেখও এ দিন বিকেলে গলসি থানায় আসেন। সেখানে বাবাকে খুনের অভিযোগে অপরিচিত দুষ্কৃতীদের নামে এফআইআর দায়ের করেছেন।
পুলিশের দাবি, এ দিন সকালে মরফুজা বিবি অভিযোগ করেছেন, বাড়ি লাগোয়া জায়গা নিয়ে এক পড়শির সঙ্গে কয়েকদিন আগে তাঁদের অশান্তি হয়। তার জেরেই এই খুন।
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে দু’জন দুষ্কৃতী তাঁদের বাড়িতে ঢোকে। মরফুজা বিবির দাবি, “আমরা তখন ঘুমোচ্ছিলাম। রাত ঠিক ক’টা বেজেছে জানি না। হঠাৎ করেই দু’জন আমাদের ঘরে ঢুকে পড়ে। ঢুকেই ওরা আমার স্বামীকে তুলে বেধড়ক মারধর করতে শুরু করে। আমি আটকানোর চেষ্টা করি। তবে ওরা বারান্দার থামে কাপড় দিয়ে আমার হাত এবং মুখ বেঁধে দেয়। তারপর টানতে টানতে স্বামীকে বাড়ির বাইরে নিয়ে চলে যায়।”
জেলা পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, মহিলা পুলিশকে জানিয়েছেন, রাতে অনেক চেষ্টা করেও স্বামীর কোনও রকম খোঁজ পাননি তিনি।
‘আততায়ীদের’ নামও এ দিন পুলিশকে জানিয়েছেন মরফুজা। যদিও তদন্তে নেমে পুলিশ জেনেছে, ওই দু’জনের এক জন গত তিন দিন ধরে জলপাইগুড়িতে রয়েছেন। আর এক জন বৃহস্পতিবার কলকাতার একটি হোটেলে রাত কাটিয়েছেন। এর পরেই পুলিশের সন্দেহ গিয়ে পড়ে মারফুজার উপরে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy